শিল্পের জগৎ বদলায় না

>

প্রচ্ছদ: অশোক কর্মকার
প্রচ্ছদ: অশোক কর্মকার

খোলামেলা আড্ডায় বাংলাদেশের সংস্কৃতির সেকাল-একালের গল্প। সংস্কৃতির বিভিন্ন অঙ্গনের দুই প্রজন্মের প্রতিনিধিদের মুখে তাঁদের অজস্র মজার ঘটনা, অজানা কথা, অন্তরঙ্গ উপলব্ধি

ফেরদৌসী মজুমদার ও মোশাররফ করিম। ছবি: সুমন ইউসুফ
ফেরদৌসী মজুমদার ও মোশাররফ করিম। ছবি: সুমন ইউসুফ

শিবব্রত বর্মন: আপনারা দুই ভিন্ন সময়ে অভিনয়জীবন শুরু করেছেন। প্রায় ত্রিশ বছরের ব্যবধান। আলোচনাটি ফেরদৌসী মজুমদারকে দিয়েই শুরু করি। আপনি যখন শুরু করেন, আজ থেকে চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ বছর আগে, থিয়েটারের কথা বলছি, কেমন ছিল সেই সময়টা? যখন শুরু করেছিলেন, তখন যে দর্শক ছিল, সেই দর্শক কতটা বদলে গেছে?

ফেরদৌসী মজুমদার: দর্শক বদলেছে। বদলে যাওয়ার কারণও আছে। জীবন অনেক জটিল হয়ে গেছে। যানজটের কারণে এখন সামাজিক জীবনই তো নেই। মঞ্চনাটকে দর্শক টানতে আগে আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকিট বিক্রি করেছি। বলেছি, আমাদের নাটক দেখেন। আমাদের প্রথম নাটক আবদুল্লাহ আল-মামুনের সুবচন নির্বাসনে, ওটা যখন করি, লোকে মিলনায়তনে গিয়ে নাটক দেখতে অভ্যস্তই ছিল না। আবদুল্লাহ আল-মামুন আমাদের প্রত্যেককে পাঁচটা-পাঁচটা করে টিকিট দিলেন, বললেন বিক্রি করতেই হবে। তো, ওই পাঁচটা টিকিট নিয়ে আমি গেলাম আমাদের পাশের বাসায়। যদ্দুর মনে পড়ে বাসাটি ছিল এক মন্ত্রীর। গিয়ে তাঁকে বললাম, তিনটে টিকিট কেনেন, আমাদের নাটক আছে পরশু দিন। ‘নাটক?’—বলে তিনি এমন চেহারা করলেন! মানে এর চেয়ে যেন জঘন্য জিনিস আর...হা হা হা...।

শিবব্রত: দৈবচয়ন ভিত্তিতে যেকোনো বাসায় যেতেন টিকিট বিক্রি করতে?

ফেরদৌসী: না। পরিচয়ের সূত্র ধরে যেতাম। তিন টাকা, পাঁচ টাকা—দুই দামের টিকিট ছিল। অল্পদিনেই বদলে গেল চেহারা। মানুষ নাটক দেখে অভ্যস্ত হতে থাকল, মজা পেতে লাগল।

শিবব্রত: থিয়েটারের সবচেয়ে সুদিন, স্বর্ণযুগ কোনটি? দর্শক তৈরি হয়ে গেছে, অনেকগুলো নাট্যদল, অনেক নাটক—এমন রমরমা কাল কোনটিকে বলা যাবে?

