বার্সেলোনার 'শেষ' সুযোগ

শেষ আটেই চ্যাম্পিয়নস লিগ অভিযান থামিয়ে দিয়েছে জুভেন্টাস। আর এটি শেষ হতেই জুভেন্টাসের শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করে তাদের শুভকামনাও জানিয়েছেন জেরার্ড পিকে। কিন্তু পরাজয়ের হতাশাটা এখনো মুছে যায়নি, এরই মধ্যে আবার আশার বেলুন ফোলাতে হলো বার্সেলোনা ডিফেন্ডারকে। মাত্র তিন দিন পরই যে ‘এল ক্লাসিকো’। এ মৌসুমে বার্সেলোনার শেষ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ! আগামীকালই লা লিগা-ভাগ্য লেখা হয়ে যেতে পারে রিয়াল মাদ্রিদ কিংবা বার্সেলোনার।
ফর্ম চিন্তা করলে বার্সেলোনাই পিছিয়ে থাকবে। একদিকে একের পর এক বাধা ডিঙিয়ে যাচ্ছে রিয়াল। অন্যদিকে এ মৌসুমে বার্সেলোনা যেন ‘রোলার কোস্টারে’ সওয়ার। কোনো ম্যাচে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিচ্ছে তো পরের ম্যাচেই হোঁচট খাচ্ছে। তার ওপর মৌসুমের শেষ ‘ক্লাসিকো’ হচ্ছে রিয়ালের ঘরের মাঠে। কিন্তু মাঠের নামটা উল্টো সাহস দিচ্ছে পিকেকে, ‘আমরা বার্নাব্যুতে লড়তে যাচ্ছি এবং জেতার চেষ্টা করব। গত কয়েক বছরে এ মাঠে আমরা ভালো করেছি। হয়তো সেরা ফর্মে আমরা নেই, কিন্তু জিততে পারি।’
বার্নাব্যুতে সর্বশেষ ম্যাচ সাহস দিতেই পারে বার্সেলোনাকে। ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর, বার্নাব্যুকে থমকে দিয়ে রিয়ালকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বার্সেলোনা। তবে এবার লিগে রিয়ালের চেয়ে তিন পয়েন্ট পিছিয়ে কাতালানরা। রিয়ালের সমীকরণটা সহজ করে দিচ্ছে আরেকটি তথ্য, এখনো এক ম্যাচ হাতে আছে ‘ব্লাঙ্কো’দের। তাই এ ম্যাচটা ফসকে গেলেও শিরোপা দৌড়ে বার্সার চেয়ে এগিয়ে থাকবে জিনেদিন জিদানের দল। কিন্তু হারলেই কার্যত ছিটকে পড়বে বার্সেলোনা। আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাও সেটা মেনে নিয়েছেন, ‘খুব কঠিন সময় যাচ্ছে, কিন্তু আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে, বার্নাব্যুতে জিততে হবে। মাদ্রিদ যথেষ্ট ভালো দল, তবে ক্লাসিকো সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা ম্যাচ। এটাই আমাদের শেষ সুযোগ।’
কোচ লুইস এনরিকেও চ্যাম্পিয়নস লিগ-হতাশা কাটাতে বেছে নিচ্ছেন ক্লাসিকোকেই ‘এরপর (জুভেন্টাস ম্যাচ) খেলোয়াড়দের জাগিয়ে তোলা কঠিন। কিন্তু এবার খুব সহজ হবে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে ম্যাচ, বার্সার সমর্থকদের জন্য এর চেয়ে বড় প্রেরণাদায়ী কিছু হতে পারত না। লিগের শীর্ষ দলের সঙ্গে “ছয় পয়েন্টের” এ ম্যাচ লা লিগার শিরোপাদৌড়ে ফেরার ভালো সুযোগ।’ তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে নেইমারকে না পাওয়া গেলে এনরিকের জন্য সেটি হবে বড় ধাক্কা।
সে তুলনায় জিনেদিন জিদান অনেকটাই নির্ভার। গ্যারেথ বেলকে নিয়ে সংশয় ছিল, তবে অনুশীলনে ফিরেছেন ওয়েলশ উইঙ্গার। আর বেল না থাকলেও কোনো সমস্যা নেই। ইসকো, লুকাস ভাসকেজ কিংবা মার্কো এসেনসিও তো বেলের অভাবটা বুঝতেই দিচ্ছেন না। পাঁচ বছর পর লা লিগা জয়ের পথে ভয়ংকর এক অস্ত্র তো আছেই জিদানের—ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। মৌসুমের শেষ প্রান্তে এসেই যেন নিজেকে ফিরে পাচ্ছেন রোনালদো। এই ফরোয়ার্ডের প্রশংসায় অকৃপণ জিদান, ‘রোনালদো জানে কোন উপলক্ষ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সে সেখানে থাকবেই। অমন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে যেভাবে গোল করে, অসাধারণ। তাকে কোনো শ্রেণিতে আটকাতে পারবেন না। রোনালদো যা করেছে, সেটা খুব কম খেলোয়াড়ই করতে পেরেছে।’
কালকের উপলক্ষটাও যথেষ্ট বড়, রোনালদো কি থামিয়ে দেবেন বার্সেলোনার লা লিগা শিরোপাদৌড়? রয়টার্স, এএফপি।