যে কারণে মুশফিককে সরিয়ে সাকিব অধিনায়ক

২০১১ সালের পর অধিনায়কত্ব ফিরে পেলেন সাকিব আল হাসান।
২০১১ সালের পর অধিনায়কত্ব ফিরে পেলেন সাকিব আল হাসান।

দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস-রংপুর রাইডার্সের ম্যাচ ছাপিয়ে আজ সংবাদমাধ্যমের আগ্রহ ছিল বোর্ড সভার প্রতি। জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগেই বাংলাদেশ দলে নতুন কোচ যোগ দেবেন, নাকি দল বর্তমান কোচিং স্টাফেই চালিয়ে নেবে—বিষয়টি নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত হতে পারে, এমনটা আগেই জানা ছিল।

প্রায় দুই ঘণ্টার সভা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি নাজমুল হাসান একে একে অনুমিত বিষয়গুলো বলে যাচ্ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের প্রায় শেষ দিকে বিসিবি সভাপতি চমকপ্রদ তথ্যটা দিলেন বেশ নাটকীয় ভঙ্গিতে, ‘সবশেষে একটা বিষয় ছিল। আমার মনে হয় এটাই আপনাদের কাছে মূল ইস্যু হয়ে যাবে। যদিও আমরা এটা সেভাবে দেখি না। আমরা টেস্ট অধিনায়ক বদলাচ্ছি। আগামী যে সিরিজ শুরু হতে যাচ্ছে, সেটি থেকে আমাদের টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সহ–অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অন্য সংস্করণে যা ছিল তাই থাকবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই গুঞ্জনটা উঠেছিল, টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে মুশফিকুর রহিমের বিকল্প খুঁজছে বিসিবি। কিন্তু চন্ডিকা হাথুরুসিংহের আকস্মিক পদত্যাগের ঘটনায় মুশফিকের টেস্ট অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গটা প্রায় আড়ালেই চলে গিয়েছিল। সেটিই আবার ‘জীবন্ত’ হলো রীতিমতো চমকে দিয়ে!
অধিনায়ক হিসেবে মুশফিকের সিদ্ধান্ত কিংবা সংবাদ সম্মেলনে ব্যর্থতার দায় টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর চাপানো বা ড্রেসিংরুমের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে বলে দেওয়া যে পছন্দ হয়নি, সেটি একাধিকবার জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ চলার সময়ই নাজমুল বলেছিলেন, ‘মুশফিক যেভাবে কথা বলেছে, দেশের ভাবমূর্তি তাতে নষ্ট হয়েছে।’
কোচ হাথুরুসিংহের সঙ্গে মুশফিকের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, সেটিও গোপন কিছু নয়। যত কারণই থাক, নাজমুল যুক্তি দিলেন, ব্যাটিংয়ে যাতে মুশফিক আরও মনোযোগ বাড়াতে পারেন, অধিনায়কত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া সে কারণেই, ‘একেবারে নির্দিষ্ট কারণ আছে সেটা নয়। থাকলেও সব সময় বলা যাবে না। আমরা মনে করেছি, এখানে একটা পরিবর্তন করা দরকার । আমরা মুশফিকের কাছ থেকে সেরা ব্যাটিংটা চাচ্ছি। আমরা মনে করছি সে ব্যাটিংয়ে আরও মনোযোগ দিক। তাকে চাপমুক্ত করতে চাচ্ছি। আমরা যে পরিকল্পনা করেছি আগামী চার-পাঁচ বছরের জন্য, এটি তারই একটা অংশ।’
গত এপ্রিল টি-টোয়েন্টিতে সাকিব বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব পেলে প্রথমবারের মতো তিন অধিনায়কের যুগে পা রাখে বাংলাদেশ। তবে কয়েক মাসের ব্যবধানে আবারও দুই অধিনায়কে ফিরে যাচ্ছে বিসিবি। বিসিবি সভাপতি ইঙ্গিত দিলেন, ভবিষ্যতে হয়তো এক অধিনায়কের কাঁধেই থাকতে পারে তিন সংস্করণে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব। সে ক্ষেত্রে সাকিবই হতে পারেন তিন সংস্করণের অধিনায়ক।
সাকিব-মুশফিকের অধিনায়কত্ব পর্ব যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। ২০০৯ সালে মাশরাফি বিন মুর্তজার চোটে হঠাৎই টেস্টে নেতৃত্ব পেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু একটা পর্যায়ে বোর্ড ভীষণ অসন্তুষ্ট ছিল তাঁর ওপর। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে নেতৃত্ব থেকে সাকিবকে সরিয়ে অধিনায়ক করা হয় মুশফিককে। ৬ বছর পর একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি। শুধু নামে বদল, এই যা!

অারও পড়ুন :-