বাঙালিয়ানার মৃত্যু নেই

তাহসীনা শাহীন ও চন্দ্রশেখর সাহা। ছবি: খালেদ সরকার
তাহসীনা শাহীন ও চন্দ্রশেখর সাহা। ছবি: খালেদ সরকার

পল্লব মোহাইমেন: চন্দ্রশেখর সাহা, আপনি ডিজাইনার ও কারুশিল্প গবেষক। অন্যদিকে আজকের আড্ডায় আরেকজন যিনি উপস্থিত, তাহসীনা শাহীন—ফ্যাশন হাউস ‘সাদা-কালো’র অংশীদার আপনি, এবং ফ্যাশন ডিজাইনারও। তো, পয়লা বৈশাখ দিয়েই শুরু করা যাক। এখন বাংলা বর্ষবরণের দিনটি সারা দেশে ব্যাপকভাবে পালন করা হয়। নতুন পোশাক কেনা ও পরারও একটা চল তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে। দেশের সবচেয়ে বড় সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে দিনটি। দেশি ফ্যাশনশিল্পের দিক থেকে বিষয়টি আপনারা কীভাবে দেখেন?

এখন পোশাকের নকশাতে শোভা পাচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতি। ছবি: প্রথম আলো
এখন পোশাকের নকশাতে শোভা পাচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতি। ছবি: প্রথম আলো

চন্দ্রশেখর সাহা: নতুন বছরে নতুন পোশাক পরার আকাঙ্ক্ষা সব মানুষেরই রয়েছে। আমরা যদি বলি, এখনকার মানুষ আর ৫০ বছর আগের মানুষের আকাঙ্ক্ষা একই ছিল, সেটা মনে হয় ঠিক হবে না। তখন এটি সর্বজনীন উৎসব ছিল না। একটি সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্‌যাপিত হতো। ৫০-৬০ বছর আগে হিন্দুসম্প্রদায়ের মানুষেরা বছরে দুইবার নতুন পোশাক পেত। একটা দুর্গাপূজার সময়, আরেকটা এই পয়লা বৈশাখে। এখন এই গত বিশ বছরে পয়লা বৈশাখের অসাধারণ এক ব্যাপ্তি তৈরি হয়েছে। বাঙালি মানেই এখন নববর্ষ উদ্‌যাপন—পয়লা বৈশাখে খাওয়া-দাওয়া আর তার সঙ্গে নতুন পোশাক। যাঁরা পোশাক তৈরি বা বিপণন করছেন, তাঁদের কাছে এটি এক বিশাল সময়।প্রত্যেকেই ভাবছেন, কীভাবে ক্রেতার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা যায়, ব্র্যান্ড ইমেজ ধরে রাখা যায়। নতুন নতুন চিন্তাভাবনা করছেন প্রত্যেক নির্মাতা। এই একক ভাবনাগুলো যখন সামগ্রিকতা পায় তখন কিন্তু বিশাল ঘটনা ঘটে। ধরা যাক, দেশি পোশাকের ২৫টি ব্র্যান্ডের হাত ধরে ২৫টি নতুন ভাবনা আসে। এই ২৫টি ভাবনার আশপাশে আসে আরও ২৫০০ ভাবনা। এভাবে প্রতিবছরই এক ধাপ থেকে আরেক ধাপে উন্নতি হচ্ছে। তাই বলতে পারি, এই বৃহৎ উৎসবে ফ্যাশনশিল্প একটি বড় জায়গা দখল করে আছে।

পল্লব: পোশাক কেনাবেচার দিক থেকে পয়লা বৈশাখের অবস্থানটি এখন কোথায়? পোশাকের সংখ্যা তো বেশি মনে হয়।

তাহসীনা শাহীন: ঈদ এখনো সবার ওপরে। কেনাবেচার দিক থেকে ঈদের পরেই সর্বজনীন উৎসব পয়লা বৈশাখের অবস্থান। তবে এর ব্যাপ্তি প্রতিবছরই বাড়ছে।

চন্দ্রশেখর: ঈদ সম্প্রদায়গত উৎসব। কিন্তু পয়লা বৈশাখে চারটি সম্প্রদায়েরই অবদান আছে। তবুও ফ্যাশনশিল্পের জন্য ঈদ এখনো বড়।

পল্লব: এর কারণ কী?

