যে প্রতিযোগিতাটা খুব করেই চান সাকিব

তামিম কিংবা মুশফিকের সঙ্গে ভালো করার প্রতিযোগিতাটা খুব জরুরি বলে মনে করেন সাকিব আল হাসান। ছবি: প্রথম আলো
তামিম কিংবা মুশফিকের সঙ্গে ভালো করার প্রতিযোগিতাটা খুব জরুরি বলে মনে করেন সাকিব আল হাসান। ছবি: প্রথম আলো

১৭১ ইনিংসের ১২২টিতেই সাকিব আল হাসানকে নামতে হয়েছে পাঁচে। তাঁর সঙ্গে একজনের ওপেনারের তুলনা হয়? তবু প্রশ্নটা করা হলো সাকিবকে। ক্রিকেটের তিন সংস্করণে ১০ হাজার রান করতে তামিম ইকবালের লেগেছে ১০ বছর। সাকিবের লাগল ১২ বছর। দুই বছর সময় বেশি লাগার কারণটা কী?

প্রশ্নটা শুনে সাকিব হাসলেন, ‘ভালোভাবেই উত্তরটা দিই।’ হাসিটা ধরে রেখেই উত্তরটা দিলেন বেশ গুছিয়ে, ‘স্বাভাবিকভাবে একজন ওপেনার বা তিনে নামা ব্যাটসম্যান যেভাবে রান করবে, নাম্বার পাঁচ-ছয়-সাতে নামা ব্যাটসম্যান সেটা করতে পারবে না!’
সাকিব ঠিক বলেছেন। আবার এটাও ঠিক, একটা সময় তিনিই কিন্তু মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন। ২০১১ সালে ৬ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হলেন। ২০১৩ সালের অক্টোবরে রেকর্ডের হাতবদল হলো তামিম ইকবালের কাছে। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেটি আবার নিজের অধিকারে নিলেন। ২০১৫ সালের এপ্রিলে আবারও ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটা নিজের কাছে নিলেন তামিম। এভাবে তিন ধরনের ক্রিকেটেও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটা সাকিব-তামিমের কাছে ‘বালিশ বদলে’র মতো ঘুরেছে।
সাকিবের ধারাবাহিক লোয়ার মিডল অর্ডার সামলানো আর গত তিন বছরে তিন সংস্করণেই তামিমের দুর্দান্ত ফর্ম—এই দৌড়ে সাকিব একটু পিছিয়েই পড়েছেন। গত মার্চে শ্রীলঙ্কা সফরে তামিম প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ১০ হাজার রান করেছেন, সাকিব করলেন আজ।
এই অর্জনে স্বাভাবিকভাবেই খুশি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তবে তিনি জানিয়ে রাখলেন, সামনে এই মাইলফলকগুলো ছুঁতে চান আরও দ্রুত, ‘সব সময় হয় না। আবার সব সময় হবে, সেটাও নয়। এখন ভালো হচ্ছে। চেষ্টা থাকবে আরও কত দ্রুত মাইলফলকগুলো ছোঁয়া যায়।’
মাইলফলক ছুঁতে হলে সাকিবকে প্রতিযোগিতা করতে হবে বন্ধু তামিমের সঙ্গে। তাঁদের পেছনে মুশফিকুর রহিম। তিনজনের এই প্রতিযোগিতায় দিন শেষে দলই উপকৃত হবে। প্রতিযোগিতাকে তাই ইতিবাচকভাবে দেখছেন সাকিব, ‘এই সুস্থ প্রতিযোগিতা আমার কাছে মনে হয় খুব জরুরি। সবার প্রতিই প্রত্যাশা থাকে। নিজের সঙ্গে নিজের একটা চ্যালেঞ্জ থাকে। এমন প্রতিযোগিতা দলের জন্য অনেক ভালো। রানের দিক দিয়ে আমরা তিন-চারজন খুব কাছাকাছি আছি । প্রতি ম্যাচেই আমাদের চিন্তা থাকে কার চেয়ে কে বেশি রান করবে। প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ দ্রুত আউট হোক, সেটাও চাই না। এটা (প্রতিযোগিতা) যত বেশি চলবে, আমাদের দল তত ভালো খেলতে থাকবে।’
আজ হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েও হয়নি। বোলিংয়ে না হলেও ম্যাচ সেরার পুরস্কার প্রাপ্তিতে সাকিব আল হাসান কিন্তু হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে! ২৩ জানুয়ারি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও যদি ম্যান অব দ্য ম্যাচ হতে পারেন, আরেক অর্জন হবে সাকিবের।
কী হবে, কী হবে না, সেটি পরে। যেটি হয়েছে তাতে কেমন লাগছে সাকিবের? টানা দুবার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে যতটা আনন্দ সাকিবের, তার চেয়ে বেশি আনন্দ দলে বড় অবদান রাখতে পেরে, ‘দলের জন্য অবদান রাখতে পারলে সব সময়ই ভালো লাগে। গত ম্যাচে ভালো হচ্ছে, ব্যাটিং-বোলিং সব বিভাগেই। চেষ্টা থাকবে এটা যেন ধারাবাহিক করতে পারি।’