আক্ষেপ সঙ্গে নিয়েই বিদায় জাদুকর রোনালদিনহোর

ফুটবলকে বিদায় জানালেন রোনালদিনহো। ফাইল ছবি
ফুটবলকে বিদায় জানালেন রোনালদিনহো। ফাইল ছবি

অবশেষে পাকাপাকিভাবেই ফুটবলকে বিদায় জানালেন ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী তারকা রোনালদিনহো। তাঁর ভাই ও এজেন্ট রাবার্তো অ্যাসিস ইংলিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের কাছে এই খবর নিশ্চিত করেছেন।

ব্রাজিলীয় ক্লাব ফ্লুমিনেনসের হয়ে ২০১৫ সালে সর্বশেষ পেশাদারি ফুটবল মাঠে নেমেছিলেন রোনালদিনহো। গত তিন বছর নিভৃতেই ছিলেন। গত জুলাইয়ে একটি প্রীতি ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানেই বলেছিলেন, পেশাদারি ফুটবলে ফেরার বয়স তাঁর আর নেই। ২০০৫ সালে ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন এই তারকা ফুটবলার।

অ্যাসিস অবশ্য তাঁর ভাইয়ের ফুটবল থেকে পাকাপাকিভাবে সরে দাঁড়ানোর কথাটি বলেছেন ব্রাজিলীয় গণমাধ্যম ও’গ্লোবোতে লেখা এক কলামে। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়া বিশ্বকাপের পরপরই রোনালদিনহোর বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। পেশাদারি ফুটবল ছেড়ে দেওয়ার তিন বছরের মাথায় বিদায়ী সংবর্ধনা আয়োজিত হবে ব্রাজিলীয় তারকার জন্য।

আগস্টে এই বিদায়ী সংবর্ধনা আয়োজন করতে চান অ্যাসিস, ‘রোনালদিনহোর ফুটবল ক্যারিয়ার শেষ। সে বিদায় নিতে যাচ্ছে। চলুন, আমরা রাশিয়া বিশ্বকাপের পর আগস্টেই তাঁর জন্য সত্যিকার অর্থেই মনে রাখার মতো বড় কিছু আয়োজন করি। আমরা ব্রাজিল, ইউরোপ ও এশিয়ায় এই আয়োজনগুলো করতে চাই। আর ব্রাজিলীয় ফুটবল দলের সঙ্গেও দারুণ কিছু আয়োজনের ইচ্ছা আছে।’

মনে রাখার মতো বড় কিছু আয়োজন সত্যিই প্রাপ্য এই ফুটবল-জাদুকরের। মেসি-রোনালদোর আবির্ভাবের আগে দিয়ে ফুটবল বিশ্ব বুঁদ হয়ে ছিল রোনালদিনহোর জাদুতে। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে তাঁর খেলায় ছিল নানামুখী বৈচিত্র্য। ২০০২ সালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র ছিলেন। ২০০৬ সালে ১৪ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে বার্সেলোনাকে জিতিয়েছিলেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। মেসির ক্যারিয়ারের শুরুতে ছিলেন তাঁর বড় ভাই, বন্ধু, পথপ্রদর্শক।

গ্রেমিওর হয়ে পেশাদারি ফুটবল শুরু করা রোনালদিনহো ইউরোপে খেলেছেন মিলান ও পিএসজিতেও। ২০১১ সালে দিনি ব্রাজিলে ফেরেন। ফ্ল্যামেঙ্গো, অ্যাটলেটিকো মিনেইরো, কুয়েরেতারো ও ফ্লুমিনেনসের হয়ে ক্যারিয়ারের শেষের দিনগুলো কাটিয়েছেন। ২০১১ সালে মিলানকে সিরি ‘আ’র শিরোপা জিতিয়ে প্রমাণ করেন ফুটবলকে দেওয়ার মতো অনেক কিছুই তখনো বাকি ছিল। ২০০৬ সালে বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর ২০১০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলীয় দলে নির্বাচিত হননি। উদ্দাম, বোহেমিয়ান জীবনে অভ্যস্ত রোনালদিনহো বিতর্কেও জড়িয়েছেন বেশ কয়েকবার।

অনেকে বলেন, ক্যারিয়ারের শেষটা যে রাঙিয়ে যেতে পারলেন না, এই যে এমন নিভৃতে বিদায় নিতে হলো, এর দায় তাঁরই। মাঠের বাইরের জীবনে লাগাম পরাতে পারলে সর্বকালের সেরাদের ছোট তালিকায় সব সময়ই উচ্চারিত হতো তাঁর নাম। ফুটবলকে অনেক দিয়েছেন, তবে হয়তো আরও অনেক কিছু দিতে পারতেন। এই আক্ষেপ সঙ্গে নিয়েই বিদায় নিলেন রোনি!