গুরুকে টপকে গেলেন মাশরাফি

গতকাল গুরুকে টপকে গেছেন মাশরাফি। ছবি: এএফপি
গতকাল গুরুকে টপকে গেছেন মাশরাফি। ছবি: এএফপি

ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিলেন মুশফিকুর রহিম। পিটার চেজের এই উইকেটে মাশরাফি বিন মুর্তজা মারলেন এক ঢিলে দুই পাখি। প্রতিপক্ষকে অলআউট করলেন, সঙ্গে টপকে গেলেন ‘গুরু’কেও। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের চেয়ে এখন বেশি উইকেট বাংলাদেশ অধিনায়কের।
নিউজিল্যান্ড ম্যাচেই ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন আরেক ক্যারিবীয় বোলিং-গ্রেট কার্টলি অ্যামব্রোসকে। কাল ২২৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচ শুরু করেছিলেন মাশরাফি। ৪৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছুঁলেন অ্যামব্রোসের দীর্ঘদিনের সঙ্গী ওয়ালশকে (২২৭)। পরের বলেই মুশফিকের সঙ্গে আরেকটি যুগলবন্দীতে ছাড়িয়ে গেলেন ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলারকে। ওয়ালশকে তিনি পেছনে ফেলেছেন আরও এক জায়গাতেও। ২২৭ উইকেট পেতে ওয়ালশের মতো বোলিং কিংবদন্তিকে খেলতে হয়েছে ২০৫ ম্যাচ। সেখানে মাশরাফির ২২৮ উইকেট এসেছে মাত্র ১৭৪ ম্যাচে। অ্যামব্রোসও ২২৫ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করার আগে খেলেছেন ১৭৬ ম্যাচ।
বারবার চোটে পড়েছেন। চোটকে পরাস্ত করেই বারবার ফিরে এসেছেন। এই চোট জর্জরিত শরীর নিয়েও মাশরাফি খেলে যাচ্ছেন। ক্যারিয়ার থেকে হারিয়ে গেছে অনেক সময়। তারপরও তিনি উইকেট শিকারে টপকে গেছেন ওয়ালশ-অ্যামব্রোসদের মতো জগৎ-সেরা বোলারদের।
তাঁর সমসাময়িক আরেক পেসার নুয়ান কুলাসেকারাও অনেক পিছিয়ে তাঁর চেয়ে। ১৮৩ ম্যাচ খেলা কুলাসেকারা এখনো উইকেটের ডাবল সেঞ্চুরি করতে পারেননি (১৯৯)। মাশরাফির চেয়ে পিছিয়ে আছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট কিংবদন্তি ইমরান খানও। প্রায় সমান ম্যাচ (১৭৫) খেলেও পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের উইকেট ১৮২টি।
১৭৪ ম্যাচ খেলে কে কত উইকেট পেয়েছেন, সে হিসাব ধরলে মাশরাফির চেয়ে পিছিয়ে আরও এক বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব। ১৭৪ ওয়ানডে খেলে তাঁর উইকেট সংখ্যা ছিল ২১১। মাশরাফির চেয়ে এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছেন তৃতীয় পেসার হিসেবে ওয়ানডেতে ৪০০ উইকেট পাওয়া চামিন্ডা ভাসও। ১৭৪ ম্যাচ শেষে ভাসের উইকেট ছিল ২১৮টি।
এসব পরিসংখ্যান মনে যতটা না আনন্দ জাগায়, এর চেয়ে বেশি হাহাকারের জন্ম দেয়। আহা, মাশরাফিকে যদি ঠিকভাবে ব্যবহার করত বাংলাদেশ! চোট যদি বারবার এভাবে আঘাত না হানত, তাহলে দেশসেরা নয়, বিশ্বসেরাদের কাতারেই হয়তো থাকতে পারত মাশরাফির নাম!