দুবার হতাশ হতে হয়েছে জ্যামাইকানদের। একবার ১০০ মিটারের অবিসংবাদিত চ্যাম্পিয়ন উসাইন বোল্টের ‘প্রথম’ হারের দিন। আরেকবার হতাশ করেছেন এলেইন থম্পসন। অলিম্পিকের ১০০ মিটারে মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন থম্পসন ফেবারিট হয়েও সোনা জিততে ব্যর্থ। দুই হতাশার পর প্রত্যাশার একটা চাপ এসে পড়েছিল হার্ডলার ওমর ম্যাকলাউডের ওপর। এ বছর যদিও একমাত্র প্রতিযোগী হিসেবে ১৩ সেকেন্ডের নিচে টাইমিং করেছেন, সেটিও দুবার, তবু দুই সতীর্থের ব্যর্থতায় বাড়তি একটা চাপ এসে পড়েছিল। সেটিকে উড়িয়ে দিয়ে পরশু ছেলেদের ১১০ মিটার হার্ডলসে জিতলেন ২৩ বছর বয়সী জ্যামাইকান ম্যাকলাউড। লন্ডন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে দেশকে এনে দিলেন প্রথম সোনা।
‘প্রথম’ বলেই কিনা, মনে হলো এদিন জয়ের পর একটু বেশিই উচ্ছ্বসিত ছিলেন ম্যাকলাউড। দৌড় শেষ করে ছুটে গেলেন গ্যালারির সেই দিকটায়, যেখানে বসে তাঁর দৌড় দেখছিলেন আরনেলা নাইট-মরিস। কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন তাঁকে। পরে জয়টা উৎসর্গ করলেন মা এবং উসাইন বোল্টকে, ‘মা গ্যালারিতে বসে দৌড় দেখছেন, তাই আজ রাতে জিততেই হতো আমাকে। এই জয় আমার মাকে উৎসর্গ করলাম।’ এরপরই ম্যাকলাউড টেনে আনলেন বোল্টকে, ‘উসাইন বোল্ট এখনো কিংবদন্তি। এটা তোমার জন্যও। জ্যামাইকার অ্যাথলেটিকসে তাঁর যে অবদান, এমন শ্রদ্ধাটা তাঁর প্রাপ্যই।’
স্বীকার করলেন ট্র্যাকে নামার আগে চাপে থাকার কথাও, ‘আমার ওপর প্রচণ্ড চাপ ছিল, কিন্তু আমি এটিকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগিয়েছি। গত বছর রিওতে উসাইন-থম্পসন জিতেছিলেন, আমি সেটিকে (নিজেকে উদ্দীপিত করার) কাজে লাগিয়েছিলাম। এবার পরিস্থিতি ছিল পুরোপুরি ভিন্ন। তাই আমি মনেপ্রাণে নিজের আলোতে জ্বলে উঠতে চেয়েছি।’
১৩.০৪ সেকেন্ড সময় নিয়েছেন ম্যাকলাউড। আগের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন সের্গেই শুবেনকভও ছিলেন ট্র্যাকে। স্বতন্ত্র প্রতিযোগী হিসেবে চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়া রুশ শুবেনকভ রুপা জিতেছেন ১৩.১৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে। তৃতীয় হয়েছেন হাঙ্গেরির বালাস বাজি (১৩.৩১ সেকেন্ড)। ট্র্যাকে ছিলেন এই ইভেন্টে ১২.৮০ সেকেন্ডের বিশ্ব রেকর্ড যাঁর, সেই অ্যারিস মেরিটও। তবে পঞ্চম হয়েছেন আমেরিকান মেরিট। এতে অবশ্য একটু হতাশ নন মেরিট। ২০১৫ সালে কিডনি প্রতিস্থাপন করে ট্র্যাকে ফিরতে পেরেছেন, এটাই যে তাঁর কাছে বেশি, ‘অবশ্যই এটা আমার কাছে জয়ের মতো। আমার তো দৌড়ানোরই কথা ছিল না, সেখানে এখানে ফাইনালে দৌড়াতে পারাটা তো আশীর্বাদের মতো।’ এএফপি, রয়টার্স।