বিটিভিতে প্রচারিত হ‌ুমায়ূন আহমেদের কোথাও কেউ নেই ধারাবাহিকের দৃশ্যে আসাদুজ্জামান নূর ও সুর্বণা মুস্তাফা
বিটিভিতে প্রচারিত হ‌ুমায়ূন আহমেদের কোথাও কেউ নেই ধারাবাহিকের দৃশ্যে আসাদুজ্জামান নূর ও সুর্বণা মুস্তাফা

ফেরদৌসী: আশির দশক। তখন খুব রমরমা ছিল। বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মঞ্চ। তখন খুব পাগলের মতো নাটক করতাম। অসম্ভব খাটতাম আমরা। এখন তো দেখি মহড়া শব্দটাই উঠে যায় যায়।

মোশাররফ করিম: আমি এভাবে দেখি, আমি একটা অঙ্ক করে ফেলতে পারব, বিজ্ঞানের কোনো সূত্র দিয়ে কোনো সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারব। কিন্তু শিল্প তো সূত্র দিয়ে সৃষ্টি করা যায় না। এ জন্য আমি সব সময় বলি যে শিল্পীকে সৎ হতে হবে। এই ব্যাপারটা এখন কেউ বুঝতে পারছে না যে নিজেকে তৈরি করতে সময় দিতে হয়। বড় সময় দিতে হয়। এই সময়ই এখন কেউ দিতে চাচ্ছে না বলে মনে হয়।

শিবব্রত: প্রায়ই শোনা যায় এই অভিযোগ—মোশাররফ করিমদের প্রজন্মের যাঁরা, তাঁরা এখন মঞ্চে অভিনয় করেন বটে তবে মঞ্চ এঁদের মূল লক্ষ্য না। মঞ্চকে তাঁরা একটা সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেন।

ফেরদৌসী: মঞ্চে দেখে তার ডাক পড়বে টেলিভিশনে। এটা একটা পরিচয়। মঞ্চের পরিচয়।

শিবব্রত: আগে তো সুযোগও ছিল না, এক বিটিভি ছাড়া।

মোশাররফ: সুযোগই এখন কাল হয়েছে।

ফেরদৌসী: শতভাগ সত্য কথা।

শিবব্রত: এটাকে খারাপ বলবেন কি না। একজনের যদি ভিন্ন লক্ষ্যও থাকে, তাতে সমস্যা কী?

মোশাররফ: না, এটা ভালো না। আমি তো কাজ করার জন্য তৈরিই না। আমি যোগ্য না। অথচ আমি রাক্ষসের মতো ক্রেজি হয়ে গেলাম। টেলিভিশনে নাটক করতে আমাকে অমুক জায়গার একটা সার্টিফিকেট লাগবে, এই আচরণ ভালো না। আমি যা মনে করি, আরও বড় বড় লোকেরাও বলেছেন, আমার কাজকে যদি আমি ভালোবাসি, সেখান থেকে ফল আসবেই।

ফেরদৌসী: আমিও এই কথাই বলি, যে কাজ তুমি করবে, ভালোবেসে করবে। ওটা মাথায় রাখবে না যে আমার নাম হবে, ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে ছবি আসবে, আমাকে এক শটা লোক চিনবে। আমি আমাদের কথা বলি, আমাদের সময়ের কথা। আমরা তো একধরনের ব্যূহ ভেদ করে এসেছি। আমার পরিবার ছিল সাংঘাতিক রক্ষণশীল। আব্বা বলতেন, যে নাটক করবে, গান করবে, নাচ করবে, তার ভাত বন্ধ। আমার আব্বা নোয়াখালীর মানুষ। বলতেন, ‘জিগা ইতা করব, ইগার ভাত বন্দ। ইগারে যাইতে দিতাম না, ঠ্যাং ভাঙ্গি ফালামু’। এই পরিবেশে মেয়েদের অভিনয়ের তো প্রশ্নই আসে না।

শিবব্রত: পরিবারের যে দেয়াল, তা ভাঙার অনুপ্রেরণা পেলেন কোথা থেকে?

