হাথুরুর শ্রীলঙ্কার বিদায় হয়ে যেতে পারে আজই

শ্রীলঙ্কার জন্য আজকের ম্যাচটা বাঁচা-মরার। ছবি: প্রথম আলো
শ্রীলঙ্কার জন্য আজকের ম্যাচটা বাঁচা-মরার। ছবি: প্রথম আলো

প্রবাদের ‘গাছ’টাকে উপড়ে ফেলুন। সেখানে ‘ম্যাচ’ বসিয়ে দিন। পরিবর্তিত ‘প্রবাদ’টা আজকের ম্যাচের সঙ্গে খুব যায়। ম্যাচ তোমার নাম কী, ফলে পরিচয়।

জিম্বাবুয়ে-শ্রীলঙ্কার এই ম্যাচের নাম দিতেই হবে, এমন দিব্যি কেউ দেয়নি। তবে একটু নাটুকেপনায় কী এমন ক্ষতি! ত্রিদেশীয় সিরিজটার যে প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে এই ম্যাচ, তাতে এটিই হয়ে যেতে পারে সেমিফাইনাল। আবার হতে পারে কোয়ার্টার ফাইনালও। কোনটি হবে, তা নির্ভর করছে ম্যাচের ফলের ওপর। জিম্বাবুয়ের জয় এটিকে দেবে সেমিফাইনালের মর্যাদা, শ্রীলঙ্কা জিতলে কোয়ার্টার ফাইনাল। জলবৎ তরলং, না?

নিজেদের দুই ম্যাচের দুটিই জিতে বাংলাদেশ ফাইনালে উঠে গেছে। জিম্বাবুয়ে দুই ম্যাচের একটি জিতেছে, শ্রীলঙ্কার ঝুলি খালি। আজ জিতলে জিম্বাবুয়েও ফাইনালে। হলো তো ‘সেমিফাইনাল’ নামকরণের সার্থকতা? আর শ্রীলঙ্কা জিতলে সে ক্ষেত্রে টুর্নামেন্টের পরের দুই ম্যাচ পাবে প্রাণ।

হিসাবটা জিম্বাবুয়েরই অনুকূলে। পক্ষে তাদের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাম্প্রতিক রেকর্ডও। সর্বশেষ তিন ওয়ানডেতেই জয়! কাল সংবাদ সম্মেলনে জিম্বাবুয়ের প্রতিনিধি হয়ে আসা ক্রেইগ আরভিনও মনে করিয়ে দিলেন, ‘দুই দলের মধ্যে আমাদের সময়টাই ভালো যাচ্ছে।’ এর পরই অবশ্য বললেন, ‘...ওরা চাপে আছে, তবে ওরা ভালো দল। আরেকবার ওদের হারাতে আমাদের সেরাটাই খেলতে হবে। আমি নিশ্চিত, ওরা ফিরে আসতে মুখিয়ে আছে। আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে।’

তাঁদের জন্য ‘জিততেই হবে’ ম্যাচ দুটিতে শ্রীলঙ্কা যে ঝাঁপিয়ে পড়বে, সেটি বাংলাদেশের বিপক্ষে পরশু হারের পর থিসারা পেরেরাও জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে নখদন্তের ধারটা ঠিক আছে তো লঙ্কান ‘সিংহ’দের? দায়িত্ব নিয়েই চন্ডিকা হাথুরুসিংহে যাঁকে অধিনায়কত্বে ফিরিয়ে এনেছিলেন, সেই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস চোটের কারণে ছিটকে গেছেন সিরিজ থেকে। আজ দুপুরে ফিরে যাচ্ছেন দেশে। পরশু পেরেরা মূলত ব্যাটিংয়ে ম্যাথুসের অভাবটা টের পাওয়ার কথা বলেছিলেন। কাল আরভিনও বললেন, ‘অ্যাঞ্জেলো ওদের দলের অপরিহার্য অংশ। মিডল অর্ডার ধরে রাখে। ওকে ছাড়া শ্রীলঙ্কা আরেকটু বেশি চাপে থাকবে।’

এ তো গেল ব্যাটিং, আর শ্রীলঙ্কার বোলিং? দুই ম্যাচে ৬১০ রান দিয়ে ১৩ উইকেট, যা বলার সংখ্যাগুলোই বলে। স্পিনে জিম্বাবুয়ের দুর্বলতার সুযোগ নিতে পারলে অবশ্য ভিন্ন কথা। তবে এখানেও আরভিন আত্মবিশ্বাসী, ‘ওরা হয়তো একজন পেসারের বদলে স্পিনার খেলাবে। তবে আমরাও সাম্প্রতিক সময়ে স্পিনের বিপক্ষে খুব ভালো খেলেছি।’

ভালো খেলতে জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে বড় ভরসা লঙ্কানদের বিপক্ষে আগের ম্যাচেরই ম্যাচসেরা সিকান্দার রাজা। সিরিজে দুই ম্যাচেই ফিফটি পেয়েছেন, উইকেট তিনটি। নিজেই বলেছেন, বিপিএলের অভিজ্ঞতাই এর রহস্য। আরভিনের কথাতেও এর প্রতিধ্বনি, ‘ও বিপিএলে খেলেছে। ভালোও করেছে। এই কন্ডিশন ও খুব ভালো চেনে। আশা করি, ওর এই ফর্মটা টুর্নামেন্টজুড়েই থাকবে।’

সেটি হলে আজকের ম্যাচটাই না ‘সেমিফাইনাল’ হয়ে যায়!