শাহীন: পয়লা বৈশাখ সবাই উদ্‌যাপন করে। পোশাক মূলত নিজেদের জন্য কেনে। ঈদে পোশাক অন্যকে কিনে দেওয়ার ব্যাপারটা থাকে।

পল্লব: শাহীন, আপনাদের ফ্যাশন হাউস সাদা-কালোয় তো সাদা আর কালো—এই দুই রঙের বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। পয়লা বৈশাখের মতো উৎসবের সঙ্গে সাদা-কালো রং কতটা মানানসই? ক্রেতাদেরই বা আকর্ষণ করেন কীভাবে?

শাহীন: সাদা-কালোই যেহেতু আমাদের রং তাই এর বাইরে যেতে পারি না। বৈশাখের একটি রং সাদা। তাই সাদা দিয়ে আমরা পোশাক তৈরির চেষ্টা করি। এবার যেমন সাদার ওপর সাদা কাজ করেছি পোশাকে।

চন্দ্রশেখর: বৈশাখের রং কিন্তু সাদা আর লাল।

পল্লব: এটি নির্ধারণ হলো কীভাবে?

চন্দ্রশেখর: কোথাও লিপিবদ্ধ নেই। প্রথমে কয়েকজন পরল, সেটা মিডিয়ায় এল। এরপর লাল-সাদা রংটি বৈশাখের রং হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল। এই রীতি ভাঙারও অনেক চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু বৈশাখের রং লাল-সাদাই থেকে গেছে।

পল্লব: আপনার দুজনের শুরুর দিকে একটু ফিরে যাই। তখন দেশি ফ্যাশনের অবস্থাটি যদি বলেন...।

চন্দ্রশেখর: ১৯৮১ সালে আড়ংয়ে আমার কাজের শুরু। আড়ং ’৭৮ সাল থেকেই কাজ করত। তখন দুটো বিদেশি সংস্থা এর দেখাশোনা করত। ’৮১-তে এটি ব্র্যাকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আড়ং এল মানে একটা ব্র্যান্ড এল। শুধু পোশাক বা ফ্যাশন নয়, ঘর গেরস্থালির সব রকম পণ্য নিয়েই আড়ংয়ের আসা। ধরুন, গয়না রাখার বাক্সটাও যে সুন্দর কারুকার্যময় হতে পারে, সেসব আড়ংয়ের হাত ধরেই। ওই সময় আরও প্রতিষ্ঠান ছিল—নিপুণ, কারিকা–এর নাম বলা যায়। সবারই চেষ্টা ছিল দেশীয় ধারা নিয়ে কাজ করা।

পল্লব: ফ্যাশনশিল্পে শাহীনের তো অনেক বছর হয়ে গেল। শুরুটা কীভাবে?

শাহীন: আড়ং থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই শুরু। আড়ংয়ের পাশাপাশি দেশীয় ফ্যাশনে তখন আরও নাম পরিচিতি পেয়েছে—কুমুদিনী, কে-ক্র্যাফট, অঞ্জন’স, রঙ ইত্যাদি। অনেক মানুষ কাজ পেয়েছে, আরও মানুষ কাজ পাবে। এ রকম নানা ভাবনা থেকে ২০০২ সালে বাংলার মেলার পরপরই আমরা সাদা-কালো চালু করি। আমি আর আজহারুল হক আজাদ এর অংশীদার। আমি চারুকলায় পড়েছি। ফ্যাশন হাউস করার ইচ্ছেটা অনেকখানি সে কারণে।

চন্দ্রশেখর: যে দেশে সংস্কার হলো, বৈধব্যের রং সাদা আর শোকের রং কালো, সেখানে শাহীনদের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সাহসী।

শাহীন: শুরুর সময় শুধু সাদা আর কালো রঙের পোশাক চলবে কি না তা নিয়ে অনেকেরই সংশয় ছিল। তবে আমরা আমাদের ধারাটা ধরে রাখতে পেরেছি।

পল্লব: ফ্যাশন আর দেশি ফ্যাশনশিল্পের এই যে এখন রমরমা অবস্থা তা কবে থেকে?

