'গরুত্ব কিংবা ছাগলত্ব যার যার পারসোনাল ইস্যু' - জাবর হাম্বা

>

গরু-ছাগলের এমন ‘বাম্পার ফলন’ নিয়ে কথা বলার জন্য বিশিষ্ট গো-চিন্তক, গো-বেষক জনাব জাবর হাম্বার মুখোমুখি হয়েছিল রস+আলো। সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ লিখেছেন শরীফ মজুমদার

খবর: দেশে গরু-ছাগলের সংখ্যা বাড়ছে। (সূত্র: প্রথম আলো, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮)

রস+আলো: শুনেছেন নিশ্চয়ই, দেশে গরু-ছাগলের সংখ্যা বাড়ছে। তো এ নিয়ে আপনি কী ভাবছেন?

জাবর হাম্বা: এ আর নতুন কী! ফেসবুক খুললেই তো এটা টের পাওয়া যায়।

র.আ.: মানে ফেসবুকে গেলে এই খবরটা অহরহ পাওয়া যাচ্ছে, তাই তো?

জা.হা.: হে হে হে। হ্যাঁ, তা তো বটেই। আমার সামনেও তো একজন বসে আছেন।

র.আ.: (যাক, পাশে আরেকটা গরু বসে জাবর কাটছে; মানে আমাকে গরু বলেনি) তো এই খবরে আপনারা নিশ্চয়ই অনেক খুশি?

জা.হা.: এটা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত খুশির খবর। আমি খুবই আনন্দিত যে আমাদের কমিউনিটি নিজেদের বংশবৃদ্ধির গুরুত্বটা বুঝতে পেরেছে।

র.আ.: আপনাদের কমিউনিটি বলতে কি ছাগল সম্প্রদায়কেও বোঝাচ্ছেন?

জা.হা.: হ্যাঁ, ছাগল-মহিষ এমনকি লোমওয়ালা ভেড়াও। আমাদের মধ্যে কোনো সাম্প্রদায়িকতা পাবেন না। আমরা যারা ‘গ্রাসমেট’ আছি, তারা সবাই-ই ভাই ভাই। কোনো ক্লাস কনফ্লিক্ট নেই, ভেদাভেদ নেই। কে হাম্বা ডাকল আর কে ম্যাঅ্যাঅ্যা ডাকল, ডাজন্ট ম্যাটার অ্যাট অল।

র.আ.: আপনি বলতে চাচ্ছেন যে আপনাদের মধ্যে আলাদা কোনো কাউইজম বা গোটিজম নেই?

জা.হা.: ঠিক এমনটা নয়। আমাদের যার যার স্বকীয়তা তো অবশ্যই থাকবে। সে হিসেবে গরুত্ব কিংবা ছাগলত্ব যার যার পারসোনাল ইস্যু। কিন্তু তার জন্য আরেকজনকে, যে কিনা আমারই মতো ঘাস খায়, ভুসি খায়, জাবর কাটে তাকে তো আর নিজের থেকে আলাদা ভাবতে পারি না। কবি বলেছেন, ‘গরু কি মহিষ, ছাগল বা ভেড়া,/ সদা ঘাস খেয়ে হও যে চাঙা,/ হাম্বা আর ম্যাঅ্যাঅ্যা বাহিরে কেবল/ ভেতরে সবারই সমান রাঙা...’

র.আ.: কবি এমনটা সত্যিই বলেছেন?

জা.হা.: হ্যাঁ, এ রকমই কিছু একটা আরকি।

র.আ.: যা হোক, এই যে আপনাদের একটা বিশাল গোষ্ঠী তৈরি হলো, এদের নিয়ে কি কোনো স্বাধীন গো-রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা আপনাদের আছে?

জা.হা.: ভবিষ্যতে কী হয় বলা যায় না। তবে এমন আত্মঘাতী পরিকল্পনা আপাতত আমাদের নেই। বেশ তো আছি আমরা। খাচ্ছিদাচ্ছি, জাবর কাটছি, লাইফে এর বাইরে আর কীই-বা চাওয়ার আছে! আর এই যে রাষ্ট্রের কথা বললেন; সেটা মানেই তো সরকার, বিরোধী দল, নির্বাচন, হরতাল-অবরোধ, মিথ্যাচার, দোষারোপ...ঝামেলাপূর্ণ সব ব্যাপারস্যাপার।

র.আ.: মূল প্রসঙ্গে আসি। ফ্যামিলি প্ল্যানিং নিয়ে কি কিছু ভাবছেন আপনারা?

জা.হা.: আপাতত না। আমাদের উপযোগিতার ভিত্তিতে এটা ভাবা যাবে। তা ছাড়া এ ক্ষেত্রে আমরা কখনোই অনিয়ন্ত্রিত ছিলাম না।

র.আ.: তা অবশ্য ঠিক। শেষ প্রশ্ন, আপনাদের বুদ্ধিবৃত্তি এবং জীবনযাপনকে মানবসমাজ অনেক অবজ্ঞার চোখে দেখে থাকে। তো এটাকে কীভাবে নেন আপনারা?

জা.হা.: এ প্রসঙ্গে আমি আগেও বহু সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত বলেছি। এখন আর কিছু বলব না। এটা জাস্ট অরণ্যে হাম্বা ডাকা। শুধু এটুকু বলতে চাই যে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি সম্পর্কে আপনাদের কোনো ধারণাই নেই। নো মিনিমাম আইডিয়া।

র.আ.: ধন্যবাদ আপনাকে।

জা.হা.: আপনাকেও। হাম্বা।