'...ঘণ্টা বাঁধবে কে?'

>

সদ্য সমাপ্ত সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগে দেদার পাতানো খেলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ কতটা সত্য? লিগে একটি দলের কোচ হিসেবে কাজ করে কী মনে হয়েছে স্বপন দাসের? জাতীয় দলের সাবেক ডিফেন্ডার ও ’৮৫ মোহামেডানের অধিনায়ক কথা বললেন এসব নিয়েই

*এবার সিনিয়র ডিভিশন লিগের শেষ দিনে আপনার দল ঢাকা ইউনাইটেড নাকি ফ্রেন্ডস সোশ্যাল ওয়েলফেয়ারকে ম্যাচ ছেড়ে দিয়েছে এই অভিযোগ কতটা সত্য?

স্বপন দাস: মোটেও সত্য নয়। মজার ব্যাপার দেখুন, শুধু আমাদের ম্যাচটা নিয়েই তদন্ত হচ্ছে। আগে-পিছে আর কোনো ম্যাচ নিয়ে নয়। তাই আমার প্রশ্ন, এটা কি কোনো দুরভিসন্ধি?

*দুরভিসন্ধি বলছেন কেন?

স্বপন: কারণ আছে। এর আগের একটি ম্যাচে অহেতুক আমাদের তিন খেলোয়াড়কে শাস্তি দেওয়া হলো আগের দিন। শুনে আমার মাথায় বাজ পড়ল। এই দলের সঙ্গে নামীদামি কয়েকজন সাবেক ফুটবলার ও সংগঠক কাজ করছেন, যাঁরা একটু ভিন্ন মত ও অবস্থানের মানুষ। তাই হয়তো কেউ কেউ চায়, টিমটা ধ্বংস হয়ে যাক।

*নিশ্চয়ই আপনার দলের বিরুদ্ধে কোনো ত্রুটি পাওয়া গেছে?

স্বপন: কোনো ত্রুটি নেই। বরং আমরা অবিচারের শিকার। ওয়ারী ম্যাচে রেফারি গোল দিলেন না আমাদের বিপক্ষে। খেলা বন্ধ থাকল। কিন্তু পরে ম্যাচ কমিশনার রেফারির কানে কানে কী বললেন কে জানে! ব্যস, গোল হয়ে গেল। এক গোলে হারলাম।

*কিন্তু টিভি ফুটেজ দেখে মনে হয়েছে সোশ্যাল ওয়েলফেয়ারের বিপক্ষে আপনার গোলরক্ষক পায়ের ফাঁক দিয়ে বল যেতে দিয়েছেন জালে ডিফেন্ডাররা নির্লিপ্ত ছিলেন আপনারা ২-০ গোলে হেরেছেন...

স্বপন: আমার গোলকিপার ছিল নবীন, দলের তৃতীয় গোলকিপার। প্রথম গোলটা হওয়ার পর বারের সঙ্গে আঘাত পেয়েছে। দ্বিতীয় গোলকিপারের মাসল পুল করেছে। পরে বাধ্য হয়ে ওকে নামাই। তৃতীয় গোলকিপার যতক্ষণ মাঠে ছিল, ওর বিপক্ষে দ্বিতীয় গোলটি নিয়েই যত কথা। এবং এর কোনো ভিত্তি নেই। এমন অনেক হয় বা ঢাকার মাঠে হতেও দেখা গেছে।

*ফুটেজ তো অনেক কথা বলে...

স্বপন: ওয়েলফেয়ারের সঙ্গে আমাদের ম্যাচে ওই দিন অনেকগুলো ক্যামেরা ছিল মাঠে, ব্যাপার কী? এর আগে কোনো ম্যাচে তো কমলাপুরের মাঠে ক্যামেরা দেখলাম না। তবে মাঠের এক পাশ থেকে ফুটেজ নিয়ে প্রমাণ করা যায় না, এটা পাতানো। ক্রিকেটে কতভাবে কত দিক থেকে রিপ্লে দেখা হয়! তা ছাড়া দায়িত্ব নিয়ে বলছি, এটা পাতানো ম্যাচ নয়। আমরা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ারকে হারালে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হতে পারতাম। তাই ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না।

*কিন্তু সিনিয়র ডিভিশনে দেদার পাতানো খেলার অভিযোগ নিয়ে কী বলবেন? তাহলে কি এটা সত্য নয়?

স্বপন: সত্য না মিথ্যা কোনোটাই বলব না। এটা দেখার দায়িত্ব এবং প্রমাণ করার দায়িত্ব লিগ কমিটির। কিন্তু তারা মাঠে উপস্থিত থেকে এই ব্যাপারগুলো ঠিকমতো দেখে না। আগে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে লিগ কমিটির লোকেরা খেলা দেখতেন। এখন আর দেখেন না। শুরু থেকেই নজরদারি থাকলে এসব ঘটনা হয়তো ঘটত না, ঘটলেও ধরা যেত। তাই বলব, বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?