ওয়ার্ন হঠাৎই করে ফেলছিলেন সেই বলটা

সদ্যই ৪৮-এ পড়লেন ওয়ার্ন। ছবি: রয়টার্স
সদ্যই ৪৮-এ পড়লেন ওয়ার্ন। ছবি: রয়টার্স

১৯৯৩ অ্যাশেজ সিরিজের ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্ট। মার্ক টেলরের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের সংগ্রহ ২৮৯ রান। ইংল্যান্ডের জবাব হচ্ছিল বেশ ভালোই। কিন্তু ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে মার্ভ হিউজের বলে আউট হয়ে ফিরলেন মাইক আথারটন। স্পিনিং উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টায় ছিলেন সে সময়কার অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মাইক গ্যাটিং। অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডার দ্বারস্থ হলেন তাঁর নতুন লেগ স্পিনারের।
তিন পা দৌড়ে বল করলেন, কিন্তু বল পড়ল লেগ স্টাম্পের বেশ খানিকটা বাইরে। ধ্রুপদি ওপেনারের মানসিকতায় গ্যাটিং বলের লাইনে গিয়ে ব্যাট রাখলেন প্যাডের পাশে। যুক্তিটাও সহজ; বল যদি প্যাডেও লাগে, লেগ বিফোরের সুযোগ নেই। কিন্তু ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত করল অফ-স্টাম্পে। হতভম্ব গ্যাটিং, এমনকি অস্ট্রেলিয়ানরাও। তার আগে মাত্র ১১টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে ওয়ার্ন এটা কী করলেন। আশ্চর্য সেই ডেলিভারিটির নামই হয়ে গেল ‘শতাব্দীর সেরা বল’। এরপর ১৪৫ টেস্ট খেলেছেন। নিয়েছেন ৭০৮ উইকেট। ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সেরা লেগ স্পিনারের খ্যাতিও জুটেছে তাঁর। কিন্তু ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের সেই ‘আশ্চর্য বল’ আর কয়টি করতে পেরেছেন ওয়ার্ন।
খুব বেশি পারেননি। তাঁর কাছেই ব্যাপারটি ছিল ‘অপ্রত্যাশিত’ এক অভিজ্ঞতা। কোনো কিছু ভেবে নাকি গ্যাটিংকে সে বলটি তিনি করেননি। কীভাবে যেন করে ফেলেছিলেন সে বলটা।

বল অব দ্য সেঞ্চুরি। ছবি: এনডিটিভি
বল অব দ্য সেঞ্চুরি। ছবি: এনডিটিভি

গতকালই ৪৮তম জন্মদিন উদ্‌যাপন করলেন ওয়ার্ন। ‘শতাব্দীর সেরা’ বলের ২৪ বছর পর তিনি জানালেন সে বলের ‘পেছনের রহস্য’, ‘শতাব্দীর সেরা বলটা আসলেই ফ্লুক ছিল। আমি আর কখনোই এটা ম্যাচের প্রথম ডেলিভারিতে করতে পারিনি।’
কোনো কিছু ভেবে সে বলটি না করলেও সব সময়ই নিখুঁত লেগব্রেকই লক্ষ্য থাকত তাঁর, ‘লেগ-স্পিনার হিসেবে আপনি সব সময়ই নিখুঁত লেগ-ব্রেক করতে চাইবেন। ইংল্যান্ডে এটা করতে পারাটা বিশেষ ব্যাপার। তাও মাইক গ্যাটিংয়ের বিপক্ষে। সে ছিল স্পিনে ইংল্যান্ডের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন।’
ওই বলটা তাঁর ক্যারিয়ার বদলে দিয়েছে বলেই স্বীকার করছেন ওয়ার্ন। সে ম্যাচে ১৩৭ রানে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন। টেস্টের পাশাপাশি ১৯৪ ওয়ানডেতে ২৯৩ উইকেট নিয়েছেন। অবসর নেওয়ার সময় ছিলেন টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। পরে অবশ্য সেই রেকর্ড ভেঙেছেন মুত্তিয়া মুরালিধরন। সূত্র: আইসিসি