ঈদ শপিংয়ের 'আট'কাহন

ঈদের শপিংয়ে যাচ্ছেন? একটু বসুন, এই লেখাটি না পড়লে বিপদ আসন্ন! আপনার ঈদ শপিং সহজ ও আনন্দময় করতে সতর্কতামূলক জ্ঞান দিচ্ছেন শরীফ মজুমদার
আঁকা: সালমান সাকিব শাহরিয়ার
আঁকা: সালমান সাকিব শাহরিয়ার

১. ঈদের শপিংয়ের জন্য বস্তাভর্তি টাকা থাকলেই চলবে না, সঙ্গে থাকতে হবে বুকভর্তি সাহস আর যথেষ্ট মোটিভেশন। তাই শপিংয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে দেখে নিতে পারেন বেশ কিছু মোটিভেশনাল মুভি। এতেও পর্যাপ্ত মোটিভেশন না পেলে শরণাপন্ন হোন হাতের কাছেই থাকা কোনো মোটিভেশনাল স্পিকারের। তাঁর জ্বালাময়ী স্পিচ আপনাকে শপিংয়ের জন্য উদ্দীপ্ত করবেই।

২. দরদাম নিয়ে বিক্রয়কর্মীর সঙ্গে তর্কাতর্কি কিংবা বাতচিতে সুবিধা করার জন্য টিভিতে নিয়মিত টক শোগুলো দেখুন। আরও দেখতে পারেন জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতা। সঙ্গে গলার জোর বাড়ানোর জন্য কোনো ঘরোয়া ইস্যু নিয়ে গৃহবিতর্ক প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা যেতে পারে।

৩. পণ্যের আকাশকুসুম দাম শুনে আপনি দফায় দফায় অজ্ঞান হতেই পারেন। হৃৎপিণ্ডের এই সাময়িক বিকলতার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সঙ্গে কয়েক বোতল ঠান্ডা পানি রাখুন। অজ্ঞান হলে আপনার চোখেমুখে পানির ছিটা দিয়ে চৈতন্য ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা সহচরদের দিয়ে রাখুন আগেই।

৪. শপিংয়ে আপনাকে যেসব প্রাইস ট্যাগের মোকাবিলা করতে হবে তার প্রায় সবই অবিশ্বাস্য রকমের শক্তিশালী। মনে রাখবেন, ‘কঠিন প্রশিক্ষণ, সহজ যুদ্ধ’। কাজেই শক্তিশালী প্রাইস ট্যাগের মুখোমুখি হওয়ার আগে নিয়ম করে রিপলি’স বিলিভ অর নট কিংবা পৃথিবীর যত অবিশ্বাস্য কাণ্ড-কারখানা-টাইপের জিনিসপত্র পড়ে রাখুন। পাঠ্যসূচিতে পৃথিবীর সব বিখ্যাত রূপকথাও অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

৫. শপিংয়ে আপনাকে যে শুধু ‘কেনাকাটা যুদ্ধ’ই করতে হবে, ব্যাপারটা তা নয়। শপিং স্পটে পৌঁছানোর আগে করতে হবে আরও কিছু বড়সড় যুদ্ধ। রাস্তার অসহনীয় যানজট, ‘ম্যান’জট, গরমসহ হরেক রকমের প্রতিকূলতা জয় করার জন্য ‘ম্যান ভার্সাস ওয়াইল্ডের’ সব পর্ব দেখে নিতে পারেন। চাইলে অনুপ্রেরণার জন্য আপনার শপিংসঙ্গী করে নিতে পারেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোনো নিয়মিত যাত্রীকে।

৬. শপিংয়ের সময় আপনার আশপাশে ঘুরবে কিছু পরিশ্রমী এবং মেধাবী মানুষ। এদের নজর থাকবে আপনার পকেট এবং ব্যাগের ওপর। বিনা বেতনে এরা আপনার পকেট এবং ব্যাগ ‘দেখভাল’ করবে ভেবে আহ্লাদিত হবেন না! পারলে পকেট আগে থেকেই কেটে রাখুন, যা দেখে হয়তো ওই মেধাবী পকেটমাররা আপনার পকেটের ওপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।

৭. ভয়ংকর, রোমহর্ষক, রোমাঞ্চকর এক শপিং শেষে আপনার হার্ট অক্ষত আছে কি না, তা জানার জন্য যত দ্রুত সম্ভব একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

৮. এতক্ষণ ধরে যেসব পরামর্শ পড়লেন, সব ভুলে যান। আসলে আমরা বলতে চাই, কী দরকার ভাই এত হ্যাপা সামলে শপিং করার! ঘরেই বসে থাকুন না। শপিং করুন ই-কমার্স সাইটগুলো থেকে। আপনি বাজারে না গেলে ভিড় তো একটু হলেও কমবে।