রহমতগঞ্জে থামল শেখ জামাল

কাদামাঠে ফুটবল তো নয় যেন কুস্তি! বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে রহমতগঞ্জের রিমন ও শেখ জামালের মোমোদুর (নীল জার্সি) মধ্যে লড়াই। কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে l প্রথম আলো
কাদামাঠে ফুটবল তো নয় যেন কুস্তি! বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে রহমতগঞ্জের রিমন ও শেখ জামালের মোমোদুর (নীল জার্সি) মধ্যে লড়াই। কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে l প্রথম আলো

আগের দিন দুপুরে ফুটবলের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে উসখুস করছিলেন আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু। দ্রুত ক্লাবে গিয়ে দলের অনুশীলন দেখতে চাইছিলেন। অনুশীলন দেখার জন্য এত উন্মুখ থাকার কারণ জিজ্ঞেস করলে সাবেক ফুটবল তারকা এবং হালে শেখ জামাল ধানমন্ডির কর্মকর্তা বললেন, ‘রহমতগঞ্জের সঙ্গে খেলা। ওই দলটা খুবই বিপজ্জনক। যেকোনো দিন যে কারও পয়েন্ট খেয়ে ফেলতে পারে। তাই ক্লাবে গিয়ে ম্যাচটার প্রস্তুতি দেখভাল করা দরকার।’

গত সন্ধ্যায় সেই চুন্নুর সঙ্গে আবার দেখা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ডাগআউটে। এবার তাঁর মুখটা শুকনো। কারণ একটু আগেই ম্যাচ ড্র করে রহমতগঞ্জ তাদের আসল চেহারাটা দেখিয়েছে শেখ জামালকে (১-১)।

প্রথম তিন ম্যাচ জিতে চতুর্থ ম্যাচে পয়েন্ট হারাল শেখ জামাল। কৃতিত্বটা অবশ্যই রহমতগঞ্জের। তবে রাজ্যের অসন্তোষ নিয়ে শেখ জামালের কোচ জোসেফ আপুসি কাদামাঠ নিয়ে ক্ষোভ জানালেন। ক্ষোভ চুন্নুর মুখেও, ‘এই মাঠে কি খেলা যায়!’ তবে চুন্নু স্বীকার করলেন তাঁদের সময়ও কাদামাঠে অনেক খেলা হয়েছে। এখন ডিজিটাল যুগে অ্যানালগ মাঠে কেন খেলা, সেই প্রশ্নই তিনি তুলেছেন।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এখন যাঁরা প্রিমিয়ার লিগের খেলা দেখতে আসেন, কাদামাঠে হা-ডু-ডু ছাড়া তাঁদের আর কিছু দেখার আসলে নেই। কারণ এ মাঠে স্বাভাবিকভাবে কোনো পাস খেলা যায় না, বল আটকে যায় কাদায়। তাই লম্বা বলে বাতাসে খেলাই এই মাঠে সবচেয়ে উপযোগী। কাজটা যারা ভালো পারে তারাই জেতে বা পয়েন্ট ছিনিয়ে নেয়।

কালকের এই ম্যাচে দুটি গোলই হয়েছে দুই মিনিটের মধ্যে। ওই সময়েই যা একটু ফুটবল-রোমাঞ্চ পাওয়া গেছে। ২১ মিনিটে রহমতগঞ্জের দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে গড়ানো শটে শেখ জামালকে এগিয়ে নেনে মামাদু। পরের মিনিটেই কর্নার থেকে পাওয়া বল আলতো টোকায় বল জালে পাঠান রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডার রিমন। এরপর দুই দলই জয়সূচক গোল পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছে। কিন্তু সফল হতে পারেনি।

ড্রতেই খুশি রহমতগঞ্জ। গতবারের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবার লিগের প্রথম চার ম্যাচে ৭ পয়েন্ট পুরান ঢাকার দলটির। তাদের এই এগিয়ে যাওয়ার রহস্য কী? কোচ কামাল বাবুই রহমতগঞ্জর টনিক। খেলোয়াড়দের নিজে পছন্দ করে দলে নেন। তাঁর ভাষায়, ‌‘ওদের যা করতে বলি ওরা সেটা করতে পারে। ৯০ মিনিট কামাল বাবুর দল দাঁড়িয়ে গেছে, সেটা যেন কেউ বলতে না পারে। এই দিকটা আমি খেয়াল রাখি।’

কাল কামাল বাবুর কৌশল ছিল শেখ জামালের দুই উইংব্যাককে অকার্যকর করে রাখা। এ জন্য দুই স্টপারের সামনে রাখেন আরেকজন অনিয়মিত স্টপার রিমনকে। তাতেই সফলতা। রিমন লিবেরো হিসেবে খেলে গোল করে দলকে এনে দিয়েছেন একটা পয়েন্ট।