একদিনের ম্যাচেও সেই বাংলাদেশ

প্রবাসী বাংলাদেশিদের এমন সমর্থনও কাজে আসেনি আজ। ছবি: প্রথম আলো
প্রবাসী বাংলাদেশিদের এমন সমর্থনও কাজে আসেনি আজ। ছবি: প্রথম আলো

টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের বোলারদের পাত্তাই দেননি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। আজ ব্লুমফন্টেইনে ওয়ানডে সিরিজের আগের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচেও অনেকটা একই চিত্র। দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশের বিপক্ষে বাংলাদেশের বোলাররা বলার মতো কোনো সাফল্য পাননি। ম্যাচটা ৬ উইকেটে হেরে মাশরাফিরা বুঝলেন, ওয়ানডেতেও কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে।

লক্ষ্যটা যদিও খুব একটা কঠিন ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার। ম্যাচের আগে কিউরেটরের দাবি, এই উইকেটে ৪০০ রান তোলাও সম্ভব। সেখানে বাংলাদেশের দেওয়া ২৫৬ রান আর এমন কী কঠিন লক্ষ্য! এইডেন মার্করাম-ম্যাথু ব্রিৎজকের ওপেনিং জুটিই ২৫.৩ ওভারে তুলে ফেলে ১৪৭ রান। টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশকে ভোগানো প্রোটিয়া ওপেনার মার্করাম নাসির হোসেনের ফিরতি ক্যাচ হওয়ার আগে করেছেন ৮২ রান। খানিক পরে মাশরাফি বিন মুর্তজার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ব্রিৎজকের রান ৭১। জেপি ডুমিনি-এবি ডি ভিলিয়ার্সে তৃতীয় উইকেট জুটি (৬২) যেভাবে এগোচ্ছিল মনে হচ্ছিল, তাতে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ ৮ উইকেটে হারবে। কিন্তু ১৬ রানের মধ্যে মাহমুদউল্লাহর বলে ডুমিনি (৩৪) ও ডি ভিলিয়ার্স (৪৩) আউট হওয়ায় সেটি হয়নি। বোলারদের প্রাপ্তি এতটুকুই, ম্যাচটা জিততে দক্ষিণ আফ্রিকাকে খেলতে হয়েছে ৪৬.৩ ওভার।
বাংলাদেশের বোলিং যেমনই হোক, এই ম্যাচে মুশফিকুর রহিমের মতো ভুল করেননি মাশরাফি। টস জিতেই ব্যাটসম্যানদের নামিয়ে দিয়েছেন রান তোলার কাজে। সেই কাজটা ঠিকভাবে কি করতে পেরেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা? ১১ বল বাকি থাকতেই ২৫৫ রানে অল আউট হয়েছে বাংলাদেশ।
ছন্দ হারিয়ে ফেলা সৌম্য সরকার নিষ্প্রভ আজও। উইকেটে তাঁর সময়টা কেটেছে অস্বস্তিতে, করেছেন ১৩ বলে ৩ রান। তবু উদ্বোধনী জুটিতে যে ৩১ রান এল, সেটা ইমরুল কায়েসের সৌজন্যে। ৬ বাউন্ডারিতে ৩১ বলে ২৭ রান করেছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। অষ্টম ওভারে রবি ফ্রাইলিঙ্কের টানা দুই বলে আউট হয়েছেন দুই ওপেনার।
তিন ও চারে নামা লিটন দাস ও মুশফিকও ব্যর্থ। সতর্ক ব্যাটিংয়ে এগিয়েও লিটন বেশি দূর এগোতে পারেননি, ফিরেছেন ৮ রানে। আক্রমণাত্মক ঢঙে ব্যাটিং করা মুশফিক (২২) বিদায় নিয়েছেন লিটন আউট হওয়ার ২ রানের মধ্যে। ৬৩ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ তখন আরেকটি দুঃস্বপ্নের অপেক্ষায়।
এ যাত্রা উদ্ধার করেন সাকিব আল হাসান। প্রথমে মাহমুদউল্লাহকে (২১) নিয়ে ৫৭ রানের জুটিতে বিপর্যয় ঠেকিয়েছেন। পরে সাব্বির রহমানকে নিয়ে ৬৯ বলে ৭৬ রানের জুটি গড়ে বড় স্কোরের আশা দেখিয়েছেন। কিন্তু অ্যারন ফাঙ্গিসোর বলে সাকিব আউট হতেই বড় স্কোরের স্বপ্ন শেষ বাংলাদেশের। ৬৭ বলে ৯ চারে ৬৮ রান করা সাকিব ফেরার পরও জুটি গড়ার চেষ্টা করেছেন সাব্বির ও নাসির। কিন্তু ফিফটি করার পরই আউট হয়ে গেছেন সাব্বির (৫২)। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও মাশরাফির দুটি ছোট ইনিংসেই আড়াই শ পেরিয়েছে বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ের পর বোলিংটাও প্রত্যাশামতো ভালো হয়নি। প্রস্তুতি ম্যাচের জয়-পরাজয় যদিও গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু নিজেদের যে ঝালিয়ে নেওয়ার কাজ, সেটি কি ঠিকঠাক হলো বাংলাদেশের?