ভারতের 'বাড়া ভাতে ছাই' হ্যান্ডসকম্বের

হ্যান্ডসকম্বের কাছে এভাবেই হেরে গেছে ভারতের সব প্রচেষ্টা। ছবি: এএফপি
হ্যান্ডসকম্বের কাছে এভাবেই হেরে গেছে ভারতের সব প্রচেষ্টা। ছবি: এএফপি

‘স্মিথ-ওয়ার্নার গেল তল, মার্শ-হ্যান্ডসকম্ব বলে কত জল!’
ভারত নির্ঘাত এমনটা ভেবেই দ্বিতীয় সেশনে খেলতে নেমেছিল। ১৫২ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করেছিল স্বাগতিক দল। শেষ দিনের উইকেটের সুবিধা নিয়ে ৬৩ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন জাদেজা-ইশান্ত। জয় তো দুয়ারেই, দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান শন মার্শ আর পিটার হ্যান্ডসকম্ব কতক্ষণই বা টিকবেন! সেই ‘কতক্ষণ’কে শেষ পর্যন্ত গোটা দিনই বানিয়েছেন হ্যান্ডসকম্ব। তাঁর ২০০ বলে ৭২ রানের ইনিংসেই রাঁচি টেস্ট ড্র করেছে অস্ট্রেলিয়া।
২ উইকেট হারিয়ে দিন শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ঘণ্টাটা সেভাবেই কাটিয়ে দিয়েছিল তারা। ঝামেলাটা হলো দ্বিতীয় ঘণ্টায়। প্রথমে আউট হলেন ম্যাথু রেনশ, আর একটু পরেই ক্রিকেটের নতুন শব্দ ‘ব্রেন ফেড’-এর আরও একটি উদাহরণ তৈরি করে আউট স্টিভ স্মিথ। বাঁহাতি স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজার বলটা লেগ স্টাম্পে পড়েছিল। কিন্তু সেটা দেখেও ব্যাট তুলে পা দিয়ে বল আটকানোর চেষ্টা করেছেন স্মিথ। পাটাও খুব বেশি বাড়াননি, ফলে লাইন মিস করে বোল্ড! জয়ের নেশায় তখন কাঁপছে পুরো গ্যালারি। অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটসম্যানই (৬৩/৪) ফিরে গেছেন, ভারতের জয় আর ঠেকায় কে!
কিন্তু হিসাবে একটু ভুল হয়েছিল ভারতের। উইকেটে যে রয়ে গিয়েছিলেন মার্শ-হ্যান্ডসকম্ব । দুজনে মিলে যে জুটি গড়েছেন, সেটি ইতিহাসেরই অংশ হয়ে থাকবে। উইকেটের একপাশে ধুলো উড়িয়ে টানা বল করে যাচ্ছেন জাদেজা, অন্যদিকে রবিচন্দ্রন অশ্বিনই ভয় ধরাচ্ছিলেন প্রায় প্রতি ওভারে। যখনই সুযোগ মিলেছে, উমেশ যাদব কিংবা ইশান্ত শর্মাও আগুন ঝরিয়েছেন, রিভার্স সুইং দিয়ে ফণা তুলেছেন। কিন্তু ধৈর্যের পরীক্ষায় পূর্ণ নম্বর পেয়েই পাস করেছেন হ্যান্ডসকম্ব ও মার্শ। প্রথমে মার্শই কাঁধ পেতে চাপ সয়েছেন, পরে সে দায়িত্বটা নিয়েছেন হ্যান্ডসকম্ব। প্রথমে শুধু টিকে থাকায় মন দিয়েছেন, পড়ে থিতু হয়ে পাল্টা আক্রমণও করেছেন। ৬২.১ ওভারের জুটিটা যখন থামল জাদেজার বলে, ততক্ষণে ম্যাচ প্রায় বাঁচিয়েই ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। দিনের আর মাত্র ৪০ মিনিটের খেলা বাকি থাকতে ১৯৭ বলে ৫৩ রান করে আউট হয়েছেন মার্শ।
ম্যাচ জেতার আশা তখনো ছাড়েনি ভারত। কিন্তু মাত্র ৭ টেস্টের অভিজ্ঞতাকেই পুঁজি করা হ্যান্ডসকম্ব লড়াইটা চালিয়ে গেলেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ২ রানে ফেরানোর পরও তাই ১৫ মিনিট আগেই ড্র মেনে নিয়েছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তখন ৬ উইকেটে ২০৪ রান। আর ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলে অপরাজিত হ্যান্ডসকম্ব। অসাধারণ এই ইনিংসে ছিল ৭টি চার।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন চেতেশ্বর পূজারা, কিন্তু এ ম্যাচটা মনে রাখতে হবে হ্যান্ডসকম্বের কারণেই। সূত্র: স্টার স্পোর্টস