ছবির খেরোখাতা ছবির জগৎ

মুর্তজা বশীর ও মোস্তফা জামান। ছবি: খালেদ সরকার
মুর্তজা বশীর ও মোস্তফা জামান। ছবি: খালেদ সরকার

এ কে এম জাকারিয়া: আপনারা দুজন দুই সময়ের। একজন এ দেশে চারুকলাচর্চার একদম শুরুর দিকের। আরেকজনের শুরুটা সাম্প্রতিক সময়ে। দুজনই কাজ করে যাচ্ছেন। শুরুর পরিস্থিতি আর বর্তমানে আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে, বিষয়টি যদি আলাদা আলাদা করে বলেন।

মুর্তজা বশীর: ঢাকা গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আর্ট শুরু হয়েছিল ১৯৪৮ সালে। এরপরের বছর দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র হিসেবে ভর্তি হয়েছিলাম সেখানে। আমার ব্যাচে আরও ছিলেন কাইয়ুম চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, রশীদ চৌধুরী। পরে রাজনৈতিক কারণে কলকাতা আর্ট কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হয়ে বিজন চৌধুরী ও দেবদাস চক্রবর্তী যোগ দেন আমাদের সঙ্গে।

আমাদের শুরুর সময়ে ঢাকায় ছবি আঁকার রং বলতে যা বোঝায় তা ছিল না। ক্যানভাস পাওয়া যেত না। তখন যাঁরা শুরু করেছিলেন, তাঁরা অদম্য স্পৃহা নিয়ে কাজ করতেন। আর্টের কোনো বই দেখার সুযোগও আমাদের হয়নি। লাইব্রেরি একটা ছিল, কিন্তু আমাদের বই দেখতে দেওয়া হতো না। কলেজে আমাদের তখন শুধু হাতে-কলমে শেখানো হতো, আর্টের ইতিহাস পড়ানো হতো না।

মনে আছে, আমি প্রথম তাত্ত্বিক পড়াশোনার সুযোগ পাই আর্ট কলেজ থেকে পাস করার পর। কলকাতা গিয়েছিলাম আশুতোষ মিউজিয়ামে টিচার্স ট্রেনিংয়ের কোর্স করতে। তখন ওরিয়েন্টাল আর্ট, ওয়েস্টার্ন আর্ট, নন্দন তত্ত্ব—এসব বিষয়ে প্রথম পড়াশোনার সুযোগ পাই।

আমরা যে সুযোগ পাইনি এর একটা ভালো দিক আছে। তখন শিল্পীদের মধ্যে বলা যায় একধরনের স্বকীয়তা ছিল। এখনকার শিল্পীদের চেয়ে তাঁদের নিজস্ব ভাবধারা ছিল। মোস্তফা জামান ভালো বলতে পারবে। তখন ইন্টারনেট ছিল না। এখন প্রচুর ছবি দেখার সুযোগ আছে। এতে প্রভাবিত হচ্ছে। ফলে বর্তমান সময়ের শিল্পীরা নিজস্ব কিছু করতে পারছেন না। অনেকের কাজ ও ফর্ম প্রায় একই রকম।

‘তিনমুখ–১’, শিল্পী: কামরুল হাসান
‘তিনমুখ–১’, শিল্পী: কামরুল হাসান

মোস্তফা জামান: আশির দশকে যখন ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউটে পড়া শুরু করি তখন অবশ্য প্রি-ইন্টারনেট যুগ। তবে আমাদের লাইব্রেরির সুযোগ ছিল। ব্যক্তিগত আগ্রহ থেকে লাইব্রেরিতে গিয়েছি। ক্ল্যাসিক্যাল আর্ট দেখার সুযোগ হয়েছে। পাবলো পিকাসোর ছবি দেখার আগেই এল গ্রেকোর কাজ আমি দেখেছি। এটা অবশ্য আমার ব্যক্তিগত আগ্রহের কারণে হয়েছে। আমরা যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মধ্য দিয়ে গিয়েছি, এর মূল সমস্যা হচ্ছে ব্রিটিশ স্কুলিং। যেমন আমাদের স্টিল লাইফ শেখানো হতো একই নিয়মে। আমরা নিজেদের মতো করে কিছুই সাজাতে পারতাম না। দেখে দেখে হুবহু ছবি আঁকাই আমাদের শেখানো হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে নিজের সৃজনশীলতা ধরে রাখা কঠিন।

