আসামিদের সৃজনশীলতা যেভাবে কাজে লাগানো যায়

>

নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের আসামিরা সৃজনশীল সব উপায়ে পুলিশের হাত থেকে পগারপার হচ্ছেন। তারিফ তাঁদের করতেই হয়! তবে শুধু তারিফ করে থেমে থাকলেই চলবে না, দেশ ও জাতির স্বার্থে এই আসামিদের সৃজনশীলতাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটাও ভাবতে হবে। ভাবলেন শরীফ মজুমদার

খবর ১ : নেত্রকোনা শহরের মেহেদী হাসান ওরফে আলম চোর (৩২) এবার দুই কারারক্ষীকে ফাঁকি দিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, পালিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর হাতে হাতকড়া ছিল।

(সূত্র: প্রথম আলো, ৯ মে ২০১৮)

খবর ২ : নেত্রকোনার পূর্বধলায় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া রুবেল মিয়া (২৫) পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে গেছেন। শৌচাগারের বায়ু চলাচলের ফোকর দিয়ে তিনি কৌশলে পালিয়ে যান।

(সূত্র: প্রথম আলো, ১১ অক্টোবর ২০১৭)

খবর ৩ : নেত্রকোনায় চুরির মামলায় রিমান্ডের আসামি সাইনুল মিয়া (২২) পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে গেছেন। সাইনুল মিয়ার কাছেই ছিলেন পুলিশ সদস্য। পুলিশের ভাষ্য, তাঁর হাত চিকন থাকায় হাতকড়া ছুটে যায়।

(সূত্র: প্রথম আলো, ৫ মে ২০১৭)

খবর ৪ : ময়মনসিংহের নান্দাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলার আসামি শাহাবুদ্দিনকে জাপটে ধরে পুলিশ। একপর্যায়ে শাহাবুদ্দিন দুই কনস্টেবলের হাত কামড়ে ছুটে পালিয়ে যান।

(সূত্র: প্রথম আলো, ৫ জানুয়ারি ২০১৭)

স্বাধীনচেতা মনোভাব

নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের আসামিরা খুবই স্বাধীনচেতা। তবে চাইলে তাঁদের ‘স্বাধীন চ্যাতা’ও বলা যায়। আর এই মনোভাবের কারণেই তো মুক্তির জন্য তাঁরা নিত্যনতুন কত সংগ্রামমুখর পথ আবিষ্কার করছেন। দেশের মানুষের মধ্যে স্বাধীনচেতা মনোভাব জাগিয়ে তোলার জন্য এই আসামিদের পলায়নগাথা সবিস্তারে তুলে ধরা যেতে পারে। তবে মানুষ যাতে ‘স্বাধীন চ্যাতা’ না হয়, সেটাও খেয়াল রাখা জরুরি।

হাইড অ্যান্ড সিক খেলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর

শৈশব-কৈশোরের তুমুল জনপ্রিয় খেলা ‘হাইড অ্যান্ড সিক’ বা লুকোচুরি আজ বিলুপ্তপ্রায়। নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের আসামিরা যে বুড়ো বয়সেও হাইড অ্যান্ড সিক খেলায় তুমুল পারদর্শী, সে তো সর্বজনবিদিত। কাজেই তাঁদের এই খেলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করে আবারও লুকোচুরি খেলার হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তা ছাড়া ভবিষ্যতে কোনো দিন যদি অলিম্পিকে ‘হাইড অ্যান্ড সিক’ খেলার ইভেন্ট চালু হয় এবং এই আসামিদের সেখানে পাঠানো হয়, তবে আমাদের গোল্ড মেডেল নিশ্চিত। এ ক্ষেত্রে অবশ্য ‘তদন্ত কমিশন’কে পাঠানো হলেও গোল্ড আসবেই।

সৃজনশীলতার বিকাশ

নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের আসামিরা বিশ্বের আসামি-সমাজের অহংকার। তাঁদের সৃজনশীলতা অনবদ্য। আর তাই তো জাতি কদিন পরপরই তাঁদের সুপ্ত প্রতিভার খবর জানতে পারে। পালানোর জন্য নিত্যনতুন উপায় উদ্ভাবন করে তাঁরা তাক লাগিয়ে দেন সবাইকে। কাজেই ‘নেত্রকোনা/ময়মনসিংহের আসামিদের মধ্যে কী এমন আছে, যা অন্যদের নেই’-টাইপ গবেষণা করে দেশের মানুষের মধ্যে উদ্ভাবনী চিন্তার বিকাশ ঘটানো যায়। এ ছাড়া ‘চিকন বুদ্ধির বিকাশে নেত্রকোনা/ময়মনসিংহের আসামিদের অবদান’ শীর্ষক সভা-সেমিনারেরও আয়োজন করা যেতে পারে।

চিকন স্বাস্থ্যের আশীর্বাদ

চিকন স্বাস্থ্য নিয়ে যাঁরা চরম হতাশায় ভোগেন, তাঁদের জন্য নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের আসামিরা হতে পারেন সাক্ষাৎ আইকন। এই আসামিদের দিয়ে ‘চিকন স্বাস্থ্য অভিশাপ নয়, আশীর্বাদ’ বা ‘আপনার চিকন স্বাস্থ্য দিয়ে বিশ্বজয় করুন’ টাইপের মোটিভেশনাল স্পিচও দেওয়ানো যেতে পারে।