১০ লিগের ছয়টিই জিতেছে আবাহনী

গোলের পর নাসিরের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। ছবি: শামসুল হক
গোলের পর নাসিরের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। ছবি: শামসুল হক

‘জয় চাই, জয় চাই’—এমন একটি সুর বোধ হয় ছড়িয়ে পড়েছিল আকাশি-নীলদের হৃদয়ে। না হলে কি আর আজ এতটা ক্ষুধার্ত হয়ে উঠতে পারে তারা! শিরোপা মীমাংসার ম্যাচে স্নায়ুচাপ বলে তো কিছু থাকে! কিসের কী, প্রতিপক্ষ শেখ জামালকে কোনো সুযোগই দিল না আবাহনী লিমিটেড। দোর্দণ্ড দাপটে নাসির উদ্দিন চৌধুরী ও সানডের গোলে ২-০ ব্যবধানে জিতে শিরোপা উৎসব করল ঐতিহ্যবাহী দলটি। দশম পেশাদার লিগে এটি তাদের ষষ্ঠ শিরোপা।

ঘানার সেন্টারব্যাক সামাদ ইউসুফকে বসিয়ে দুই বিদেশি স্ট্রাইকার সানডে চিজোবা ও এমেকা ডার্লিংটনকে নিয়ে আবাহনীর একাদশ। শুরুতেই লক্ষ্যটা পরিষ্কার—আক্রমণ দিয়েই ডিঙাতে হবে শিরোপা পথে থাকা বড় বাধা। হয়েছেও তাই। জামালকে স্যান্ডউইচের মতো চাপে রেখে ম্যাচটি নিজেদের করে নিল অনায়াসে।

শুরুতে আজও সেই নাসির নামে ‘রামোস’ হাজির। ২৪ মিনিটে গোলমুখ খুলে দিল এই ডিফেন্ডার। আজ তাঁকে হোল্ডিং মিডফিল্ডার থেকে সরিয়ে খেলানো হলো তাঁর নিয়মিত পজিশন সেন্টারব্যাকে। সেখান থেকেও গোল করতে ভুললেন না তিনি। ডান প্রান্ত থেকে সোহেল রানার ক্রসে কাছের পোস্টে মাথা ছুঁয়ে দিলেই বল জালে। আসলে তখনই তো পশ্চিম গ্যালারিতে শুরু হয়ে গিয়েছে শিরোপা উৎসব। নাসির গোল করলে আবাহনী হারে না—এটাই যেন অলিখিত নিয়ম! আগে পাঁচটি গোল করেছিলেন নাসির, একটি ম্যাচেও হারেনি আবাহনী। আজ সংখ্যাটা হলো ছয়।

ডিফেন্ডারের গোলে শিরোপা উৎসব হবে? স্ট্রাইকার সানডে বসে থাকেননি! শেষের দিকে নাইজেরিয়ান এই স্ট্রাইকার দেখালেন ম্যাজিক। ডিবক্সের মধ্যে থেকে বাঁকানো শটে দুর্দান্ত গোল। গোল উদ্‌যাপনে পশ্চিম গ্যালারি থেকে দলে দলে মাঠে নেমে আসে দর্শক। একটু পরেই তারাই করল শিরোপা উৎসব।

জিতলে শিরোপা নিশ্চিত, আবাহনী ও শেখ জামালের জন্য একই ছিল সমীকরণ। কিন্তু পুরো লিগে ভালো খেলে আসা জামালে এই বড় ম্যাচে চাপ নেওয়ার মতো খেলোয়াড় যে নেই, তা ফুটে উঠল আজ। মাঝমাঠে আবাহনীর ইমন বাবু ও সোহেল রানার হাতের নাটাইয়ে থাকল ম্যাচের গতি। ওপরে চলল সানডের মাস্তানি। সঙ্গে আরেকজনের কথা বলতে হবে, তিনি হলেন আবাহনীর রাইটব্যাক সাদউদ্দিন। ডায়নামিক এক ফুলব্যাকের দুর্দান্ত প্যাকেজ হয়ে উঠেছিলেন সাদ।

আসলে আজকের দিনটিই ছিল আবাহনীর। ওয়ালি ফয়সাল ও রুবেল মিয়ার জায়গা পূরণ করতে গিয়ে পাঁচটি পজিশনে অদলবদল করেছে তারা। কিন্তু ম্যাচে দেখা গেল না বিন্দুমাত্র প্রভাব। হোল্ডিং মিডফিল্ডার ফাহাদ যে আজ প্রথম একাদশে নেমেছিলেন, তা-ও বোঝার উপায় নেই। আবার সোহেল রানার মতো বাঁ পায়ের খেলোয়াড়ই কিনা ডান পায়ে ক্রস করে করালেন গোল। যিনি কিনা অনুশীলনেও একটি বল ডান পা দিয়ে পাস দেন না। কারণ, দিনটি যে ঠিক করাই ছিল আবাহনীর জন্য।