বশীর: ব্রিটিশ স্কুলের এটা একটা সমস্যা। আমি ইতালিতে পড়তে গিয়ে দেখেছি শিক্ষকেরা কোনো কিছু চাপিয়ে দিতে চান না। তাঁরা সমালোচনা করতেন কিন্তু যা করার তা আমাকেই করতে হতো। চট্টগ্রামে আমি আর রশীদ চৌধুরী শিক্ষকতা করার সময় এই বিষয়গুলো মেনে চলেছি। আমি কখনো কোনো ছাত্রের কাজে হাত দিইনি। যে কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে পাস করা শিল্পীদের মধ্যে একটা পার্থক্য কিন্তু শুরু থেকেই লক্ষণীয়।

মোস্তফা: ঐতিহ্য মেনে আমাদের হুবহু ছবি আঁকা শেখানো হলো আর পরে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে বলা হলো যে ভাঙো, মানে বুঝিয়ে দেওয়া হলো কিউবিজমের দিকে নজর দাও। তখন আমরা সবাই বিপদে পড়লাম। যা শেখানো হয়েছে তা ভেঙেচুরে কিছু করতে গিয়ে অনেকেই হাবুডুবু খেয়েছেন। তেমন কিছু করতে পারেননি। ফলে নিজের একটা স্টাইল বা ধরন তৈরি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। বিভিন্ন পর্যায়ে ভালো নম্বর পেয়েও পরে দেখা গেছে অনেকে শিল্পী হিসেবে ব্যর্থ হয়েছেন। আমাদের প্রজন্ম এই বিভ্রান্তির মধ্যে ছিল। পরে ইন্টারনেটের যুগে বাইরের শিল্পীদের ছবি দেখার সুযোগ আসে। বাইরের বিভিন্ন শিল্পীর ছবি, বিশেষ করে পুরস্কার পাওয়া ছবি, পরের প্রজন্মকে প্রভাবিত করতে থাকে।

বশীর: আমি আমাদের প্রজন্ম বলতে ১৯৪৮ থেকে ’৫৬ সাল পর্যন্ত যাঁরা কাজ শুরু করেছেন তাঁদেরই বুঝি। এরপর আমি ইতালি চলে যাই। দীর্ঘদিন যোগাযোগের বাইরে ছিলাম। আমাদের প্রজন্মের শিল্পী—এমনকি যাঁরা শিক্ষক ছিলেন, এঁদের চেয়ে বর্তমান প্রজন্মের শিল্পীদের বেশি প্রতিভাবান মনে করি আমি। আমাদের পড়াশোনা অনেক কম ছিল। এখনকার শিল্পীরা বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে অনেক এগিয়ে, তাঁরা অনেক মেধাবী। তবে সমস্যা হচ্ছে অনেকেই নিজস্বতা তৈরি করতে পারছে না। বলা যায়, অন্যের মুখে তারা ঝাল খেয়েছে।