ফেরদৌসী: প্রথমত মুনীর চৌধুরী, আমার ভাই। তিনি তো নাটক লিখতেন। আমাদের এসে নাটক শোনাতেন। খুব আগ্রহ নিয়ে শুনতাম। তখন কলেজে পড়ি, একদিন মুনীর ভাই বললেন, ‘তুই একটা নাটক করবি? শওকত ওসমানের নাটক—ডাক্তার আব্দুল্লাহর কারখানা’। আমি বললাম, ‘আমি অভিনয় জানি না’। বললেন, ‘জানতে হবে না। একটা রোবটের চরিত্র। খালি ঠাস ঠাস করে হাঁটবি। আর চটচট করে কথা বলবি। পারবি না? তুই তো বাসার সবাইকে নকল করতে পারিস’। বাসার সবাইকে নকল করতে পারতাম আমি। তো, ভাইকে বললাম, আব্বা আমাকে মেরে ফেলবে। বললেন, ‘সেই দায়িত্ব আমার’। চুরি করে গেলাম। আব্বা জানলেন না। নাটক করে এলাম মঞ্চে। কিচ্ছু করিনি, ওই ঠাস ঠাস কথা আর হেঁটে চলে আসা। এরপর আমাদের থিয়েটার গ্রুপ হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় করলাম ছাত্র-শিক্ষক নাট্যগোষ্ঠী, তারপর থিয়েটার। সেখানে তখন নাট্যকার ছিলেন আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি আবার টেলিভিশনেও কাজ করতেন। আবদুল্লাহ আল-মামুনই প্রথম আব্বার সামনে গিয়ে বললেন, ‘ফেরদৌসী একটা নাটক করবে’। ‘কী কও তুমি?’ বললেন আব্বা। ‘ফেরদৌসী নাটক করবে’ মামুন বললেন আবারও। ‘ও, আচ্ছা, কও কী-কী...’।—এই যে কেউ একজন আব্বার মুখোমুখি হলেন, এটা তাঁর ভালো লেগেছিল। যারা খুব রাগী হয়, আমার মনে হয়, তাদের কিছুটা ভান থাকে। আমার আব্বা ভান করতেন। যাঁরা তাঁর মুখোমুখি হতে পারতেন, তাঁদের খুব প্রশংসা করতেন তিনি। আবদুল্লাহ আল-মামুন সেটা পেরেছিলেন।

শিবব্রত: মোশাররফ করিম, আপনারা যখন শুরু করেছেন, তখন পুরো দৃশ্য অনেকখানি বদলে গেছে। বড় হয়ে গেছে নাটকের জগৎ। অনেক আইকন তখন সামনে...।

মোশাররফ: আমার গল্পটাও ফেরদৌসী আপার খুব কাছাকাছি। সবাইকে কপি করতাম আমিও। চতুর্থ শ্রেণি অব্দি পড়েছি ঢাকার স্কুলে। আমাকে ভর্তিই করানো হয় তৃতীয় শ্রেণিতে। এর আগে বাবা আমাকে স্কুলে ভর্তি করাতে সাহস পাননি। কারণ হাঁটা শেখার পর থেকেই আমি হারাতে শুরু করেছি। একবার আমাকে গুলিস্তান সিনেমা হলের সামনে পাওয়া গেল। সবাই আমায় ঘিরে আছে এইভাবে যে একটা ছেলে হারিয়ে গেছে। ফলে শিক্ষক রেখে বাসায় পড়ানো হতো আমাকে। স্কুলে এক বছর পড়ানোর পর বাবা মনে করলেন, ছেলে তো বখে যাচ্ছে। তাই উচ্চশিক্ষার্থে গ্রামের বাড়ি পাঠানো হলো আমাকে। সেখানে পড়তে গিয়েই কপি করা শুরু। স্কুলের মাঠে একটা লোকের হাঁটা সবাইকে কপি করে দেখালাম। চুরাশি সালে আমি প্রথম মঞ্চনাটক দেখি—ক্ষতবিক্ষত, মমতাজউদ্‌দীন আহমদের। দেখে বিস্মিত হয়ে গেলাম। মঞ্চে লাল আলো জ্বলল, সবাই থেমে গেল, এই ব্যাপারটা আমাকে চমকে দিল। মনে হলো, এর মধ্যে আমাকে ঢুকতেই হবে। যেভাবে হোক। তারপর ছিয়াশিতে ওই দলে গিয়েই বললাম, ‘কাজ করতে চাই’। তাঁরা বললেন, ‘তুমি এত ছোট, পারবা না’। সে সময় আমি মাধ্যমিক শেষ করেছি মাত্র। আমি বললাম, ‘পারব’। ওঁরা বললেন, ‘তোমার রিহার্সালে আসার দরকার নেই। তুমি মিলনায়তনে লোক বসাও’। আমি লোক বসাতাম। কিন্তু লোক বসিয়ে তো আর স্বাদ পাওয়া যায় না। কিছু এলোমেলো জায়গায় কাজ করার পর যোগ দিলাম নাট্যকেন্দ্রে। আমাদের সময়েও দারুণ রমরমা ছিল থিয়েটার।

শিবব্রত: বদলে গেল কখন?

