কিংবদন্তির সামনে এক নতুন

নাদাল ও অ্যান্ডারসনের সেমিফাইনাল জয়ের উল্লাস। আজ ফাইনাল শেষে উল্লাস করবেন কে? l এএফপি
নাদাল ও অ্যান্ডারসনের সেমিফাইনাল জয়ের উল্লাস। আজ ফাইনাল শেষে উল্লাস করবেন কে? l এএফপি

এবারের ইউএস ওপেন বাদ দিলে কেভিন অ্যান্ডারসনের সেরা গ্র্যান্ড স্লাম সাফল্য—অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ফ্রেঞ্চ ওপেনে ও উইম্বলডনের ৪র্থ রাউন্ড এবং ইউএস ওপেনের ৩য় রাউন্ডে খেলা। পেশাদার টেনিসে প্রায় অখ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকার এই খেলোয়াড়ই হয়ে যেতে পারেন বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে দেশটির সফল তারকাদের একজন!

১৯৬৫ সালে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে ইউএস ওপেনের ফাইনালে খেলেছিলেন ক্লিফ ড্রিসডেল। আর যেকোনো গ্র্যান্ড স্লামের কথা বললে দেশটির পক্ষে ড্রিসডেল ছাড়া ফাইনাল খেলেছেন আরেকজন—কেভিন কারেন (১৯৮৪ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও ১৯৮৫ উইম্বলডন)। কিন্তু দুজনের কেউই গ্র্যান্ড স্লাম ট্রফি হাতে নিতে পারেননি। অ্যান্ডারসন পারলে দেশটির টেনিস ইতিহাসে সোনার হরফে লেখা থাকবে তাঁর নাম। পারবেন অ্যান্ডারসন?

উত্তরটা সময়ের হাতেই তোলা থাক। তবে তারকার মর্যাদাটা কী সেটি দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়াঙ্গনের কিংবদন্তিদের দেখেই বুঝে গেছেন তিনটি এটিপি শিরোপাজয়ী অ্যান্ডারসন! জন্ম জোহানেসবার্গে হলেও অ্যান্ডারসনের বসবাস ফ্লোরিডায়। যেখানে প্রতিবেশী হিসেবে থাকেন দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে চারটি মেজরজয়ী গলফার আর্নি এলস। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে রাগবি বিশ্বকাপজয়ী দলের কয়েক সদস্যেরও বসবাসসেখানে। স্পেনের পাবলো কারেনো বুস্তার বিপক্ষে তাঁর সেমিফাইনাল দেখতে গ্যালারিতে ছিলেন তাঁরই স্বদেশি দুই গলফ তারকা চার্ল শোয়ার্জেল ও লুইস ওসথুইজেন। আজ ইউএস ওপেনের ফাইনাল শেষে এসব কিংবদন্তির কাতারেই নিজেকে দেখতে চান অ্যান্ডারসন, ‘তাঁদের মতো হওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি আমি। আমি খুবই খুশি যে তাঁরা এসেছেন এবং আমার খেলা দেখেছেন।’
সেমিফাইনালে ২৮তম বাছাই কেভিনসন ৪-৬, ৭-৫, ৬-৩, ৬-৪ গেমে হারিয়েছেন দ্বাদশ বাছাই কারেনো-বুস্তাকে। তবে ফাইনালে তাঁর প্রতিপক্ষ এমন একজন, যাঁর বিপক্ষে বাজিকরেরা অ্যান্ডারসনের সম্ভাবনা দেখছেন ক্ষীণ। ১৫টি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী রাফায়েল নাদাল যে তাঁর প্রতিপক্ষ। এর আগে চারবার মুখোমুখি হয়ে নাদালের কাছে চারবারই হেরেছেন অ্যান্ডারসন।

দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন নাদাল। এ বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে খেলেছেন। জিতেছেন ফ্রেঞ্চ ওপেন। উইম্বলডনের চতুর্থ রাউন্ডে বিদায় নিলেও ইউএস ওপেনে আবার স্বরূপে। নাদালও মানছেন, ‘আমার জন্য এটি আবেগের বছর। আবার ফাইনালে উঠেছি। আরও একটি ট্রফির জন্য লড়াইয়ের সুযোগ পাওয়াটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ সেমিতে নাদাল ৪–৬, ৬–০, ৬–৩, ৬–২ গেমে হারিয়েছেন হুয়ান মার্টিন দেল পোত্রকে।

নাদাল যে আজ সুযোগটা কাজে লাগাতে চাইছেন, সেটি সহজেই অনুমেয়। র‍্যাঙ্কিং, অভিজ্ঞতা, ফর্ম—সব মিলিয়ে আজকের ফাইনালে নাদালই ফেবারিট। নাদালের বিপক্ষে জিততে হলে নিজের শক্তিশালী সার্ভকে কাজে লাগাতে হবে অ্যান্ডারসনকে। আর ‘হারানোর কিছু নেই’—উজ্জীবনী মন্ত্র তো অ্যান্ডারসনের জন্য থাকছেই। এএফপি।