আটে-উনিশে অমরত্বের পর

সেই ম্যাচের পর সাম্প্রাসের সঙ্গে ফেদেরার l ফাইল ছবি
সেই ম্যাচের পর সাম্প্রাসের সঙ্গে ফেদেরার l ফাইল ছবি

১৬ বছর আগে এই অল ইংল্যান্ড ক্লাবে উইম্বলডনে আগের চারবারের চ্যাম্পিয়ন পিট সাম্প্রাসকে কোয়ার্টার ফাইনালে হারিয়ে টেনিসের বিশ্বমঞ্চে নিজের আগমনী বার্তা ঘোষণা করেছিলেন রজার ফেদেরার। দুই বছর পর উইম্বলডন জিতেই প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম। পরশু উইম্বলডনে অষ্টম শিরোপা জিতে ছাড়িয়ে গেলেন সবাইকে। ইতিহাস গড়ার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সুইস কিংবদন্তি খুলে দিলেন মনের দুয়ার

১৬ বছর আগের সেই স্মৃতি

পিটকে (সাম্প্রাস) হারানোর পর কিন্তু আমি ভাবিনি, কোনো দিন এত সফল হতে পারব। আমি ভেবেছিলাম, একদিন হয়তো আমি উইম্বলডনের ফাইনালে খেলতে পারব এবং এই টুর্নামেন্টটা জেতার সুযোগ আসবে। আটটা উইম্বলডন জিতব, এটা কখনোই ভাবিনি। এ রকম ভাবার জন্য খুবই প্রতিভাবান হতে হয়। বাবা-কোচ মিলে তিন বছর বয়স থেকেই কোনো বাচ্চাকে একটা প্রকল্পের মতো বড় করতে শুরু করতে হয়। আমার ক্ষেত্রে তা হয়নি। 

ইতিহাস গড়ার অনুভূতি

এটা অবশ্যই বিশেষ। উইম্বলডন সব সময়ই আমার পছন্দের টুর্নামেন্ট ছিল, পছন্দের টুর্নামেন্ট হয়েই থাকবে। আমার স্বপ্নের নায়কেরা এই কোর্টে হেঁটেছেন, খেলেছেন। ওদের কারণেই আমি আরেকটু ভালো খেলোয়াড় হতে পেরেছি। সবকিছু মিলিয়ে উইম্বলডনে ইতিহাস গড়তে পারা আমার জন্য বিশাল অর্জন। তবে সত্যি কথা বলতে, ইতিহাস গড়া নিয়ে ম্যাচের আগে আমি খুব একটা ভাবিনি। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এত কিছু মাথায় আসেনি। আমি শুধু আরও একবার উইম্বলডন জিততে পেরেই খুশি।

দারুণ ফর্ম নিয়ে

এই বছরটা এত দারুণ কাটছে দেখে আমি নিজেও বিস্মিত। খেলাটা তো আমার প্রায় প্রতিদিনের কাজ, এর মাঝেও অনেক কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে যেভাবে সামলেছি, নিজেরই অবাক লাগছে। আমি জানতাম, আবারও ভালো খেলতে শুরু করব। কিন্তু এত ভালো করব, এটা ভাবিনি। আমার মনে হয়, আমি যদি আগে বলতাম, এ বছর আমি দুটি গ্র্যান্ড স্লাম জিতব, আপনারাও হাসতেন। আমি বললে কেউ সেটা বিশ্বাস করত না। আমি নিজেই তো ভাবিনি, এ বছর দুটি গ্র্যান্ড স্লাম জিতব (বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনও জিতেছেন)।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

সত্যি কথা বলতে, গত বছরটা আমার যে রকম কেটেছে (কোনো ট্রফি জিততে পারেননি), এর পর থেকেই আমি সবকিছু এক বছর এক বছর ধরে ভাবতে শুরু করেছি। আমার খেলার সূচি, ফিটনেস সূচি, আমি কী কী টুর্নামেন্টে খেলব—সবকিছুই। সুতরাং আগামী বছর এই টুর্নামেন্টে খেলার কথাও এখন থেকেই ভাবছি। কিন্তু এটা যেহেতু বেশ দূরের ব্যাপার, কেউই নিশ্চয়তা দিতে পারবে না। বিশেষ করে এই ৩৫-৩৬ বছর বয়সে। কিন্তু আমার ইচ্ছে আছে আগামী বছরের উইম্বলডনে খেলার এবং শিরোপা ধরে রাখার চেষ্টা করার।

চল্লিশ বছর পর্যন্ত খেলা

(হাসি) খেলার কথা তো ভাবতেই পারি, নাকি? যদি শরীর অনুমতি দেয় আর সবকিছু ঠিক থাকে, তাহলে সমস্যা কী? আমি যদি বছরে তিন শ দিন বিশ্রাম নিতে পারি, নিজেকে ফ্রিজে ঢুকিয়ে তরতাজা রাখতে পারি, তাহলে হয়তো চল্লিশেও উইম্বলডনে খেলতে পারব। তবে উইম্বলডনে খেলা আর উইম্বলডন জেতা, দুটি এক কথা নয়। এটাও মনে রাখতে হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, না খেলে শুধু বিশ্রাম নিলেও আপনি ফিটনেসের ঝুঁকিতে পড়ে যাবেন। কারণ খেললেই আসলে বোঝা যায়, আপনার ফিটনেস কোন পর্যায়ে আছে। সে জন্য আপনাকে ন্যূনতম কিছু ম্যাচ খেলতেই হবে। দেখা যাক, আমি কতটা সামলাতে পারি এই ব্যাপারগুলো।