ব্যাটসম্যান নয়, ব্যর্থ মিরপুরের উইকেটই

চার-ছক্কা দেখতে এসে উল্টো বোলারদের উল্লাস দেখতে হচ্ছে দর্শকদের। ছবি: প্রথম আলো
চার-ছক্কা দেখতে এসে উল্টো বোলারদের উল্লাস দেখতে হচ্ছে দর্শকদের। ছবি: প্রথম আলো

যেকোনো সিরিজ কিংবা টুর্নামেন্টে উইকেট নিয়ে আলোচনা থাকেই। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়েও থাকে। কিন্তু এবার যতটা নেতিবাচক আলোচনা হচ্ছে মিরপুরের উইকেট ও কিউরেটর গামিনি ডি সিলভাকে নিয়ে, আগে কখনো হয়েছে?

কদিন আগে উইকেট নিয়ে যখন দেশের তারকা খেলোয়াড়েরা কঠোর সমালোচনা করলেন, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক কিউরেটরকে বাঁচাতে প্রশ্ন তুললেন খেলোয়াড়দের স্কিল নিয়েই! কাল টি-টোয়েন্টির অন্যতম বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে জিজ্ঞেস করা হলো, ক্রিস গেইল এবং তাঁর ব্যাটে প্রত্যাশিত ঝড় দেখা যাচ্ছে না কেন? উত্তরে কিউই তারকা ঘুরেফিরে যা বললেন, সেটির সারমর্ম, ‘ভালো উইকেট দেন, প্রচুর রান দেখতে পাবেন!’

বিপিএলে তিন ভেন্যু

 

ম্যাচ

ইনিংস

ম্যাচে গড়ে রান  

ইনিংস প্রতি রান

চট্টগ্রাম

১০

২০

৩২৯.৭

১৬৪.৮৫

সিলেট

১৬

৩০৯

১৫৪.৫

ঢাকা  

২২

৪৪

২৮২.৬৩

১৪১.৩১

এবার কি ইসমাইল হায়দার ম্যাককালাম-গেইলদের স্কিল নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন? ব্যাটসম্যানদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার আসলে সুযোগ নেই; পরিসংখ্যান অন্তত তুলতে দিচ্ছে না। শেষ চারের আগে এই বিপিএলে যে ৪২টি ম্যাচ হয়েছে, এর মধ্যে দুটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত। বাকি ৪০ ম্যাচের ৮০ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রানবন্যা দেখা গেছে চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। সবচেয়ে কম মিরপুরে।

চট্টগ্রামের ইনিংস গড়ে রান হয়েছে ১৬৪.৮৫, সিলেটে সেটি ১৫৪.৫। আর মিরপুরে ইনিংস গড়ে রান উঠেছে ১৪১.৩১। এবার বিপিএলের সর্বনিম্ন স্কোরটাও হয়েছে ঢাকায়। ৩ ডিসেম্বর সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে ৬৭ রানে অলআউট হয়েছে চিটাগং ভাইকিংস। এই বিপিএল ছাড়িয়ে দৃষ্টিটা যদি টুর্নামেন্টের ইতিহাসে ফেরান, সর্বনিম্ন স্কোরের ১০টিই দেখা যাবে মিরপুরে। সর্বোচ্চ পাঁচ স্কোরের মাত্র একটি মিরপুরে, বাকি চারটি চট্টগ্রামে। টি-টোয়েন্টির দাবি মেনে ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ের ছাড়পত্র দিতে মিরপুরের উইকেট বরাবরই ব্যর্থ!

চার-ছক্কাতেও পিছিয়ে মিরপুর। এবার বিপিএলে চট্টগ্রামে ম্যাচপ্রতি যেখানে ২৮টি চার দেখা গেছে, মিরপুরে ব্যাটসম্যানরা বাউন্ডারি মারতে পেরেছেন ২১টি। চট্টগ্রামে ম্যাচপ্রতি ছক্কা ১২টি, মিরপুর সেটি ১১। চট্টগ্রামের উইকেট এতটাই রানপ্রসবা, ২৭ নভেম্বর চিটাগং-ঢাকার ম্যাচে চার-ছক্কা দুটিই হয়েছে সমানতালে—২৪টি!

গত জানুয়ারিতে সংস্কারকাজ শুরুর পর প্রায় ৯ মাস খেলা হয়নি মিরপুরে। আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটা টেস্টের পর প্রায় দুই মাসের বিরতি। বিপিএলে প্রতি দুই ম্যাচে একদিনের বিরতি। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরার আগে ১০ দিনের বিরতি। এত এত বিরতি, সর্বোচ্চ জনবল আর সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পরও একজন কিউরেটর কিনা ধারাবাহিকভাবে টি-টোয়েন্টিতে উপহার দিচ্ছেন ১৪০ রানের উইকেট! টুর্নামেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও শেষ চার ম্যাচ কিনা হবে এ উইকেটেই!

 

ম্যাচ প্রতি চার 

ইনিংস প্রতি চার

ম্যাচ প্রতি ছক্কা

ইনিংস প্রতি ছক্কা

চট্টগ্রাম

   ২৮.৪

১৪.২  

   ১২.৫

৬.২৫

সিলেট

   ২২.১২

১১.০৬

   ১১.৮৭ 

৫.৯৩ 

ঢাকা

   ২১.৪৫

১০.৭২

   ১১.২৭

৫.৬