মোশাররফ: আমার মনে হয়, টিভি চ্যানেলগুলো আসার পর সবকিছু বদলে গেল। আমাদের তো অন্য কোনো স্কুলিং নেই, এই যে এতগুলো চ্যানেল, এত নাটক হচ্ছে, এর ব্যবস্থাপনার ধরনটা যদি কোনোভাবে থিয়েটারের লোকজনের মধ্য দিয়ে হতো, মনে হয়, এতে টিভি নাটকের মান ভালো হতো। কারণ, আমাদের থিয়েটার বিশ্বমানের প্রযোজনা প্রচুর করেছে। আমি এখন পেশাদার কাজটা অপেশাদারভাবে করছি। অথচ মঞ্চে আমি কিন্তু অপেশাদার কাজটাই ভীষণ পেশাদারির সঙ্গে করতাম। আমাদের মধ্যে সমন্বয়েরও তো অভাব।এই যে ফেরদৌসী আপার সঙ্গে আজ আমি এখানে বসতে পারলাম, এজন্য আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। এই সমন্বয়টাই দরকার।

ফেরদৌসী: আমিও কিন্তু নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। কারণ, এই যুগে তুমি যে নাম করেছ, আমার এত বছর লেগেছে একটুখানি আসতে।

মোশাররফ: আমরা যে সিনিয়রদের রিলে রেসের লাঠিটা নিয়ে দৌড় দেব, সেই সমন্বয়ের প্রক্রিয়াই নেই। আবুল খায়েরের মতো শক্তিমান অভিনেতার মৃত্যুদিবসে কেউ তাঁকে স্মরণ করে? সংবাদপত্রে কি তাঁর কোনো ছবি ছাপা হয়? আমার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ তৈরি করে দেওয়াই হয়নি।

শিবব্রত: থিয়েটারের থেকে এবার টেলিভিশনে আসি।

ফেরদৌসী: টেলিভিশনের প্রথম নাটক আমি করেছি—একতলা-দোতলা। মুনীর চৌধুরীর লেখা। এতে উনি (রামেন্দু মজুমদারকে দেখিয়ে) ছিলেন তথাকথিত হিরো, আর আমি হিরোইন।

শিবব্রত: কবেকার কথা?

ফেরদৌসী: চৌষট্টি সালে রিহার্সাল শুরু। পঁয়ষট্টিতে অন এয়ার। এক মাস ধরে শুটিং হয়েছিল। লাইভ হবে। রেকর্ডিং নেই। পুরোই মুখস্থ বলতে হবে। এই অবস্থা থেকে শুরু হয়েছিল।

শিবব্রত: যে সময় মঞ্চের স্বর্ণযুগ, সেটাকে তো টেলিভিশনেরও স্বর্ণযুগ বলা যায়।

ফেরদৌসী: হ্যাঁ। ওই সময় অনেক ভালো ভালো নাটক হয়েছে। মঙ্গলবারে একটা ধারাবাহিক নাটক হতো টিভিতে। ওই দিন আমরা মঞ্চে কোনো প্রদর্শনী রাখতাম না। কেননা লোক হতো না। সবাই টিভি দেখতে বসত।

শিবব্রত: এখন টেলিভিশনের বাক্স তো আরও ছড়িয়ে গেছে। বাড়ি বাড়ি ঢুকে পড়েছে। সবার বাড়িতেই টিভি। আবার একটা মাত্র সেন্টারের একচেটিয়া অবস্থাও নেই। এখন তো লোকে অজস্র চ্যানেল সার্ফ করতে থাকেন। গড়িয়ে যেতে থাকেন। বদলে গেছে দর্শকও।