জাকারিয়া: একটু ব্যাখ্যা করে বলবেন কী।

বশীর: বাংলাদেশে আর্টকে আমি স্পষ্ট দুই ভাগে ভাগ করতে চাই। ১৯৮১ সালের আগের আর্ট আর পরের আর্ট। সেই বছর থেকে এশিয়ান বায়েনাল শুরু হয়েছিল। বলা যায়, সেই প্রথম বাংলাদেশের শিল্পীরা বাইরের কাজ সামনাসামনি দেখার সুযোগ পেলেন। নতুন নতুন টেকনিক দেখতে পেলেন। ‘ইনস্টলেশন আর্ট’ জিনিসটা কী এখানকার অনেকেরই এর আগে কোনো ধারণা ছিল না। বাংলাদেশের আর্টে এরপর এক বড় জাম্পের ঘটনা ঘটে। এখন তো একেবারে ভিন্ন পর্যায়ে চলে গেছে। অশিক্ষিত থাকার ফলে আমাদের যে একটা ভাষা ছিল তা এখন হারিয়ে গেছে। এখন এই প্রজন্মের আর কোনো নিজস্ব ভাষা নেই।

জাকারিয়া: বশীর ভাই বললেন যে জানাবোঝা কম থাকলেও তাঁদের প্রজন্মের একটা ভাষা ছিল। এখন কোনো নিজস্ব ভাষা নেই। দুই প্রজন্মের মধ্যের ধারাবাহিকতা কি নষ্ট হয়ে গেছে? মাঝখানে কি বড় কোনো ‘ব্রেক’ হয়ে গেছে।

মোস্তফা: ব্রেক তো হবেই। তা না হলে নতুন আর্ট তৈরি হবে কীভাবে? আবার ভিন্নভাবে হলেও ধারাবাহিকতা রয়েছে। যেমন আমার কাজের ক্ষেত্রে আমি বলতে পারি, আগের শিল্পীদের অনেক কিছুর ছাপ আমার কাজে রয়েছে। আমার কাজে কামরুল হাসানের শিক্ষা আছে। হয়তো তাঁর রিদমিক ড্রয়িংগুলো নেই, রিদম না নিয়ে আমি আমার মতো করে জ্যামিতিক ফর্ম নিয়েছি। ফলে ধারাবাহিকতা নেই তা বলা যাবে না। এটা আসলে নিজেকে পজিশনিং করারও একটা ব্যাপার। আমরা একাডেমি থেকে যা শিখেছি—জ্ঞানের ধারাবাহিকতাহীন ওই ব্রিটিশ শিক্ষা। প্রকৃতিতে যা আছে তাই আঁকো। কিন্তু জ্ঞান তো প্রবাহিত করার বিষয়। আবার ঢাকার আর্টের স্কুলিং ব্রিটিশ হওয়া সত্ত্বেও তা ভেঙেছে। জয়নুল আবেদিন হাই আর্ট ও লো আর্টের কনসেপ্ট ভেঙে দিয়েছেন। এসবের প্রভাব ও উত্তরাধিকার কিন্তু আমাদের কাজে আছে। ছাপ হিসেবে হোক বা অনুপ্রেরণা হিসেবে হোক। ডোপার্টের (শিল্পকলাবিষয়ক পত্রিকা) কাজ করতে গিয়ে বছর সাতেক আগে আমি এস এম সুলতানের অনেক বড় কাজ দেখেছি। সেসব আমাকে প্রাণিত করেছে। স্টাইল নকল করতে না পারি, অনুপ্রাণিত তো হতেই পারি। স্বতন্ত্র একজন হিসেবে নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে এই যে আমি বড় হয়েছি, আমার একটা নিজস্ব সচেতনতা তৈরি হয়েছে, এর একটা স্থানিক ব্যাপার অবশ্যই আছে, তবে বাইরে থেকে কিছু নেওয়া যাবে না তা কিন্তু নয়। ধরুন, কোনো পুরোনো বই ঘাঁটতে গিয়ে যদি আমি এখন কোনো এক অস্ট্রেলিয়ান শিল্পীর ছবি পেয়ে যাই এবং সেই ইমেজ যদি আমাকে অনুপ্রাণিত করে তবে তা থেকে নিতে সমস্যা কী? বশীর স্যার যে ‘এপিটাফ’ সিরিজ এঁকেছেন সেই নুড়িগুলো ফ্রান্স থেকে কুড়ানো।

