তামিম-সাকিবের ধরাছোঁয়ায় জয়াসুরিয়া!

দুটি দারুণ মাইলফলক অপেক্ষা করছে সাকিব-তামিমের জন্য। ফাইল ছবি
দুটি দারুণ মাইলফলক অপেক্ষা করছে সাকিব-তামিমের জন্য। ফাইল ছবি

ইংল্যান্ডের যেমন লর্ডস, অস্ট্রেলিয়ার এমসিজি, শ্রীলঙ্কার প্রেমাদাসা, বাংলাদেশের তেমনি শেরেবাংলা! মানে, শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। বাংলাদেশের ‘হোম অব ক্রিকেট’—ওয়ানডেতে এই মাঠ এখন ৯৮ নট আউট!

ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ম্যাচটি হবে এই মাঠে ৯৯তম ওয়ানডে। শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ে ম্যাচ দিয়ে পূর্ণ হবে ‘সেঞ্চুরি’—ওয়ানডেতে ষষ্ঠ ভেন্যু হিসেবে। এর আগে যে পাঁচটি স্টেডিয়াম ন্যূনতম ১০০ ওয়ানডে আয়োজন করেছে, শেরেবাংলা স্টেডিয়াম কিন্তু একটি জায়গায় তাদের সবাইকে ছাপিয়ে যাবে—সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে ১০০ ওয়ানডে।

২০০৬, ৮ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের যাত্রা শুরু। অর্থাৎ শততম ওয়ানডে আয়োজিত হতে ১১ বছর পেরিয়ে গেল। কিন্তু এই শততম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দলকে মাঠে না দেখার আক্ষেপ পুড়তে পারেন অনেকে। সেটা কি দোষের হবে? ত্রিদেশীয় সিরিজের সূচি তৈরির সময় তো ব্যাপারটা বিবেচনা করা যেত!

এই আক্ষেপ অন্তত কিছুটা হলেও লাঘব করতে পারেন তামিম ইকবাল। ওয়ানডেতে এক মাঠে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড গড়া থেকে বাংলাদেশের এ ওপেনার মাত্র ২১০ রানের দূরত্বে পিছিয়ে। ত্রিদেশীয় সিরিজেই কিন্তু তামিম টপকে যেতে পারেন সনাৎ জয়াসুরিয়াকে!

ওয়ানডেতে এক মাঠে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড ‘মাতারা হারিকেন’ খ্যাত জয়াসুরিয়ার। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ৭১ ম্যাচে ৭০ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৫১৪ রান করেছেন শ্রীলঙ্কার সাবেক এ অধিনায়ক। গড় ৩৮.৬৭, স্ট্রাইক রেট ৮৯.৩৭, সেঞ্চুরি ৪টি এবং ১৯টি ফিফটি।

জয়াসুরিয়ার যেমন প্রেমাদাসা, ইনজামাম-উল-হকের তেমনি শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। আরব-আমিরাতের এ মাঠে ৫৯ ম্যাচে ৫৯ ইনিংসে ৫০.২৮ গড় এবং ৭৭.১২ স্ট্রাইক রেটে ২৪৬৪ রান করেছেন পাকিস্তানের সাবেক এ অধিনায়ক। সেঞ্চুরি ৪টি, ১৭ ফিফটি। ওয়ানডেতে এক মাঠে সর্বোচ্চ রান করার তালিকায় ইনজামাম দ্বিতীয়।

ইনজামামকে টপকে যেতে আর মাত্র ১৬০ রান চাই তামিম ইকবালের। জয়াসুরিয়ার প্রেমাদাসার মতো শেরেবাংলাতেও তামিম ৭১ ম্যাচে এ পর্যন্ত খেলেছেন ৭০ ইনিংস। ৩৩.৪০ গড়ে তাঁর রানসংখ্যা ২৩০৫। স্ট্রাইক রেট ৭৮.৮০। সেঞ্চুরি ৫টি, ১৩ ফিফটি। ওয়ানডেতে এক মাঠে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তামিম তৃতীয় হলেও একটি জায়গায় জয়াসুরিয়া ও ইনজামামের চেয়ে এগিয়ে। প্রিয় মাঠে তাঁদের চেয়ে তামিমের চেয়ে সেঞ্চুরিসংখ্যা বেশি!

জয়াসুরিয়া ও ইনজামাম অবসর নেওয়ায় তামিম এই ত্রিদেশীয় সিরিজে না হলেও পরে একসময় হয়তো ঠিকই তাঁদের টপকে যাবেন। তবে তামিমেরও কিন্তু শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী আছে এবং সেটা তাঁরই সতীর্থ-বন্ধু সাকিব আল হাসান! এই শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেই ৭৩ ম্যাচে ৭০ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ২২১৪ রান করেছেন সাকিব। ৩৮.৮৪ গড়ে ২টি সেঞ্চুরি, ১৮টি ফিফটি। বন্ধুকে টপকে যেতে সাকিবের চাই আর মাত্র ৯২ রান।

তাহলে জয়াসুরিয়াও কেন নয়? ওয়ানডেতে এক মাঠে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়তে সাকিবকে করতে হবে আরও ৩০১ রান। অর্থাৎ তামিমের সামনে ২১০ আর সাকিবের সামনে ৩০১—মাইলফলকটা কে আগে গড়েন, সেটাই দেখার বিষয়।