পারলেন না বিপ্লব

ম্যাচটা টাইব্রেকারে গড়াতে দেখে ১১৯ মিনিটে অভিজ্ঞ গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্যকে নামিয়ে দিলেন শফিকুল ইসলাম মানিক। শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের কোচের আশা ছিল বহু যুদ্ধের পরীক্ষিত নায়ক বিপ্লব হয়তো দু-একটা শট আটকে দিলেও দিতে পারেন। কিন্তু পারলেন না বিপ্লব। টাইব্রেকারে শেখ রাসেলকে ৪-২ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেছে চট্টগ্রাম আবাহনী।

বিপ্লবকে জায়গায় দাঁড় করিয়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর এলিসন, মাসুক মিয়া জনি, সোহেল রানা ও সবুজ সহজেই লক্ষ্যভেদ করলেন। কিন্তু শেখ রাসেলের দাউদা সিসে ও বিশ্বনাথ প্রথম দুটি শটে গোল করলেও বল আকাশে উড়িয়ে দেন উত্তম ও কাওসার রাব্বি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১-১ গোলে সমতা, অতিরিক্ত সময়ে আর গোল হয়নি। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে হেসেছে চট্টগ্রাম আবাহনী। তবে এটাকে অন্যায্য ফল বলা যাবে না। প্রথমার্ধে দুই দলই সমানে সমান লড়াই করেছে, কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে চট্টগ্রাম আবাহনীর প্রাধান্য ছিল চোখে পড়ার মতো।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে খেলা বলে ফুটবলারদের ঘাম ঝরেছে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। তা ছাড়া এই গরমে ১২০ মিনিট খেলার মতো শারীরিক ও মানসিক শক্তি নেই বাংলাদেশের ফুটবলারদের। সেটা ভালোই বোঝা গেছে টাইব্রেকারে শেখ রাসেলের খেলোয়াড়দের মিসগুলো দেখে।

১১ মিনিটে নয়নের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল শেখ রাসেল। তবে গোলটা ধরে রাখতে পারেনি বেশিক্ষণ। ১৪ মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ম্যাচে ফেরান উইঙ্গার জাহিদ হোসেন। জাহিদ এবার চট্টগ্রাম আবাহনীর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলছেন। কাল আক্রমণেও রেখেছেন বড় অবদান। মূল অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম দ্বিতীয়ার্ধে মাঠ ছাড়লে জাহিদের দায়িত্বটা বেড়ে যায় আরও। সেটা খুব ভালোভাবে পালনও করেন তিনি।

শেখ রাসেল দলটা এবার নবীন ও অভিজ্ঞ ফুটবলারের সমন্বয়ে গড়া। ফিটনেসও ভালো তাঁদের। বাঁ প্রাপ্ত দিয়ে কাল ডিফেন্ডার সবুজ উইং ধরে বেশ কয়েকবার উঠেছেন। সঙ্গে দাউদা। এঁরা দুজন চট্টগ্রাম আবাহনীর রক্ষণকে কিছু সময় ভালোই চাপে রাখেন। সেই চাপটা সামলাতে পারলেও ম্যাচে একমাত্র গোলটা চট্টগ্রাম আবাহনী হজম করেছে সেট-পিসে। মিশুর ফ্রি কিকে বেঞ্জামিনের হেডের পর নয়ন বল জালে জড়ান।

অন্যদিকে শেখ রাসেল যে গোলটা খেয়েছে, এই পর্যায়ের ফুটবলে তা একেবারেই বেমানান। রক্ষণের ভুল-বোঝাবুঝির সুযোগে জাহিদ একাই বল নিয়ে ঢুকে পড়েন। গোলরক্ষক জিয়া আয়েশিভাবে বলটা ধরতে যান, আর সেটাই ডেকে আনে বিপদ। শেখ রাসেলের কোচ মানিক তাঁর দলের হারের জন্য এমন বাজে গোল খাওয়াকেই দায়ী করলেন, ‘এভাবে গোল খেলে আসলে এমন ম্যাচ জেতা কঠিন।’

৩ জুন সেমিফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীর প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জ বা মুক্তিযোদ্ধা।