মোশাররফ: আমি বলব দর্শক বদলায় না, বদলায়নি। দর্শক আজীবন গুড়ের বাতাসা খেয়ে গেছে। সে তো আর কিছু চেনে না। ছানার সন্দেশ যে পৃথিবীতে আছে, সেটাই তো সে জানে না। ছানার সন্দেশ তাকে খাওয়ানোর দায়িত্ব আমার। আগে টেলিভিশনে যাঁরা যেতেন, তাঁরা গিয়েছিলেন মঞ্চ থেকে। অভিনয়ে অভ্যস্ত ছিলেন তাঁরা। ফলে তাঁদের মধ্যে পেশাদারি মনোভাব ছিল।অভিনয় যদি ভালো হয়, গল্প যদি ভালো হয়, কারিগরি দিক যদি ঠিক থাকে, দর্শকের বদলে যাওয়া কোনো ব্যাপার না। কয়েক বছর আগে তোমার দোয়ায় ভালো আছি নামে আমি একটা নাটক করেছিলাম—ট্র্যাজেডি নাটক। দর্শক কিন্তু দেখল। ফেরদৌসী আপাকে আমি খুবই মিস করি টিভিতে।

শিবব্রত: অভিনয় ও গল্পের চাহিদা একই জায়গায় আছে, মানলাম। কিন্তু যাঁরা নাটক নির্মাণ করছেন, তাঁরা একইভাবে করছেন না। এর সঙ্গে যে ব্যবসা জড়িত, সেটা বদলে গেছে।

ফেরদৌসী: আমরা যখন টেলিভিশনে এলাম, আমাদের বলাই হলো, এখানে লাউড অভিনয় হবে না। মঞ্চে অনেক কিছু করা যায়।

শিবব্রত: টেলিভিশনের জগৎটা একজন অভিনেতার জন্য সীমাবদ্ধ তাহলে?

ফেরদৌসী: হ্যাঁ, সীমাবদ্ধ। নড়াচড়া করা যাচ্ছে না, বলা হচ্ছে, এই লাইটে আসেন, ওই লাইটে আসেন।

শিবব্রত: এখন যে আপনি টেলিভিশন দেখেন, মোশাররফ করিমদের নাটক দেখেন, কেমন লাগে?

ফেরদৌসী: হতাশ।

শিবব্রত: মোশাররফ করিমের নাটক দেখে হতাশ?

ফেরদৌসী: হা হা হা...এখানে হয়েছে কী, মূল সমস্যাটা হলো বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণা।

মোশাররফ: আপনি যে পরিবর্তনের কথা জানতে চাইছেন, একটা ব্যাপার কিন্তু ভালো, এখন দুম করে একটা নাটক হয়ে যাচ্ছে এবং একজন অভিনেতা সেই চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন। নাটকের একটা অবকাঠামোগত দিক আছে। পাণ্ডুলিপি থেকে শুরু করে নির্দেশনা, মেকআপ, শিল্পনির্দেশনা—সবই আছে। আমরা করলাম কি, শিল্পনির্দেশককে বিদায় করে দিলাম। কেন? কারণ, টাকা নেই।

শিবব্রত: ভবিষ্যতের ছবিটা কি হতাশার?

ফেরদৌসী: আমি কিন্তু আশাবাদী। আমার কুষ্ঠিতে লেখা আছে, আমি আশাবাদী। মানুষ নাটক দেখে। এখনো দেখে।আমরা নাটক করে যেতে চাই। কেউ না কেউ দেখে তো, কেউ না কেউ দেখবে। আজ না হোক, কাল অথবা পরশু দেখবে।

মোশাররফ: আমার কথা হলো, নাটকের মান যদি ঠিক থাকে, দর্শক সেটা যেভাবেই দেখুন, টেলিভিশন সেটে দেখুক আর ইউটিউবেই দেখুক, দেখবে। আমাদের দেশের লোকে আমাদের ভালোবাসে। এ দেশের সংস্কৃতি ভালোবাসে।