মাশরাফির বিকল্প দেখছেন না নাজমুলও

ক্রিকেট আর ক্রিকেটারদের নিয়ে অকারণ গুঞ্জনও এখন ডালপালা মেলে অনেক দূর ছড়িয়ে যায়। তবে মাশরাফি বিন মুর্তজার ওয়ানডে অধিনায়কত্ব নিয়ে সে রকম কিছুর আর সুযোগ নেই। বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ওয়ানডে দলের অধিনায়ক পরিবর্তনের ব্যাপার নিয়ে এ মুহূর্তে বোর্ডের কোনো চিন্তা নেই। মাশরাফি যত দিন চাইবেন খেলে যাবেন।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কাল দুপুরে বিসিবির সভাপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। সাক্ষাৎ শেষে হলো সংবাদ সম্মেলন এবং সেখানেই উঠল মাশরাফির ওয়ানডে অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্নটা। উত্তরে বিসিবির সভাপতি পরিষ্কার বললেন, ‘একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি, মাশরাফি যত দিন খেলতে পারবে, তত দিন ওকে বাদ দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, সে শুধু একজন খেলোয়াড়ই নয়, অধিনায়কও। ওর মতো অধিনায়ক বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত কঠিন।’

মুশফিকুর রহিম তো টেস্ট অধিনায়ক আছেনই, ওয়ানডেতে মাশরাফির অধিনায়কত্ব নিয়েও প্রশ্ন নেই বিসিবির। কাল শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামে দুই অধিনায়ক ফ্রেমবন্দী হলেন এমন হাসিমুখেই l প্রথম আলো
মুশফিকুর রহিম তো টেস্ট অধিনায়ক আছেনই, ওয়ানডেতে মাশরাফির অধিনায়কত্ব নিয়েও প্রশ্ন নেই বিসিবির। কাল শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামে দুই অধিনায়ক ফ্রেমবন্দী হলেন এমন হাসিমুখেই l প্রথম আলো

মাশরাফির অধিনায়কত্ব নিয়ে কিছুদিন ধরে কিছু সংবাদমাধ্যমের খবরে বিসিবির সভাপতিকে একটু বিরক্ত মনে হলো। তাঁর দাবি, ‘ওয়ানডেতে মাশরাফির অধিনায়কত্ব যাওয়া কিংবা না যাওয়া নিয়ে কোনো কথাই হয়নি। কিন্তু বিষয়টি এমনভাবে প্রচারিত হয়েছে, যেন মাশরাফিকে এখনই ওয়ানডে থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে, নতুন অধিনায়ক খোঁজা হচ্ছে। অথচ এগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনাই হয়নি।’ আলোচনার কোনো প্রয়োজনও এই মুহূর্তে দেখছেন না তিনি, ‘মাশরাফি তার দায়িত্ব যেভাবে পালন করে আসছে, বাংলাদেশে তার বিকল্প পাওয়া অসম্ভব। এই মুহূর্তে এই কাজের জন্য তার বিকল্প কোনো খেলোয়াড় আমাদের কাছে নেই।’

গত শ্রীলঙ্কা সফরে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন মাশরাফি। তার আগে এ নিয়ে বিসিবিও তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেছিল। ওয়ানডেতে সে রকম কিছু হলে সেটা সবার আগে মাশরাফিই জানবেন বলেও কাল মন্তব্য করেছেন নাজমুল হাসান। তবে মাশরাফির অধিনায়কত্ব বা পারফরম্যান্স কোনোটা নিয়েই যেহেতু আপাতত কোনো প্রশ্ন নেই, তাঁকে অধিনায়কত্ব থেকে বাদ দেওয়ার কোনো কারণ দেখছেন না তিনি, ‘তার পারফরম্যান্স অনেক ভালো। সাকিব চলে গেলে কে হবে, মুশফিক না থাকলে কী হবে; এ রকম চিন্তা তো আমাদের মাথায় আছেই এবং থাকবেও। কিন্তু অভিজ্ঞদের নিয়ে ভাবছি মানে কখনোই এটা নয় যে তাদের বাদ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। বা এটাও নয় যে মাশরাফিকে অধিনায়কত্ব থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে। এগুলো ওর (মাশরাফির) জন্য অস্বস্তিকর, আমাদের জন্যও বটে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির সভাপতি নাজমুল
সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির সভাপতি নাজমুল

সামনে বাংলাদেশ দলের অনেক খেলা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে মাশরাফি না খেললেও সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বাংলাদেশ দল যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। এরপর শ্রীলঙ্কা ও ভারতের সঙ্গে একটি তিন জাতি ওয়ানডে সিরিজ হওয়ার কথা শ্রীলঙ্কায়। এ রকম একটা ব্যস্ত সময়ের আগে অধিনায়কত্ব নিয়ে এ ধরনের প্রশ্ন ওঠাই উচিত নয় বলে মনে করেন বিসিবির সভাপতি।

মাশরাফির অধিনায়কত্ব নিয়ে গুঞ্জনের অবসান ঘটানোর আগে বিসিবির সভাপতি কথা বলেছেন মাশরাফির সঙ্গেও। সূত্র জানিয়েছে, তিন-চার দিন আগে হওয়া সে সাক্ষাতে অধিনায়ক হিসেবে তাঁর ওপর আস্থা রাখার কথাই মাশরাফিকে জানিয়েছেন নাজমুল হাসান। পরামর্শ দিয়েছেন, বাইরের কথায় কান না দিয়ে খেলায় মনোযোগ দিতে। দল নিয়ে ভাবতে। তবে অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গে বিসিবির সভাপতির কালকের বক্তব্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মাশরাফি।