চন্দ্রশেখর: ঢাকার ফ্যাশনে বড় পরিবর্তন আসে ২০০১ থেকে ২০০৫-এর মধ্যে। আমার দৃষ্টিতে ১৯৯৫ থেকে ২০০০ ছিল দেশি ফ্যাশনের বুটিক হাউসগুলোর স্বর্ণযুগ। ২০০১ থেকে ২০০৫ সালকে উজ্জ্বল স্বর্ণ সময় বলা যায়। ২০১০-এর পর থেকে দ্রুত পাল্টাতে থাকে দৃশ্যপট। এর পরের সময় হলো সোনালি সময়টাকে ধরে রাখার চেষ্টা। আড়ংয়ের কেন দরকার পড়ল ‘তাগা’ নামের নতুন ব্র্যান্ড বাজারে আনার? কিংবা কে-ক্র্যাফটের ‘ইয়াং কে’, রঙের ‘ওয়েস্ট রং?’ সবই নতুন সময়ের চাহিদার জন্য করতে হয়েছে।

পল্লব: চন্দ্রশেখর সাহা, কারুশিল্প নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা ও কাজ করছেন আপনি। নানা ধরনের লোকজ মোটিফ, কারুশিল্পের বিভিন্ন উপাদান ফ্যাশন ডিজাইনে, নির্দিষ্টভাবে বললে পোশাকে তুলেও এনেছেন সফলভাবে। সম্প্রতি কাজ করেছেন সন্দেশের ছাঁচের নকশা নিয়ে। এবারের বৈশাখী সংগ্রহে বেশ কটি ফ্যাশন হাউস সন্দেশের মোটিফ ব্যবহার করেছে পোশাকে। এখন রাস্তাঘাটে দেখা যায়, এ সময়ের ‘বৈশ্বিক’ ভাবধারার তরুণ প্রজন্মও পছন্দ করছে বাংলাদেশের লোকজ মোটিফের নকশা আঁকা পোশাক। এর কারণ কী?

চন্দ্রশেখর: ফেসবুক যুগের তরুণ হোক, কিংবা ইংরেজি মাধ্যমের—মূল প্রশ্নটা হলো, ‘আমি কে?’ এর উত্তর একটিই—আমি বাঙালি। তাই তরুণ প্রজন্ম যখন নিজের আত্মপরিচয়টা পোশাকে পায়, তখন সেটা গ্রহণ করে।

শাহীন: পশ্চিমা ধাঁচের পোশাক হয়তো তারা পরছে, কিন্তু তাতেও দেশীয় মোটিফ থাকছে।

পল্লব: পয়লা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় স্থান পেয়েছে গত নভেম্বর মাসে। এই শোভাযাত্রার মুখোশ, পুতুল ইত্যাদি কিন্তু পোশাকেও দেখা যায়।

চন্দ্রশেখর: আমাদের এদিকে কার্নিভ্যাল ছিল না। মঙ্গল শোভাযাত্রা সেই অভাবটি পূরণ করে দিয়েছে।

শাহীন: ঢাকায় ১৯৮৯ সালে প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। তখন আমরা ভর্তি হয়েছি চারুকলায়। রাতে মুখোশ বানিয়ে সকালে পয়লা বৈশাখ পালন করতাম। এখন তো এর ব্যাপ্তিটিও বিশাল। বেশ কদিন আগে থেকে চলে এর প্রস্তুতি।মঙ্গল শোভাযাত্রা অনেক বর্ণিল। আর সব রংই লোকজ রং। পোশাকে তা সহজেই উঠে এসেছে।

পল্লব: এখ ‘কনসেপ্ট’ বা ধারণার বিষয়ে আসি। বর্তমানে কমবেশি নামকরা সব ফ্যাশন হাউসকে দেখা যায় নানা সময়ে একটি ধারণা নিয়ে পোশাক তৈরি করে। এ ধারাটা কেমন মনে হয় আপনাদের কাছে?

