এবারের বিপিএল তবে পেসারদের?

কিপটে বোলিংয়ের পাশাপাশি উইকেটও পাচ্ছেন অধিনায়ক মাশরাফি। ছবি: প্রথম আলো
কিপটে বোলিংয়ের পাশাপাশি উইকেটও পাচ্ছেন অধিনায়ক মাশরাফি। ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের উইকেট কেমন? প্রশ্নটা ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়া দলকে করুন, উত্তর মিলবে স্পিন-বান্ধব। স্পিন বিষে নীল হয়েই তো বাংলাদেশে টেস্ট হেরেছে এ দুই দল। এতে বিস্ময়ের কিছু নেই, প্রথাগতভাবেই তো উপমহাদেশের ত্রাস ছড়ান স্পিনাররা। কিন্তু এবারের বিপিএলে হচ্ছে অন্য কিছু। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সিলেট পর্ব ছিল পুরোপুরিভাবে পেসারদের।

উদ্বোধনী ম্যাচই দিয়েছিল ইঙ্গিত। নাসির হোসেন সেদিন দুর্দান্ত বল করেছিলেন। টপ অর্ডারের দুজনকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অফ স্পিনে। তবু স্পিনারদের মাত্র ৮ ওভার বল করাতেই বোঝা গিয়েছিল, এ উইকেট স্পিনারদের নয়। তবে সিলেট সিক্সারসের পথে হাঁটেনি ঢাকা ডায়নামাইটস। পেস নয়, স্পিনেই ভরসা রেখেছে। পরাজিত দলের নামটাও ছিল ঢাকা।
বিপিএলে এখন পর্যন্ত আর দুই ইনিংসেই স্পিনাররা পেসারদের চেয়ে বল হাতে নিয়েছেন বেশি। সে দুটি দল হলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও চিটাগং ভাইকিংস। দুই দলই সে ম্যাচগুলোতে হেরেছে, এ তথ্যও বলে দিচ্ছে এবারের বিপিএলে স্পিনারদের অসহায়ত্ব।

ম্যাচ জেতানো স্পেল কিংবা কিপটে বোলিং—দুই ক্ষেত্রেই এগিয়ে সাইফউদ্দিন। ছবি: প্রথম আলো
ম্যাচ জেতানো স্পেল কিংবা কিপটে বোলিং—দুই ক্ষেত্রেই এগিয়ে সাইফউদ্দিন। ছবি: প্রথম আলো

নভেম্বর শুরু হতেই শীতের আগমনী ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। শিশির ভেজা মাঠ ও উইকেটে স্পিনারদের কাছে বল তুলে দেওয়া এমনিতেও কঠিন। সিলেটে রাতের ম্যাচগুলোতে তাই স্পিনারদের কাছে বল দেওয়া হয়েছে খুব কম। ৪ ম্যাচে ৪৮.১ ওভার বল করেছেন স্পিনাররা। আর পেসাররা সে দায়িত্ব বহন করেছেন ১০৬.৫ ওভার। সাফল্যেও তাই এগিয়ে দ্রুত গতির বোলাররা। পেসারদের ৩৩ উইকেটের পাশে ১৩ উইকেট নিয়ে অনেক পিছিয়ে বল ঘোরানোর দায়িত্বে থাকা বোলাররা।
রান আটকানোর দায়িত্বে অবশ্য এগিয়ে আছেন স্পিনাররাই। রাতের ম্যাচগুলোতে ওভারপ্রতি ৮.১২ রান দিয়েছেন স্পিনাররা। ২০ উইকেটে এগিয়ে থাকলেও রান দেওয়ায় পিছিয়ে পেস বোলাররা। ওভারপ্রতি ৮.৩২ রান খরচ হয়েছে পেসারদের।
কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার, দিনের ম্যাচে শিশির কোনো প্রভাব না রাখলেও এ ক্ষেত্রেও এগিয়ে পেসাররা। ৪ ম্যাচে স্পিন বোলিং দেখা গেছে ৭০ ওভার। এতে ওভারপ্রতি ৭.৪৬ রান দিয়ে মাত্র ১০ উইকেট স্পিনারদের। উল্টো দিকে ৮৪ ওভার বল করতে হয়েছে দ্রুতগতির বোলারদের। ওভারপ্রতি রানটা একটু বেশি দিলেও (৭.৫১), উইকেট তুলে নেওয়ায় যোজন যোজন এগিয়ে পেসাররা (২৭ উইকেট)।
অর্থাৎ ৮ ম্যাচে যেখানে পেসাররা ৬০ উইকেট পেয়েছেন, সেখানে মাত্র ২৩ উইকেট পেয়েছেন স্পিনাররা। বাংলাদেশের যেকোনো মাঠে, যেকোনো উইকেটেই এমন কিছুর কথা ভাবা যায়নি কখনো। শীত মৌসুমও আরেকটু জেঁকে বসবে কদিনের মধ্যে। খেলার সময়টা এগিয়ে আনলেও রাতের খেলায় শিশির ভালোভাবেই প্রভাব ফেলার কথা।
সুখবরটা হলো, পেসারদের অর্ধেক উইকেটই বাংলাদেশি বোলারদের। তবে কি এবারের বিপিএলটা পেসারদেরই হতে যাচ্ছে?