আউটের আঙুল তুলে আম্পায়ার চুলকালেন মাথা!

ক্রিকেটে এখন আম্পায়ারদের বড্ড ‘সুদিন’ চলছে। মাঠে কোনো বড় সিদ্ধান্ত প্রায় নিতেই হচ্ছে না। কিছু হলেই টিভি আম্পায়ারের শরণ নেওয়া যায়। আর দুই দলের হাতে ডিআরএস নামক মহা এক অস্ত্র তো আছেই! সে জন্যই এখন প্রশ্ন উঠছে, অতিরিক্ত প্রযুক্তিনির্ভরতায় আম্পায়ারিংয়ের মানটা কি ধীরে ধীরে পড়ে যাচ্ছে? না হলে পরপর দুই দিনে এমন ঘটনা ঘটে কীভাবে! 

কলম্বো টেস্টের চতুর্থ দিনের শেষ বলটার কথা খেয়াল আছে? মোসাদ্দেক হোসের বলটা রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেললেন সুরঙ্গা লাকমল। সেটা শর্ট লেগে দাঁড়ানো সাব্বির রহমানের কাছে বল যেতেই সমস্বরে চিৎকার বাংলাদেশের আবেদন! সে চিৎকারে প্রথমে ওপর-নিচ মাথা দোলালেন আম্পায়ার আলিম দার। তারপর আস্তে করে বাঁ হাতটাও আস্তে আস্তে ওঠাতে শুরু করলেন। তর্জনী বেরিয়ে আসতে শুরু করল মুঠো থেকে। তখনই দার জানালেন, নট আউট!

আঙুল তুলে আউট, পরক্ষণেই মাথা চুলকালেন গ্যাফানি। কাল রাঁচি টেস্টে। ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া
আঙুল তুলে আউট, পরক্ষণেই মাথা চুলকালেন গ্যাফানি। কাল রাঁচি টেস্টে। ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া

তখন এমনভাবে আবেদনটা প্রত্যাখ্যান করলেন, যেন এভাবে আবেদন জানানোটা অপরাধ হয়েছে বাংলাদেশের। বিভ্রান্ত বাংলাদেশ রিভিউ নিয়েও আউট করতে পারেনি লাকমলকে। স্নিকোমিটার না থাকায় টিভি আম্পায়ার কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি।
পুরো কলম্বো টেস্টেই আম্পায়ারদের পারফরম্যান্স ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। মোট ২১ বার রিভিউ নিয়েছে দুই দল। এর মাঝে ১০ বারই সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হয়েছে আম্পায়ারদের। বেশ কয়েকবারই শুধু ‘আম্পায়ারস কল’ বলেই সিদ্ধান্তগুলো পক্ষে পায়নি দুই দল। অথচ আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে আলিম দার অনেক পুরোনো মুখ। ২০০৯ থেকে টানা তিন বছর আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ার হয়েছিলেন। কলম্বো টেস্টের পর সে কথা আর কেউ মনে রাখবে বলে মনে হয় না।

আলিম দার হ্যাঁ-বোধক মাথা নাড়িয়ে আঙুল তুলতে যাচ্ছেন, পরক্ষণেই বদলালেন সিদ্ধান্ত। ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া
আলিম দার হ্যাঁ-বোধক মাথা নাড়িয়ে আঙুল তুলতে যাচ্ছেন, পরক্ষণেই বদলালেন সিদ্ধান্ত। ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া

তবে কাল আরেক কাণ্ড করেছেন ক্রিস গ্যাফানি। রাঁচি টেস্টে আম্পায়ারিংয়ের ভারটা ইয়ান গোল্ডের সঙ্গে তাঁর ঘাড়েও পড়েছে। সেই ইয়ান গোল্ড, যিনি আলিম দারের সঙ্গেই গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। তবে কাল আলোচনায় ছিলেন গ্যাফানিই। সকালে জশ হ্যাজলউডের একটা বাউন্সারে হুক করতে চেয়েছিলেন চেতেশ্বর পূজারা। সে প্রচেষ্টা দেখে হালকা মৃদুস্বরে আবেদন করেছিল হ্যাজলউড। ওটা শুনেই আঙুল তুলে দিয়েছিলেন গ্যাফানি, পরিষ্কার আউটের নির্দেশ। শেষ মুহূর্তে ভুল হচ্ছে বুঝতে পেরে মাথা চুলকানোর ভান করেন। কিন্তু কাউকে ফাঁকি দিতে পারেননি, সঙ্গী ইয়ান গোল্ডও হেসে ফেলেন ওই ঘটনায়।
গ্যাফানিকে কিন্তু বাংলাদেশের সবার মনে থাকার কথা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে ২৬টি রিভিউয়ের রেকর্ড হয়েছিল। সে টেস্টে কুমার ধর্মসেনার ওপর দিয়েই ঝড় বেশি গেলেও অপর প্রান্তে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের গ্যাফানি। সেদিনের টিভি আম্পায়ার? কাল শেষ হওয়া কলম্বো টেস্টের মাঠের অন্য আম্পায়ার সুন্দরম রবি!