শাহীন: আমার কাছে একে বড় পরিবর্তন মনে হয় এবং তা ইতিবাচক। কমবেশি সব ফ্যাশন হাউসই এখন নির্দিষ্ট একটা ধারণা (কনসেপ্ট) নিয়ে পোশাকের ডিজাইন শুরু করে। নির্দিষ্ট একটি বিষয় ধরে নকশা করা হয়। আমার নিজের কাছেও বিষয়ভিত্তিক ডিজাইন ভালো লাগে। আমরা যখন ‘জ্যামিতিক নকশায় সাদা-কালো’ ধারণা নিয়ে ডিজাইন করেছিলাম তখনো কিন্তু ধারণা বা বিষয় ধরে পোশাক তৈরির প্রচলন এতটা দেখা যায়নি। এখন কনসেপ্টভিত্তিক পোশাক তৈরি হচ্ছে, যা খুবই আশার কথা।

চন্দ্রশেখর: ধারণা নিয়ে একটু বলি। নানা রকম বিষয় ধরে কাজ করছেন একেকজন। কখনো রং, কখনো মোটিফ, কখনোবা উৎসব, বিশেষ দিন ধরে পোশাকের নকশা তৈরি হচ্ছে। যামিনী রায়, কামরুল হাসানকে হয়তো সাধারণ মানুষ সেভাবে চিনত না। পোশাকে তাঁদের ছবি ব্যবহার করায় সবাই তাদের চিনছে। আবার কান্তজিউর মন্দির বা এ রকম স্থাপনাও উঠে আসছে পোশাকে। ধারণাগত কাজের ক্ষেত্রে আমি ফ্যাশন হাউস নিত্য উপহারকে পথিকৃৎ বলতে চাই। ওরাই প্রথম নির্দিষ্ট বিষয় ধরে পোশাক তৈরি করে।

পল্লব: আপনারা এখন কে কী কাজ করছেন?

চন্দ্রশেখর: বাংলাদেশ কারুশিল্পী পরিষদের প্ল্যাটফর্ম সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়ে, সব জায়গার কারুশিল্পের একটা ডেটাবেইস গড়ে তোলা যায় কি না সেই চেষ্টা করছি। বাংলাদেশের কারুশিল্প হোক আর বয়নশিল্প হোক—কিছু হচ্ছে মৌলিক আর কিছু মাইগ্রেটেড। মৌলিক শিল্পগুলোর তথ্য নিয়ে প্রকাশনা করতে চাচ্ছি। এগুলোর বৈশিষ্ট্য, ব্যাপ্তি সব থাকবে প্রকাশনায়। যেমন: নিসার (শিল্পী নিসার হোসেন) একটি কাজ করেছেন, এটি প্রকাশিত হবে—সরা নিয়ে কাজ করতে গেলে এই বইটি লাগবেই। নকশি কাঁথা নিয়ে কয়েকটি বই বেরিয়ে গেছে। সেগুলোর উদ্দেশ্য একই রকম। আমার পরিেপ্রক্ষিত ভিন্ন। নকশি কাঁথা বানিয়েছেন যাঁরা, সেই গৃহিণীদের প্রত্যেকেই শিল্পী। তাঁরা রং-তুলি-কাগজের বদলে সুই-সুতা আর কাপড় ব্যবহার করছেন। এক, দেড় বা দুই শ বছর আগেকার জামদানি শাড়ি যখন আমাদের হাতে আসে, বিস্মিত হই। একজন তাঁতশিল্পী এতগুলো বিষয় একসঙ্গে কীভাবে ভাবতেন! অনেকে বলতে পারেন, ওই শিল্পীর বংশধরেরা তো একই রকম জামদানি বুনতে পারেন। বাস্তবতা হলো, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এসে মূল কাপড় আর এখনকার কাপড়ের মধ্যে হাজার মাইল ব্যবধান। মান নেমে গেছে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে। মেধার সম্মানটাও দেওয়া হয় না। এই সব বিষয় নিয়ে কাজ করতে চাই।

