উপাচার্যের নিকট একটি আবেদন

১৬ জুলাই ২০১৮

বরাবর
উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা

বিষয়: টিএসসিতে চা পানের অনুমতি প্রসঙ্গে।

জনাব,
সবিনয় নিবেদন, আমরা কতিপয় বহিরাগত চা-খোর দীর্ঘদিন ধরে টিএসসিতে চা পান করে আসছি। সম্প্রতি ক্যাম্পাসে বহিরাগত ঠেকানোর উদ্যোগ নিয়েছেন আপনারা। এ ঘোষণার পর চায়ের তেষ্টা মাথায় উঠলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করার সাহস পাচ্ছি না। শাহবাগ এলাকায় গিয়েছি, পাবলিক লাইব্রেরি, জাদুঘরের আশপাশে ঘুরঘুর করেছি। ফুটপাতের দোকানে চা পানও করেছি। কিন্তু বললে বিশ্বাস করবেন না, চায়ের নামে ওরা কনডেন্সড মিল্ক মেশানো গরম পানি খাইয়েছে। এই চা পান করে জিহ্বা ভারী হয়ে যাচ্ছে। ভারী জিহ্বার কারণে অনেকেরই বাক্স্বাধীনতা আজ হুমকির মুখে, কথা আটকে যাচ্ছে।

এ ছাড়া অনেকেরই বন্ধুবান্ধব, ভাই-বোন, প্রেমিক-প্রেমিকা থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আগে তারা দেখা করতে ডাকলেই আমরা গিয়ে দেখা করতে পারতাম। এখন উল্টো তাদেরই যানজট ঠেলে বহুদূর পাড়ি দিয়ে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে হচ্ছে। এতে বরং শিক্ষার্থীদেরই সময় নষ্ট হচ্ছে। এভাবে সময় নষ্ট করা ঠিক নয়। ইংরেজিতে বলা হয়েছে, ‘টাইম ইজ মানি’। মানে সময়ের সঙ্গে টাকাপয়সাও জলে যাচ্ছে। অন্যদিকে প্রেমিক-প্রেমিকাদের দেখা-সাক্ষাৎ কম হচ্ছে। ফলে ‘চোখের আড়াল তো মনের আড়াল’ সূত্র মেনে ইতিমধ্যে অনেক কোমলমতি প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্কে দেখা দিচ্ছে তীব্র টানাপোড়েন।

অতএব, মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন, ওপরের কারণগুলো বিবেচনা করে বহিরাগত চা-খোরদের টিএসসিতে গিয়ে এক কাপ চা পানের অনুমতি দিয়ে বাধিত করবেন। উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পরিবেশে যেন সামান্যতম বিঘ্ন না ঘটে, সে জন্য আমরা নিঃশব্দে চা পানের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আগে যারা চা পানের সময় সুরুত সুরুত শব্দ করত, তারাও শব্দ না করে চা পানের অনুশীলন করছে। এতে দুই-একজনের জিহ্বা পুড়ে গেলেও প্রায় সবাই নিঃশব্দে চা পানে সফল হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

নিবেদক
বচাস (বহিরাগত চা-খোর সমিতি)-এর পক্ষে
মিকসেতু মিঠু