রেস্টুরেন্ট কর্মী থেকে সোজা আইপিএলে!

বাবা-মাকে না জানিয়েই ক্রিকেটার হয়েছেন খেজরোলিয়া। ছবি: এনডিটিভি
বাবা-মাকে না জানিয়েই ক্রিকেটার হয়েছেন খেজরোলিয়া। ছবি: এনডিটিভি

কুলবন্ত খেজরোলিয়া গোয়ার একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন। কিন্তু ক্রিকেট খেলতে চাইতেন মনে-প্রাণেই। কিন্তু সেটা করতে হলে তো রেস্টুরেন্টের চাকরি ছাড়তে হয়। সেটাই যে রুটি-রুজি। পাছে বাবা-মা নিষেধ করে, তাই তাদের না জানিয়েই দিল্লি চলে যান ক্রিকেটে নিজের ভাগ্য খুঁজে পেতে। সেখানেই ক্রিকেটার হয়ে ওঠা, এক বছরের মাথায় সোজা আইপিএলে!

খেজরোলিয়া খেলছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে। আইপিএলের যে দলটি তারকায় ঠাসা। আইপিএলে এখনো পর্যন্ত কোনো ম্যাচ তাঁর খেলা হয়তো হয়নি ঠিকই, কিন্তু গোয়ার রেস্টুরেন্টের চাকরি থেকে সোজা আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে সুযোগ করে নেওয়াটা তো রূপকথার গল্পের মতোই শোনায়। ২৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার স্বপ্ন দেখেন, স্কোয়াড থেকে একদিন মূল একাদশেও জায়গা হবে তাঁর।
গোয়াতে থাকতেই বন্ধু-বান্ধবেরা অনেকেই বলেছিল তাঁর ক্রিকেট প্রতিভার কথা। বাঁ হাতি মিডিয়াম পেসার বন্ধুদের কথাতেই প্রেরণা খুঁজেছিলেন। রেস্টুরেন্টের চাকরি দিয়ে বোলিংয়ের জন্য স্পাইক-বুট কেনা সম্ভব ছিল না। কিন্তু জিমে ভর্তি হয়ে নিজের ফিটনেস বাড়িয়ে নেওয়ার কাজটা সহজ ছিল সেই তুলনায়। সারা দিন রেস্টুরেন্টে কাজ করে বিকেল-সন্ধ্যায় জিমে গিয়ে শরীরচর্চা—পরিশ্রমের কোনো কমতি ছিল না।

বাবা-মাকে কিছুই বলেননি খেজরোলিয়া। একটা বুট কেনারও আবদার করেননি। কিন্তু ক্রিকেটার হবেন কীভাবে। চলে এলেন সোজা দিল্লিতে। বাবা-মা তখনো কিছু জানতেন না। তাঁরা ভাবতেন ছেলে হয়তো দিল্লি গেছে আরও ভালো কোনো চাকরির সন্ধানে। কিন্তু রাজধানী শহরে গিয়ে খেজরোলিয়া নাম লেখালেন বিখ্যাত এলবি শাস্ত্রী ক্লাবে, যেখানে তৈরি হয়েছেন গৌতম গম্ভীর, উন্মুক্ত চাঁদ ও নিতিশ রানাদের মতো ক্রিকেটাররা।
ভাগ্যটা সহায় ছিল খেজরোলিয়ার—পেয়ে গেলেন সঞ্জয় ভরদ্বাজের মতো একজন আন্তরিক কোচ। এমন একজন কোচ, যিনি চিনতে পেরেছিলেন খেজরোলিয়ার প্রতিভা। তিনিই তাঁকে পরিচিত করে দেন ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটের সঙ্গে। তাঁরই উৎসাহ ও উদ্দীপনায় এ বছরই বিজয় হাজারে ট্রফিতে দিল্লি দলে সুযোগ হয়েছে তাঁর। খেলেছেন ৭টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ। ৭ ম্যাচে ১৭ উইকেট তুলে নিয়ে নজর কেড়েছেন অনেকেরই। এবারের আইপিএলে ১০ লাখ টাকা ভিত্তিমূল্যে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে সুযোগ করে নেওয়াটা তাঁরই প্রমাণ।

খেজরোলিয়ার চোখে এখন স্বপ্ন। আরও বড় স্বপ্ন। এবার আইপিএলে খেলার সুযোগ হয়নি তো কী হয়েছে! ভবিষ্যতে হবে। স্বপ্ন পূরণের প্রাথমিক ধাপটা তো অতিক্রম করা গেছে। এখন স্বপ্ন দেখেন ভারতের হয়ে খেলার।
খেজরোলিয়া এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। স্বপ্ন পূরণের পথটা যে খুব ভালো করেই চেনেন তিনি। সূত্র: এনডিটিভি।