পল্লব: কারুশিল্পের কাজগুলোই তুলে ধরতে চান?

চন্দ্রশেখর: আমি একা পারব না। এর জন্য দরকার পৃষ্ঠপোষকতা এবং আমাদের বিভিন্ন অঞ্চলের কারুশিল্প নানা মাধ্যমে তুলে ধরা।

শাহীন: সাদা-কালো যেমন একটা স্বপ্ন থেকে শুরু করেছিলাম, তেমনি ক্ষুদ্র জাতিসত্তা–সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করতে চাই। আর তা অবশ্যই ফ্যাশনে এবং সাদা-কালোর বাইরে।

পল্লব: দেশি ফ্যাশনের ধারা বেগবানকল্পে কী করতে হবে?

চন্দ্রশেখর: আমরা বাংলাদেশি। আমরা বাঙালি সংস্কৃতির ধারকবাহক। এর বহিঃপ্রকাশে নানা কিছু হচ্ছে। ভাষা, পোশাক, খাবারে এ ধারা তুলে ধরতে হবে। আমাদের সবকিছু উদ্‌যাপন করতে হবে রাষ্ট্রকে। রাষ্ট্রীয় কোনো অনুষ্ঠানে হাত-তাঁতে বোনা দেশি পোশাক পরতে হবে। বাঙালিয়ানা থাকতে হবে।

পল্লব: এই সময়ের ডিজাইনারদের কাজ এবং ক্রেতাদের রুচি সম্পর্কে বলুন?

শাহীন: আমাদের সময়ও চারুকলায় স্নাতকেরা ডিজাইন করতেন। তখন ফ্যাশন ডিজাইন ইনস্টিটিউট ছিল না। শুধু বিসিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। এরপর ফ্যাশন ডিজাইন ইনস্টিটিউট যখন এল, তখন এসব জায়গা থেকে ফ্যাশন ডিজাইনার বের হতে থাকল। তাঁদের যা শেখানো হয় তা আমাদের ফ্যাশন হাউসের উপযোগী কম। বায়িং হাউসের উপযোগী বেশি।

চন্দ্রশেখর: না শাহীন, তা না। ওই সব একাডেমিতে পাঠক্রম বা সিলেবাসের সমস্যা। ওদের পাঠ্যক্রম ঠিক হচ্ছে ইউরোপ থেকে।

শাহীন: আমি একমত আপনার সঙ্গে। ওই ঘরানায় শিখে আসার কারণে কারিগরিভাবে আমাদের সঙ্গে একটু সমস্যা হয়। তবে ধীরে ধীরে তাঁরাও মেলাতে পারছেন। যাঁরা পারছেন না, তঁারা তৈরি পোশাকশিল্পের দিকে যাচ্ছেন।

পল্লব: জামদানির জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) আমরা পেয়েছি, মঙ্গল শোভাযাত্রার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও আমরা পেলাম। এই বিষয়গুলো ভবিষ্যতে আমাদের কতটা সুবিধা দেবে?

চন্দ্রশেখর: এসবে দেশীয় স্বীকৃতি ও আন্তর্জাতিক আগ্রহ ছিলই। যখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আসে, তখন এসবে ভবিষ্যতে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। আর বাঙালি নিজেকে ভুলবে না কখনোই।

শাহীন: বাঙালিয়ানা টিকে থাকবে বহুদিন—কথাটি জোর দিয়েই বলতে পারি।