জাকারিয়া: আর্ট এখন এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে যে আর্ট আর নন-আর্টের পার্থক্য অনেকটাই ঘুচে গেছে। একজন শিল্পী যেকোনো অবজেক্টকেই তাঁর আর্ট বা শিল্প হিসেবে দাবি করতে পারেন। ইনস্টলেশন আর্ট বা স্থাপনাশিল্পে দেখা যাচ্ছে সব মাধ্যম মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। আর্টের সমসাময়িক এই ধারাকে আপনারা কীভাবে দেখছেন?

বশীর: আমার মনে হয়, ইনস্টলেশন আর্ট বা স্থাপনাশিল্প ক্ষণস্থায়ী। এটা যদি কেউ প্রথমে করে থাকেন তিনি পাবলো পিকাসো। সাইকেলের সিট ও হর্ন ব্যবহার করে প্রাণী বানিয়েছেন। টুকরির মধ্যে ব্রোঞ্জ ঢালাই করে তা দিয়ে জন্তুর পেট বানিয়েছেন। তিনি কিন্তু পরে আর এসব করেননি। পিকাসোর মতো একজন শিল্পী হাজার বছরে একজন আসেন না। আমার নিজের মনে একটা প্রশ্ন, তিনি কেন আর তা করলেন না? কারণ এর একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আর এখন যা হচ্ছে তা তো একেবারেই ক্ষণস্থায়ী। প্রদর্শনীর পর তা গুটিয়ে ফেলতে হচ্ছে। আমি প্যারিসে মডার্ন আর্ট মিউজিয়ামে তাপিসের কাজ দেখেছি। একটা বড় ওয়ার্ডরোব, দরজা খোলা, কাপড়-চোপড় বের হয়ে আছে। তাপিস পরে কেন এ ধরনের কাজ আর করেননি? ক্যান্ডেনেস্কিও কিছু কাজ করেছেন। কিন্তু পরে তাঁরা কেউই আর তা করেননি।

মোস্তফা: বিশ শতকের প্রথম ভাগে এ ধরনের চেষ্টা শুরু হয়েছে। একে এখন যেভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তখন তা হয়নি। জ্ঞানের জায়গা থেকে বললে এখন আমরা এটাকে ‘কনটেমপোরারি আর্ট’ হিসেবে বলছি। আর শীর স্যার যে ক্ষণস্থায়ী বা ‘এফিমেরালিটি’র কথা বললেন সেটা আসলে ইনস্টলেশন আর্টের একটা বৈশিষ্ট্য। আমি একটা ইনস্টলেশনের কাজ করেছিলাম। প্রদর্শনী শেষ হওয়ার পর বাসায় নিয়ে গিয়েছি। যেভাবে প্রদর্শনী করেছি সেভাবে আর তা রাখার সুযোগ নেই। কারণ এটা একটা নির্দিষ্ট স্থান বা গ্যালারি বিবেচনায় নিয়ে করা হয়েছিল। ইনস্টলেশনের ক্ষণস্থায়িত্ব নিয়ে দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই।এটা এমনই যে তা টিকবে না। ভেনিস বিয়েনালে সৌদি আরব থেকে একজন কিউরেটর একটি কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন। একজন বুড়ো লোক পাথর সংগ্রহ করতেন, তাঁর সংগ্রহ থেকে পাথর নিয়ে তাকে আর্ট হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ফলে সমসাময়িক আর্ট শুধু প্রযুক্তিনির্ভর বলে অনেকের মধ্যে যে ধারণা রয়েছে, সেটাও ঠিক নয়। জীবনযাপন, সংস্কৃতি, আদি চিহ্ন বা প্রথা—এসবও এর সঙ্গে যুক্ত। আসলে শিল্পমাধ্যমনির্ভর আধুনিকতা থেকে সরে আসার চেষ্টা হিসেবেই ইনস্টলেশনে সব মাধ্যমকে মেলানোর চেষ্টা হয়েছে।

জাকারিয়া: শিল্পীদের জীবন-জীবিকা ছবি বিক্রির ওপর নির্ভর করে। ছবি কেনাবেচার শুরুর অভিজ্ঞতা আর বর্তমানে এই বাজারের অবস্থা কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে?

