'দারুণ লিগ' শেষ 'পাতানো ম্যাচে'

পাতানো ম্যাচ থেকে রেহাই পায়নি এবারের লিগ। ফাইল ছবি
পাতানো ম্যাচ থেকে রেহাই পায়নি এবারের লিগ। ফাইল ছবি

‘দারুণ একটি লিগ হচ্ছে’—কথাটি কয়েক দিন আগেও শোনা গেছে অনেকের মুখেই। ১২ দলের লিগে চার দল শিরোপা রেসে; আর নিচের ছয় দল অবনমনের শঙ্কায়। বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে এর চেয়ে ভালো প্রতিযোগিতা আর হয় নাকি! দারুণ সমাপ্তির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবলে কি আর সুখ সহ্য হয়! তাই দারুণ জমজমাট এক লিগের শেষটায় যোগ হলো ‘কলঙ্ক’। পাতানো খেলার ন্যক্কারজনক অভিযোগ কলুষিত করল লিগটাকে। এবারের মৌসুমে তিনটি ম্যাচ সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফুটবল-কর্তারা অবশ্য গর্ব করে বলতেই পারেন ১৩২টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটি ম্যাচ ‘প্রশ্নবিদ্ধ’—এ আর এমনকি! একসময় দেশের ফুটবল লিগে কত ম্যাচেই না দুই দল সমঝোতা করে ফেলত!

অভিযুক্ত ম্যাচ তিনটি হলো—ফরাশগঞ্জ ও টিম বিজেএমসি, ফরাশগঞ্জ ও শেখ জামাল এবং সাইফ স্পোর্টিং ও রহমতগঞ্জ। অর্থাৎ অভিযোগের তিনটি ম্যাচের দুটিতেই এসেছে পুরান ঢাকার দল ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের নাম। বিশেষ করে শেখ জামালের বিপক্ষে তাদের ৩-১ গোলের জয় ফুটবলপ্রিয় দর্শকদের চোখ এড়াতে পারেনি। সেদিন স্টেডিয়ামের প্রতিটি দর্শকই বলেছে, ম্যাচটি ছেড়ে দিয়েছে শেখ জামাল। বাকি দুটি ম্যাচও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ভালোভাবেই।
ফরাশগঞ্জ প্রথম পর্বে পেয়েছিল ৬ পয়েন্ট, দ্বিতীয় পর্বে ১১। এর মধ্যে তাদের দুটি জয়ই প্রশ্নবিদ্ধ। দ্বিতীয় পর্বে বিজেএমসির বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ের পরের দিনই ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) চিঠি দিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র। এরপর আবার শেখ জামালের বিপক্ষে তাদের জয়ের বিপক্ষে অভিযোগ তুলে বাফুফেকে চিঠি দেয় রহমতগঞ্জ। কিন্তু গতকাল আবার সাইফ স্পোর্টিং ও রহমতগঞ্জের ম্যাচ নিয়েই অভিযোগ উঠেছে পাতানো খেলার। সাইফকে ২-০ গোলে হারিয়ে অবনমন এড়িয়েছে রহমতগঞ্জ। ম্যাচটি নিয়ে এখনো বাফুফের টেবিলে কোনো অভিযোগ না পড়লেও আগামীকাল সোমবারই এ নিয়ে চিঠি দেবে প্রিমিয়ার থেকে অবনমন হওয়া ফরাশগঞ্জ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ক্লাবটির ম্যানেজার বাবুরাম ঘোষ। এই বিষয়ে লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
তবে ২০১১ সালে পাতানো ম্যাচ খেলার অপরাধে বড় ধরনের জরিমানা হয়েছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও রহমতগঞ্জের। শেখ জামালকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছি সেবার। রহমতগঞ্জকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করার পাশাপাশি তাদের এক খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য। এরপর পাতানো খেলার অভিযোগ পাল্টা-অভিযোগ কিন্তু অনেকটাই কমে এসেছিল। এবারের লিগ আবার কলঙ্কিত পাতানো খেলার অভিযোগ দিয়ে।
এবার বাফুফে পুরো বিষয়টি কীভাবে নিষ্পত্তি করে, দেখার বিষয় এখন এটিই।