ওর্ডকে নেওয়ার যত যুক্তি

অ্যান্ড্রু ওর্ড
অ্যান্ড্রু ওর্ড

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, ৩৭ বছর বয়সী এমন অনভিজ্ঞ একজনের হাতে বাংলাদেশ জাতীয় দল তুলে দেওয়া কতটা যৌক্তিক? ওর্ডকে কী দেখে নেওয়া হয়েছে? বাফুফের সহসভাপতি ও জাতীয় দল কমিটির কো-চেয়ারম্যান তাবিথ আউয়ালের উত্তর, ‘এশিয়ায় কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তিনি। এই কোচ স্কাউটিং বেশি করেছেন। অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করেছেন স্কাউট হিসেবে।’

তবে ইন্টারনেট ঘেঁটে অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে ওর্ডের কাজ করার তথ্যটা কোথাও পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ লিগে তিনি পার্থ গ্লোরির সহকারী কোচ, জানা গেছে এটুকুই। এ বিষয়ে তাবিথের ভাষ্য, ‘গত লিগে আবাহনীতে খেলা লি টাকের এজেন্টের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি ওর্ডের কথা। সে সকারুদের বিভিন্ন প্রতিপক্ষের স্কাউটিং করত। বিষয়টা হয়তো অফিশিয়ালি ওয়েবসাইটে না দেওয়া একটা কৌশল হতে পারে।’

বলা হয়েছে, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারে ক্লাব দলে সহকারী কোচ ছিলেন ওর্ড, সেই ক্লাবের খেলার সঙ্গে নাকি বাংলাদেশের খেলার ধরনে মিল আছে। তাঁকে আনার পেছনে এটাকেও একটা কারণ বলছেন তাবিথ (তবে ইন্টারনেটে মিয়ানমারে কাজ করার তথ্য পাওয়া যায়নি)। প্রসঙ্গটা এসেছে, কারণ বাংলাদেশ ছোট ছোট পাসে খেলতে অভ্যস্ত। জাতীয় দল কমিটিও বিভিন্ন সময় এটা বলেছে। কিন্তু এই কোচ ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান, যারা লং পাসেই খেলে। সেন্টফিটও লম্বা পাসে বাংলাদেশকে খেলিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। তাহলে নতুন কোচ বাংলাদেশের বর্তমান খেলোয়াড়দের নিয়ে কতটা কী করতে পারবেন, সে প্রশ্নও আসে।

তবে এসব প্রশ্ন একপাশে রেখে তাবিথ নতুন কোচকে দরাজ সার্টিফিকেটই দিতে চান, ‘অনেক চিন্তাভাবনা করে দেখেছি, আমরা যেভাবে এগোতে চাই, তাতে বর্তমান সময়ে ওর্ডই আমাদের জন্য সেরা কোচ।’ কীভাবে, তা একটা প্রশ্ন বটে। ওর্ডের জাতীয় দলের কোচ হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা তো নেই-ই, ক্লাব দলেও প্রধান কোচ হিসেবে নয়।

এক সাংবাদিকের প্রশ্ন, একজন স্কাউট বা সহকারী কোচের হাতে বাংলাদেশ দল দেওয়ার মানে কি ফুটবল আরও নিচে নামছে? অনুমিত উত্তরের পথেই হাঁটেন তাবিথ, ‘কেউ স্কাউটিং করলে বা সহকারী কোচ থাকলে এমন নয় যে, জাতীয় দল সামলাতে পারবেন না। প্রত্যেকেরই এই পর্যায়গুলো পেরিয়ে আসতে হয়।’

ওর্ডকে আনার পক্ষে এটাই আসলে বড় যুক্তি। জুনের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় এলে তাঁর সঙ্গে নবায়নযোগ্যভাবে আপাতত এক বছরের চুক্তি। তাতে একটি ধারা থাকবে, ছয় মাসের আগে বরখাস্ত নয়। এই ধারা কেন? কিছুটা শোরগোলের মধ্যে বাফুফের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘যেকোনো কোচ অন্তত ছয় মাস আগে বরখাস্ত হতে চাইবে না, এটাই স্বাভাবিক।’ তার মানে শুরুতেই দর-কষাকষিতে জিতলেন নতুন কোচ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন শেষ করার আগে তাবিথ আউয়াল বললেন, ‘কোচকে আমরা দেখি। তারপর তাঁকে মূল্যায়ন করতে পারব।’