বশীর: আমি শিক্ষকতা শুরু করেছি ৪১ বছর বয়সে। এর আগ পর্যন্ত ছবি বিক্রির ওপর আমার জীবন-জীবিকা ছিল পুরোপুরি নির্ভরশীল। করাচি, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি—এসব জায়গায় নিজের জায়গা তৈরি করে নিতে হয়েছে। ঢাকার ক্রেতা ছিল মূলত বিদেশিরা। কলসি কাঁখে মেয়ে বা এ ধরনের এক্সরটিক ছবিই ছিল তাঁদের আগ্রহের বিষয়। এরপর ছবির ক্রেতা ছিল মূলত ব্যাংকগুলো। আমার ‘এপিটাফ’ সিরিজের ছবিগুলো কিনেছে বিভিন্ন ব্যাংক। অন্য কিছু প্রতিষ্ঠানও ছবি কিনেছে। আবার পাকিস্তানের অনেক উঠতি ব্যবসায়ীও ছবি কিনতেন। তাঁদের কেউ কেউ ছবির দাম ভবিষ্যতে বাড়বে—এমন বিবেচনা থেকে বিনিয়োগ হিসেবেও ছবি কিনতেন। আর বাংলাদেশে বর্তমানে যে ছবির বাজার তৈরি হয়েছে এর ক্রেতা মূলত গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা।

মোস্তফা: গার্মেন্টস ব্যবসায় এখন খারাপ সময় যাচ্ছে। ফলে ছবির বাজারও এখন বেশ খারাপ।

জাকারিয়া: বর্তমানে যাঁরা ছবির ক্রেতা হিসেবে হাজির হয়েছিলেন, তাঁরা অনেক ছবি কিনে ফেলেছেন বা তাঁদের সংগ্রহে নিজেদের পছন্দের শিল্পীদের অনেক ছবি জমা হয়েছে। ছবির বাজারের মন্দাভাবের পেছনে এমন কারণ থাকতে পারে কি?

মোস্তফা: এটা খুবই সত্যি। কারণ আমাদের দেশে তো প্রাইভেট গ্যালারি নেই। ছবি রাখার জায়গাও তো একটা বড় সমস্যা। বাইরে যাঁরা ছবি সংগ্রহ করেন, তাঁদের ছবি সর্বদা একটা মুভমেন্টের মধ্যে থাকে। এটা না থাকলে বাজার স্থবির হয়ে যাবে—এটাই স্বাভাবিক। বিদেশের বড় বড় ছবি সংগ্রাহক তাঁদের অনেক কাজ ছেড়ে দেন, আবার নতুন কাজ কেনেন। সংগ্রাহকরা তাঁদের ফোকাস পরিবর্তন করেন। আমাদের এখানে তেমন কিছু এখনো গড়ে ওঠেনি।

জাকারিয়া: দেশের বর্তমান বাস্তবতায় শুধু ছবি বিক্রি করে কোনো শিল্পীর পক্ষে জীবন-জীবিকা টিকিয়ে রাখা কি সম্ভব?

বশীর: আমার তো আর কোনো উপায় নেই। ছবি বিক্রি করেই এখনো আমাকে চলতে হচ্ছে।

মোস্তফা: আমার পক্ষে অবশ্য শুধু ছবি বিক্রি করে বেঁচে থাকা সম্ভব বলে মনে হয় না। সে জন্য অন্য কাজ করি। ছবি বিক্রির টাকা বাড়তি আয়।