দেশি ফুটবলারদের বড় সুযোগ

২০১৭ মৌসুমের শেষ টুর্নামেন্ট হিসেবে স্বাধীনতা কাপ আয়োজন ঘরোয়া ফুটবলে ইতিবাচক ঘটনাই। অনিয়মিত হলেও টুর্নামেন্টটি এবার বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এবারই প্রথম টুর্নামেন্টে কোনো বিদেশি ফুটবলার খেলতে পারবেন না। তাই আজ থেকে শুরু টুর্নামেন্টটির গায়ে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ তকমা লাগিয়ে দেওয়া যায়।

অবশ্য ২০১১ সালে তৃতীয় ও শেষ সুপার কাপও ছিল বিদেশিবিহীন। অনেক ফুটবলারই তখন সুযোগ পেয়ে নিজেদের চেনান। যে সুযোগ তাঁরা পান না লিগে।

এবার লিগে সব দলেরই একাদশে খেলেছেন দুজন বিদেশি, বিদেশির বদলি হিসেবে বিদেশি নামত পারতেন। এখন স্বাধীনতা কাপে সবাই স্থানীয়। আর এখানেই দলগুলোর শক্তির একটা পরীক্ষা হয়ে যাবে। স্থানীয় ফুটবলার নিয়ে কারা সেরা, বোঝা যাবে সেটিও।

জাতীয় দলের কোচ অ্যান্ড্রু ওর্ড স্থানীয় খেলোয়াড়দের এখনো ভালোভাবে পরখ করতে পারেননি। কাল বাফুফে ভবনে স্বাধীনতা কাপের দলগুলোর সংবাদ সম্মেলনে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক এটিকে দেখতে চাইলেন বড় প্রাপ্তি হিসেবে, ‘জাতীয় দল গঠনে স্বাধীনতা কাপ বড় প্রভাব ফেলবে। খেলোয়াড়েরা নিজেদের উজাড় করে খেলবে আশা করি।’

তবে লম্বা লিগ শেষে খেলোয়াড়দের মন কতটা খেলায় থাকবে, সেই প্রশ্নও আছে। লিগ শেষ হওয়ার আগেই কজন ফুটবলার এক আড্ডায় বলছিলেন, ‘এখন আবার স্বাধীন কাপ আয়োজনের কী দরকার!’ কারণ, তারা বাড়ি যেতে উদ্গ্রীব।

তাই ফুটবলারদের বাড়ি যাওয়ার অপেক্ষা বাড়িয়ে এবং ‘অবসাদ’ কাটিয়ে ভালো খেলার মন্ত্রে উজ্জীবিত করাই এখন কোচদের বড় কাজ। যেমনটা চট্টগ্রাম আবাহনীর ভারপ্রাপ্ত কোচ জুলফিকার মাহমুদ মিন্টু বলছিলেন, ‘গত বছর ২৫ জানুয়ারি আমরা অনুশীলন শুরু করি। টানা খেলে খেলোয়াড়েরা এখন অবসাদগ্রস্ত। খেলোয়াড়দের কাছ থেকে মূল খেলাটা আদায় করাই আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।’

চট্টগ্রাম আবাহনীর জন্য যা চ্যালেঞ্জ, ঢাকা আবাহনীর কাছে সেটি বড় সাফল্যের হাতছানিও। ২০১১ সালে শেখ রাসেলের ট্রেবল জেতার পর এবার ফেডারেশন কাপ ও লিগজয়ী ঢাকা আবাহনীর সামনেও ট্রেবল জয়ের সুযোগ। দলটির ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রুপু তাই বেশ উজ্জীবিত, ‘সানডে, এমেকা, সামাদরা স্বাধীনতা কাপে নেই। আমরা চাইব ট্রেবল জিততে এবং এএফসি কাপের প্রস্তুতি হিসেবে নতুনরা যেন ভালো করে।’

স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হতে চাওয়ার কথা বলেছে আবাহনী, মোহামেডান। বাকিরা রয়েসয়ে, পরিস্থিতি বুঝে এগোনোর কথা বলছে। অবশ্য মোহামেডান কোচ রাশেদ আহমেদ পাপ্পুর মুখে ‘চ্যাম্পিয়ন হতে চাই’ শুনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, দুই দিন আগেও লিগ শেষে মোহামেডানের কাউকে পাওয়া যায়নি কথা বলার জন্য। লিগে কোনো রকমে পাঁচ নম্বর হয়েছে যে দল, সেই মোহামেডান কীভাবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা করে? পাপ্পু বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় খেলোয়াড় ভালো।’

রহমতগঞ্জের বিরুদ্ধে পাতানো খেলার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রভাব পড়বে স্বাধীনতা কাপে? রহমতগঞ্জ কোচ কামাল বাবুর কাছে জানতে চাইলে বাফুফের কর্মকর্তারা প্রসঙ্গটা ঘুরিয়ে দেন আরেক দিকে। তবে কামাল বাবু বলেন, চমক দেখানোর আশা আছে তাঁর। এর আগে ফরাশগঞ্জকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন এই টুর্নামেন্টে।

রহমতগঞ্জ চমক দেখাতে চায় ভালো কথা, তবে পাতানো খেলার অভিযোগ ওঠা শেখ জামাল-ফরাশগঞ্জ ক্লাব কী করতে চায়, জানা গেল না। ক্লাব দুটির কেউ আসেননি কালকের অনুষ্ঠানে। ছিল না বিজেএমসির কোনো প্রতিনিধিও। ঘরের ছেলেদের নিয়ে টুর্নামেন্ট। অথচ তিনটি দল গরহাজির!

গ্রুপিং ও সূচি

‘এ’ গ্রুপ: শেখ জামাল, মোহামেডান, রহমতগঞ্জ

‘বি’ গ্রুপ: ব্রাদার্স, মুক্তিযোদ্ধা, ফরাশগঞ্জ

‘সি’ গ্রুপ: আবাহনী, শেখ রাসেল, বিজেএমসি

‘ডি’ গ্রুপ: চট্টগ্রাম আবাহনী, আরামবাগ, সাইফ এসসি

 

গ্রুপ পর্ব

১৬ জানু.  চট্ট. আবাহনী-সাইফ এসসি (৩-৩০ মি.)

            ব্রাদার্স-ফরাশগঞ্জ  (৫-৪৫ মি.)

 

১৭ জানু.  শেখ জামাল-মোহামেডান (৩-৩০ মি.)

            আবাহনী-বিজেএমসি (৫-৪৫ মি.)

 

১৮ জানু.  সাইফ-আরামবাগ (৩-৩০ মি.)

            মুক্তিযোদ্ধা-ফরাশগঞ্জ  (৫-৪৫ মি.)

 

১৯ জানু.  বিজেএমসি-শেখ রাসেল (৩-৩০ মি.)

            মোহামেডান-রহমতগঞ্জ  (৫-৪৫ মি.)