ফিকার সমালোচনায় নাখোশ সিএ

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) চেয়ারম্যানকে চেনা বহুদূর, নামও জানে না ক্রিকেট-বিশ্বের অনেকে। পেশাদারি একটি বোর্ডে যেমন হওয়া উচিত, সিএর মুখপাত্র তেমনি সব সময়ই প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড। ক্রিকেট-বিশ্বে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার মুখও তিনিই। সিএর বর্তমান চেয়ারম্যান ওয়ালি এডওয়ার্ডস এমনিতেও একটু নিভৃতে থেকে কাজ করতে পছন্দ করেন। নিভৃতে থেকেই যেমন ভারত ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে মিলে বিশ্ব ক্রিকেট শাসন করার খসড়া দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন। তবে আলোচিত-সমালোচিত তিন ‘মোড়ল’-এর মধ্যে সবার আগে মুখ খুললেন এডওয়ার্ডসই। তাঁর নিজের ভাষায়, মুখ খুলতে বাধ্য হলেন!
এডওয়ার্ডসকে মুখ খুলতে ‘বাধ্য’ করেছে ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (ফিকা)। বিশ্ব ক্রিকেটে ছড়ি ঘোরানোর মতলব নিয়ে তিন দেশের প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেছে ক্রিকেটারদের বিশ্ব সংগঠন। এই সমালোচনার কাঁটায় বিদ্ধ হয়েই আর চুপ থাকতে পারেননি এডওয়ার্ডস।
বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটারদের অধিকার রক্ষায় বরাবরই সোচ্চার ফিকা। তিন দেশের প্রস্তাব নিয়ে চলমান তোলপাড়ে ফিকার ভূমিকা নিয়ে কৌতূহল ছিল অনেকের। সংগঠনটির বর্তমান চেয়ারম্যান পল মার্শ অস্ট্রেলিয়ান, আগের চেয়ারম্যানও ছিলেন অস্ট্রেলিয়ারই টিম মে। তবে চুপ থাকার নিরাপদ পথ বেছে নেয়নি ফিকা। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে পল মার্শ বলেছেন, ‘ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রস্তাব পর্যালোচনা করার পর ফিকা বোর্ড ও আমাদের সদস্যরা বিশ্ব ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন। এই প্রস্তাব খেলাটিতে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইল্যান্ডের বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ স্থায়ী করার অভিসন্ধি। খেলাটার বৈশ্বিক স্বার্থে এটি করা হয়নি। আমরা শঙ্কিত, এতে বড় তিন দেশই আরও শক্তিশালী হবে, বাকিরা আরও তলানিতে চলে যাবে। পরবর্তী বোর্ড সভায় এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে বাকি সাত দেশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে ফিকা। খেলাটার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তাদের প্রত্যাখ্যানের ওপর।’
বড় তিন দেশের একজন করে প্রতিনিধি ও বাকি সাত দেশের একজন প্রতিনিধিকে নিয়ে প্রস্তাবিত চার সদস্যের নির্বাহী কমিটি গঠনের প্রস্তাবকে মার্শ বলছেন, ‘অসাংবিধানিক।’ ফিকার এই তীব্র প্রতিক্রিয়ায় এত দিন মেনে আসা ধারার বিপরীতে হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন সিএ চেয়ারম্যান এডওয়ার্ডস, ‘প্রথাগতভাবে আইসিসি সভার কোনো সম্ভাব্য আলোচনা নিয়ে মন্তব্য করে না সিএ। সংবাদমাধ্যমে কথা বলার চেয়ে আমরা অন্য আইসিসি সদস্যদেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসে কথা বলতেই পছন্দ করি। কিন্তু আইসিসির সদস্য হিসেবে সিএ এবং অন্য দেশগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে ফিকা প্রশ্ন তোলায় আমরা ভীষণ হতাশ হয়েছি।’
চলমান সমালোচনা নিয়ে অবশ্য গৎবাঁধা ও ধোঁয়াশামাখা কথাই বলেছেন এডওয়ার্ডস, ‘চলমান বিষয়টি নিয়ে সিএর দৃষ্টিভঙ্গি হলো টেস্ট ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুণ্ন রেখেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতাগুলোকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আমাদের। ক্রিকেটের বৈশ্বিক নেতৃত্বকে উন্নত করতে হবে। সদস্যদেশগুলো খেলাটার স্বার্থ ওপরে তুলে ধরাটাকেই অগ্রাধিকার দেবে বলে আমরা আশা করি।’ ওয়েবসাইট।