যা খেলে এবং করলে ওয়েট কমবে

ওয়েট বা ওজন হচ্ছে আমাদের দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের মতো, একবার বাড়লে আর কমার লক্ষণ দেখা যায় না। তাই ‘ওয়েট’ শব্দটা আমাদের অনেকের জন্য ভীতিজাগানিয়া। কী করে ওয়েট কমানো যায়, তা ভাবতে গিয়ে অনেকেই চিন্তায় চিন্তায় আরও খানিকটা ওয়েট বাড়িয়ে চলেছেন। পাঠক, আপনিও যদি এই দলে পড়েন, তাহলে এই লেখাটা আপনার জন্য। রস+আলোর পুষ্টিবিদ আসফিদুল হক গবেষণা করে বের করেছেন ওয়েট কমানোর কিছু অব্যর্থ উপায়।

ঘুষ

ঘুষ একটি চমৎকার সুষম খাদ্য, যা আপনার ওয়েট কমাতে দারুণভাবে সাহায্য করে। আপনাকে শুধু নিয়ম মেনে প্রতিদিন সকাল-দুপুর-বিকেল-সন্ধ্যা-রাতে পাঁচবেলা ঘুষ খেতে হবে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ঘুষখোর কল্যাণ সমিতির সভাপতি ঘুষাল চৌধুরী সামান্য ঘুষের বিনিময়ে রস+আলোকে বলেন, ‘ঘুষ এমন একটি চমৎকার খাবার, যা খাওয়ার পাশাপাশি টাকাপয়সাও পাওয়া যায়। তবু সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন, যাঁরা ঘুষ খেতে অবহেলা করেন। কিন্তু ঘুষ খেলে দিনে দিনে ব্যক্তির ওয়েট কমবেই। তাই এখন থেকেই সুস্থ মানসিকতা নিয়ে ঘুষ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।’

তেল

ভালোমন্দ খেয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমালেই কেবল চলবে না। তেল খান নিয়মিত। বলতে পারেন, তেল তো নিয়মিতই খাচ্ছি। তা খাচ্ছেন বটে। সয়াবিন তেল, সরিষার তেল, জলপাই তেল, রেস্তোরাঁর বাসি তেল...কত তেল! তাই কবি বলেছেন, ‘এই তেল তেল নয়, আরও তেল আছে।’ আমরা বলছি, অধীনস্থের পাত্র থেকে চুইয়ে চুইয়ে পড়া তেল। আপনি যদি হয়ে থাকেন বস-গোত্রীয় কেউ, তাহলে এই পরামর্শ আপনার জন্য একান্ত পালনীয়। তেলবাজ অধীনস্থদের ভালোবাসুন, কাছে টানুন। ওরাই তো আপনাকে তেল দেয় অকাতরে, কারণে-অকারণে। আর ওই তেল খেলেই না আপনার ওয়েট কমবে! এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বস বলেন, ‘সমাজে আমার ওয়েট অত্যন্ত কম। কেন জানেন? কারণ, আমি কিছু অধীনস্থের দেওয়া তেল খাই সকাল-বিকেল। ওরাও অবশ্য তেলের বিনিময়ে খাদ্য পায়। এতে করে ওদের ওজন বাড়ছে আর আমার কমছে ওয়েট।’

ঝাড়ি

ঝাড়ি এমন একটি খাদ্য, যা খেয়ে অনেকে হজম করতে পারে না। কিন্তু ব্যাপক গবেষণায় জানা গেছে, কাজে ফাঁকি দিয়ে বসের নিয়মিত ঝাড়ি খেয়ে ঠিকভাবে হজম করতে পারলে নাকি উল্লেখযোগ্য হারে ওয়েট কমে। তাই এখন থেকেই কাজে অবহেলা করতে শুরু করুন, যাতে বস থেকে শুরু করে সবাই আপনাকে ঝাড়ির ওপরে রাখেন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে একবার এবং ঘুম থেকে উঠে আরেকবার ঝাড়ি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। এ ব্যাপারে বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ সমুদয় খান বলেন, ‘নিয়মিত বকা খাওয়ার কাজ করলে আমাদের ওয়েট ঈর্ষণীয়ভাবে কমে। তবে এ ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে, মানুষ যখন ঝাড়ি দেবে, তখন তার মাত্রা যেন ১৫-২০ ডেসিবলের মধ্যে থাকে।’

পরচর্চা

পরচর্চা যাঁরা করেন, তারাই জানেন এর মজাটা কোথায়। অন্যের নামে উল্টাসিধা বলা অথবা একজনের কথা অন্যজনের কাছে বলে বেড়ানো একটি সৃষ্টিশীল অভ্যাস। তাই প্রতিদিন খানিকটা সময় পরচর্চার জন্য বরাদ্দ রাখুন। মনে রাখবেন, নিয়মিত পরচর্চা কমাবে আপনার ওয়েট।

দুর্নীতি

আপনি যে পেশাতেই থাকুন না কেন, দুর্নীতির হাতে হাত রেখে চলুন। চর্চা করুন দুর্নীতির। দুর্নীতিকে করে নিন আপনার একমাত্র নীতি, একমাত্র প্রাণের দোসর। তবু যদি নীতিবোধ আপনার দুর্নীতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে ‘দুর্নীতি বপন কমিশন’ থেকে এক সপ্তাহের একটি ক্র্যাশ কোর্স করে নিন। এই কোর্সে আমাদের দেশের কিংবদন্তি দুর্নীতিবাজেরা ক্লাস নেন। তাঁদের সাহায্যে দুর্নীতিতে এগিয়ে যাবেন আপনি, পাশাপাশি আমাদের দেশ। আর ঠিকমতো দুর্নীতির চর্চা করতে পারলেই ওয়েট কমবে নিশ্চিত।