নিদারুণ ট্রলের শিকার উমর আকমল

এই ছবি পোস্ট করেই ট্রলের শিকার উমর আকমল। ছবি: টুইটার
এই ছবি পোস্ট করেই ট্রলের শিকার উমর আকমল। ছবি: টুইটার

উমর আকমল এমনই। মাঠের বাইরে থাকলেও তিনি খবর। সেই খবর যে তিনি ইতিবাচক কারণে হন, সেটি অবশ্য বলা যাবে না। প্রতিভা নিয়ে পাকিস্তান দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। প্রতিভার ঝলকও দেখেছে ক্রিকেট দুনিয়া। পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হওয়ার প্রায় সব গুণ ছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি।

পারফরম্যান্সকে ধারাবাহিক করতে পারেননি। সেটিও না হয় মেনে নেওয়া যায়, বিরাট কোহলি হওয়ার সৌভাগ্য অনেকেরই হয় না। তাই বলে তাঁকে ঘিরে এত নেতিবাচক খবর কেন হবে! এই তো চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তানের মূল দলে সুযোগ পেয়েও শেষ মুহূর্ত ‘মুটিয়ে যাওয়া’র কারণে বাদ পড়লেন। এর আগে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে খবরে শিরোনাম হয়েছেন, বিয়ের আসরে পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের আইন ভেঙে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বন্ধুর বিয়ের আসরে গন্ডগোল করেছেন। কী করেননি। পাকিস্তানি ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন বিরক্ত তাদের এই ‘প্রতিভাবান’ ক্রিকেটারটির প্রতি। কতটা বিরক্ত, সেটি বোঝা যায় টুইটারে যখন নিদারুণ ট্রলের শিকার হন আকমল।

নিজের টুইটারে একটি ছবি পোস্ট করেছেন আকমল, ক্রিকেটপ্রেমীরা খেপেছেন সেটি দেখেই। লন্ডনের কোনো এক জায়গায় খুব দামি একটি ‘বেন্টলি’ গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বেশ পোজ দিয়ে তোলা সেই ছবি। ক্যাপশন ছিল ‘কঠোর পরিশ্রমের পর লন্ডন শহরকে উপভোগ করা’।

ফিটনেসের সাম্প্রতিক ইতিহাস, পিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়া আর স্যুটেড-বুটেড হয়ে বেন্টলি গাড়ির সামনে পোজ দেওয়া ছবির ক্যাপশনে ‘কঠোর পরিশ্রম’ শব্দজোড়া বেখাপ্পা লেগেছে হয়তো। এ কারণে চরম বিদ্রূপের শিকার হলেন উমর।

ট্রলের সময় ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে পড়ছিল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল থেকে ফিটনেসের কারণে উমরের বাদ পড়ার ব্যাপারটি। সেই উমর যখন ‘কঠোর পরিশ্রমে’র কথা বলেছেন, তখন তাঁকে একেবারে ধুয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

নিজের পোস্ট নিয়ে যেসব ট্রল হয়েছে, সেগুলো দেখে নিজেই হয়তো লজ্জায় মুখ ঢাকছেন উমর। বেন্টলির মতো একটি দামি গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার ব্যাপারটি নিয়ে মানুষের মন্তব্য অনেকটা এমন—বেন্টলি কেনার টাকা উমর পেল কীভাবে? নাকি রাস্তায় একটি বেন্টলি দেখে সেটির সামনে দাঁড়িয়েই ছবি তুলেছেন!

কামরান আব্বাসী নামের একজন লিখেছেন, ‘লন্ডনে ক্যাবচালক হিসেবে একটা চাকরি পান কি না, সেটি নিশ্চিত করতে কঠোর পরিশ্রম করুন। আপনার ক্রিকেটীয় ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’ ক্ষোভের সঙ্গেই আব্বাসী লিখেছেন, ‘আপনি কোনোভবেই পাকিস্তান ক্রিকেট দলে জায়গা পেতে পারেন না।’

মুহম্মদ মনসুর লিখেছেন, ‘কী ধরনের কঠোর পরিশ্রম আপনি করেন? আপনি তো ১০০ রানই করতে পারেন না।’

আসিফ লিখেছেন, ‘ভাই, আপনি ছবি তোলার পেছনে যে পরিমাণ সময় দেন, তার অর্ধেক ক্রিকেটে দিলে আপনি মোটামুটি ভালো একজন ক্রিকেটার হতে পারতেন।’

উমরের ‘কঠোর পরিশ্রম’ কথাটিকে উড়িয়ে দিয়েছেন লতিফ-উর-রেহমান নামের একজন। বেশ তাচ্ছিল্যের সঙ্গেই লিখেছেন, ‘তুমি আর কঠোর পরিশ্রম??? হা হা হা হা।’

সম্প্রতি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন উমর। টানা বাজে পারফরম্যান্সের পর তাঁকে আর চুক্তির মধ্যে রাখার কোনো কারণ খুঁজে পায়নি বোর্ড। প্রসঙ্গটা টেনে নিয়ে এসে ওয়াকার আসগর রাজা লিখেছেন, ‘কেন্দ্রীয় চুক্তি হারিয়ে লন্ডন শহর উপভোগ!’ একই প্রসঙ্গে রানা উসমানের মন্তব্য, ‘ভাই, কঠোর পরিশ্রম করলে তো আপনি কেন্দ্রীয় চুক্তিতেই থাকতে পারতেন।’

মনসুর আলী খানের মন্তব্যটা পুরোপুরি যায় উমরের ক্যারিয়ারের সঙ্গে, ‘আপনি অন্য সব বিষয়ে “কঠোর পরিশ্রম” করেন, কেবল আপনার নিজের কাজ ছাড়া, মানে ক্রিকেট।’