সাকিব, এমিলি, আসিফ কিংবা শিলা হতে চাও?

বিকেএসপিতে নতুন বছরের শিক্ষার্থীর খোঁজ শুরু হয়েছে। ফাইল ছবি
বিকেএসপিতে নতুন বছরের শিক্ষার্থীর খোঁজ শুরু হয়েছে। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে পেশাদারির ছোঁয়া ছিল না বললেই চলে। ভালোবাসা বা শরীরচর্চার অংশ হিসেবে খেলাধুলাতে আসতেন সবাই। এ ছাড়া কোনো মা-বাবা শখের বশেই সন্তানদের হাতে তুলে দিতেন ব্যাট অথবা ফুটবল। আবার যে ছেলেটার পড়ার টেবিলে মন বসে না, তার বাঁধভাঙা আগ্রহের কাছেও হার মানতেন অভিভাবকেরা।

সময়ের পালাবদলে ক্রীড়া এখন অন্যতম সেরা সম্মানজনক পেশা। ভালো খেলতে পারলেই অর্থকড়ির সঙ্গে যশ-খ্যাতি! ফলে বর্তমানে অভিভাবকেরাও চান, তাঁর সন্তান খেলোয়াড় হোক।

এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের প্রথম পছন্দ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)। যেখান থেকে উঠে এসে বিশ্ব ক্রিকেট মাতাচ্ছেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, নাসির হোসেন, আবদুর রাজ্জাকদের মতো ক্রিকেটাররা। ফলে অনেকেই ভেবে থাকেন, ছেলেকে একবার বিকেএসপিতে দিতে পারলেই সেও বুঝি হয়ে গেল মস্ত বড় ক্রিকেটার। আসলে তা নয়, পরিশ্রম ও মেধার সমন্বয়ে সাকিবদের পায়ের নিচে এনে দিয়েছে সাম্রাজ্য। তবে পরিশ্রমের পথটা দেখিয়ে দিয়েছে বিকেএসপিই।

শুধু ক্রিকেট নয়, সব খেলাতেই আছে খেলোয়াড় তৈরির এ কারখানার ছাত্রছাত্রীদের প্রাধান্য। ফুটবলে উঠে এসেছেন মাসুদ রানা, হাসান আল মামুন, ফিরোজ মাহমুদ টিটু, জাহিদ হাসান এমিলির মতো তারকারা। যাঁরা দীর্ঘ সময় দেশের ফুটবলে পতাকা বহন করেছেন। হকিতে আছেন রাসেল মাহমুদ জিমিরা। এ ছাড়া একক খেলাগুলোতে তৈরি হয়েছেন শুটার আসিফ হোসেন, আবদুল্লাহ হেল বাকি, সাঁতারু মাহফুজার আক্তার শিলার মতো তারকারা।

আজ থেকে শুরু হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটির নতুন বছরের খেলোয়াড় বাছাই পরীক্ষা। ১৭টি বিভাগে নেওয়া হবে খেলোয়াড়।

সাধারণত কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন করা হয় পরীক্ষা। প্রথমে হয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা। সেখানে প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসকেরা নির্ধারণ করে থাকেন আবেদনকারীর বয়স, উচ্চতা, ওজন ও শারীরিক কোনো ত্রুটি আছে কি না। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ‘ইয়েস’ কার্ড পেলেই আবেদনকারী নিজ নিজ খেলার মাঠে গিয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। অর্থাৎ যে ক্রিকেটে অবেদন করেছে, সে যাবে ক্রিকেট মাঠে। যে ফুটবলে, সে যাবে ফুটবল মাঠে।

ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটির খেলার মাঠেই। তবে খেলার আগেও নেওয়া হয়ে থাকে কিছু ফিটনেস পরীক্ষা। যেমন শাটল রান, বোর্ড জাম্প ইত্যাদি। এরপরেই শুরু হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা। অর্থাৎ ফুটবলারদের জন্য স্কিল ও গেম। ক্রিকেটারদের জন্য ব্যাটিং ও বোলিং ড্রিল।

সেখানে প্রথম দফায় টিকে যাওয়া আবেদনকারীদের ডাকা হয় সাত দিনের আবাসিক ক্যাম্পে। সপ্তাহব্যাপী এই ক্যাম্পে দুই বেলা অনুশীলনে যাচাই করা হয় খেলোয়াড়দের মেধা এবং শেষের দিন হয় নিজ শ্রেণির লিখিত পরীক্ষা (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত)। সব মিলিয়েই হয় ভর্তির জন্য চূড়ান্ত বাছাই।

নিয়মকানুন তো সব জানাই হলো। তাহলে এবার ছেলে বা মেয়েকে দাঁড় করিয়ে দিন পরীক্ষার লাইনে—যদি ইচ্ছে থাকে ছেলে বা মেয়েটিকে সাকিব, মুশফিক, আসিফ, এমিলি বা শিলার মতো তারকা হিসেবে দেখার।

কোনো তথ্য জানতে ভিজিট করতে পারেন এই ওয়েবসাইট