'চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের সেমিতে ওঠা ঠিক হয়নি!'

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা বৃষ্টি ভাগ্যে কাটিয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। ফাইল ছবি
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা বৃষ্টি ভাগ্যে কাটিয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। ফাইল ছবি

ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ ও টনি লুইস—যুগলকে চিনতে পারছেন? না পারলে আরেকটা শব্দ উচ্চারণ করা যাক ডাকওয়ার্থ-লুইস! ক্রিকেট দেখেন আর বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে এ নাম দুটো শোনেননি—এমন দর্শক খুঁজে পাওয়া কঠিন। বৃষ্টি আইনের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য এবং প্রায় দুর্বোধ্য আইনটি এ দুই ভদ্রলোকের সুবাদে প্রাপ্ত। তো, নতুন করে কী করলেন এ দুজন! তেমন কিছু নয়, শুধু বলছেন আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ী ঘোষণা করা উচিত ছিল!

কোন ম্যাচ নিয়ে কথা হচ্ছে, মনে করিয়ে দেওয়া যাক। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ১৮২ রানে থেমে গিয়েছিল বাংলাদেশ। জবাবে ১৬ ওভারে ১ উইকেটে ৮৩ রান করে ফেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর বৃষ্টি নামায় খেলা থামিয়ে দিতে হয়। এ বৃষ্টি–বিরতি আর শেষ হয়নি। ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয় সেদিন। নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে উঠে যায়।

ক্রিকইনফোর এক কলামে ডাকওয়ার্থ ও লুইস বলছেন, সেদিন কাগজে–কলমে জয়ী হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সে ক্ষেত্রে সেমিফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ নয়, অস্ট্রেলিয়ার ওঠার কথা। ক্রিকেট যাঁরা অনুসরণ করেন, তাঁদের কাছে ব্যাপারটি অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কারণ, ওয়ানডে ক্রিকেটের ক্ষেত্রে কোনো ফল পেতে হলে দুই দলকে কমপক্ষে ২০ ওভার ব্যাট করতে হবে। অস্ট্রেলিয়া তো ব্যাট করেছেই ১৬ ওভার। ডাকওয়ার্থ ও লুইসের দাবি, সেদিন প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ীই অস্ট্রেলিয়াকে জয়ী ঘোষণা করা যেত।

সেদিন রাত আটটার সময় খেলা থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবং বলা হয়েছিল, রাত সাড়ে আটটায় খেলা শুরু হবে। ফলে ৭ ওভার কেটে রাখা হবে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস থেকে। এতে ৪৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার নতুন লক্ষ্য হতো ১৬৬। কিন্তু সাড়ে আটটায় আবার বৃষ্টি নামায় খেলা শুরু করা যায়নি। ফলে বৃষ্টির জন্য যখন এক ওভার করে খেলা কমে আসছিল, অস্ট্রেলিয়ার জন্য লক্ষ্যটাও সেভাবে কমে আসছিল ধীরে ধীরে। অর্থাৎ সেদিন নির্ধারিত কাট অফ সময় ৯টা ৫৯ মিনিটের আগে খেলা শুরু হলে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্যটা কমে আসত অনেক। কিন্তু খেলা কাট অফের আগে শুরু করা সম্ভব না হওয়ায় ম্যাচ বাতিল করেছেন দুই আম্পায়ার।

কিন্তু ডাকওয়ার্থ ও লুইস বলছেন, বৃষ্টির জন্য লক্ষ্য পরিবর্তিত হচ্ছিল প্রতি ওভারে। ম্যাচটা যদি ৩০ ওভারে নেমে আসত, তখন অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য দাঁড়াত ১২০–এ। সেটা ২২ ওভারে নেমে আসলে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য হতো ৭৯। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যে সে লক্ষ্য পার করে ফেলেছিল। এবং ম্যাচটা ২২ ওভারে নেমে আসার যে সময় সেটা কাট অফের আগেই ছিল। অর্থাৎ রাত ৯টা ৫১ মিনিটের সময় দুই আম্পায়ার যদি বৃষ্টির খোঁজ না নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পরিবর্তিত লক্ষ্যের হিসেব নিতেন, তাহলেই অস্ট্রেলিয়া বিজয়ী হয়ে যেত!