ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভ্রমণ সতর্কতা

১. ভ্রমণের শুরুতেই বিরক্তি এড়াতে বাসা থেকে ঘণ্টাখানেক আগে বের হওয়ার ভুল পরিকল্পনা করবেন না। টিকিটে নির্ধারিত সময়ের বেশ কয়েক ঘণ্টা পর নিশ্চিন্তে বাসা থেকে বের হতে পারেন, ঢাকার যানজট নিয়ে চিন্তা করে মাথাব্যথা-টাইপের অসুস্থতায় ভুগবেন না। আপনার বাসটি নির্ধারিত সময়ে এসে পৌঁছায়নি, দাউদকান্দি ব্রিজে আটকে ছিল।

২. বাস টার্মিনালের খোলা খাবার এড়িয়ে চলুন। ছয়-সাত ঘণ্টা টার্মিনালের মেঝেতে বা পাশের রাস্তায় বসে কাটানোর মতো পুরোনো পত্রিকা সঙ্গে নিতে একদমই ভুলবেন না।

৩. যাত্রা শুরু হলেই চেক-ইন দিয়ে ফেসবুকের বন্ধুদের জানিয়ে দিন। আপনার ভাগ্য ভালো হলে কুমিল্লায় বেশ কয়েকজন ফেসবুক বন্ধু পেয়ে যেতে পারেন। যানজটের সময় আড্ডা দিয়ে সময় কাটাতে পারবেন। ভাগ্য আরও ভালো করতে চাইলে ফেসবুক বন্ধুতালিকা ছোট রাখুন। এই লম্বা ভ্রমণে অপরিচিতদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়িয়ে যায় ফেসবুক অব্দি!

৪. একাধিক পাওয়ার ব্যাংক রাখা বাঞ্ছনীয়। একটি পাওয়ার ব্যাংক কখনোই আপনার ভ্রমণের পুরোটা সময় সাপোর্ট দেবে না। চাইলে ল্যাপটপ থেকেও মোবাইল ফোন চার্জ করে নিতে পারেন বিপাকে পড়লে।

৫. যাত্রাপথে অপরিচিতদের দেওয়া খাবার খাবেন নিশ্চিন্তে। এই লম্বা যানজটে কোনো ছিনতাইকারী নেই। মনে রাখবেন, ছিনতাইকারীরা আট দিনে মাত্র একটি ছিনতাই করার জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আসবে না।

৬. যাত্রাপথে আপনার বাসচালক, সহকারীদের ঘুমে সহায়তা করুন। অযথা মোবাইল ফোনের রিংটোন দিয়ে অথবা বাস থেকে বারবার ওঠানামা করে তাঁদের বিরক্ত করবেন না। যানজট কমলে তাঁরাই কিন্তু আপনাকে গন্তব্যে পৌঁছে দেবেন।

৭. ভ্রমণের শুরুতে ২-৪ লিটার পানি কিনে নিজেদের ভ্রমণের আনন্দ হ্রাস করবেন না। এই যানজটে পানি বিক্রি করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে যাচ্ছেন। তাদের ব্যবসা করতে সহযোগিতা করুন, ঢাকার পানির অপচয় রোধে একটু এগিয়ে আসুন। আপনার রেখে যাওয়া ২ লিটার পানি ঢাকাবাসীর জন্য আশীর্বাদ।

৮. সঙ্গে রাখবেন সাবান, টুথপেস্ট, টুথব্রাশ। গোসলের বাতিক থাকলে মেঘনা নদী থেকে গোসল সেরে নিতে পারেন। সাঁতার না জানলে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট নেবেন।

৯. বাইরের খাবার এড়িয়ে চলতে আলাদা ব্যাগে হাঁড়ি, পাতিল, চাল, ডাল সঙ্গে নিন। চলার পথে অন্য গ্রুপের সঙ্গে ভাগ করে রাস্তার পাশে ইট দিয়ে চুলা বানিয়ে সেরে নিতে পারেন চড়ুইভাতি-টাইপের আয়োজন। সেলফি তুললেও ফেসবুকে পোস্ট করার আগে চার্জের ব্যাপারে সচেতন হোন।

১০. ফিরতি টিকিট অগ্রিম কেটে অতি বুদ্ধিমানের কাজ করবেন না। দেখা যাবে, আপনার যেদিন ফেরার কথা, সেদিন দুপুর ১২টায় আপনি কেবল কুমিল্লায় যাত্রাবিরতি নিয়েছেন।