নাসিরের শেষ ফিফটি ৫৬ মাস আগে!

♦ ৫৬ মাস ধরে ওয়ানডেতে ফিফটি নেই নাসিরের

♦ ব্যাটে-বলে একসঙ্গে নাসিরকে জ্বলে উঠতে দেখা গেছে ২০১৭ সালের অক্টোবরে 


বল হাতেই উজ্জ্বল নাসির, কিন্তু ব্যাটিংয়ে তো তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না একই রূপে। প্রথম আলো ফাইল ছবি
বল হাতেই উজ্জ্বল নাসির, কিন্তু ব্যাটিংয়ে তো তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না একই রূপে। প্রথম আলো ফাইল ছবি

ডেভ হোয়াটমোরের আমল থেকেই বাংলাদেশে অলরাউন্ডারের জোয়ার চলছে। ভালো ব্যাটসম্যান কিংবা বোলারের অভাব হয়তো টের পাওয়া গেছে, কিন্তু অলরাউন্ডারের অভাব কখনো বোধ করেনি বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের উত্থানের পর তো কখনোই না। সে পথেই হাঁটছেন মেহেদী হাসান মিরাজ কিংবা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সাব্বির রহমান কিংবা নাসির হোসেনও কিন্তু দলে ঢুকেছেন সে তকমা গায়ে লাগিয়েই। তবে ইদানীং নাসিরের ব্যাটিং দেখে প্রশ্ন জাগে, অলরাউন্ডার সত্তার কথা তাঁর নিজের খেয়াল আছে তো! একসময় অসম্ভব ধারাবাহিক নাসির যে শেষ ফিফটি করেছিলেন ৫৬ মাস আগে!

আজ মিরপুরের উইকেট মোটেও ব্যাটিং সহায়ক নয়। এ উইকেটে তাই ৮ বলে ২ রান করে আউট হয়েছেন বলেই নাসিরের ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এমন নয়। তামিম-সাকিব কিংবা সানজামুল-মোস্তাফিজ (না, ভুল পড়েননি, এই দুই টেল এন্ডার না থাকলে আজ দুই শ ছাড়ানো হতো না বাংলাদেশের) ছাড়া আজ কেউই ভালো ব্যাটিং করেননি। তাই নাসিরকে কাঠগড়ায় তুললে সাব্বির-মাহমুদউল্লাহরা কেউ বাদ পড়বেন না। 
কিন্তু কাঠগড়ায় উঠবে তাঁর আত্মবিশ্বাস। একসময় ‘ফিনিশার’ নামে ডাকা হতো যে ব্যাটসম্যানকে, ইদানীং তাঁকে দেখলে ভরসা পান না সমর্থকেরা। পেস বলে সময়মতো পা নড়ে না নাসিরের। স্পিনেও যেন কেমন যেন জড়তায় ভোগেন। ১৬৭ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর সবাই আজ নাসিরের দিকেই তাকিয়ে ছিল। অন্যদিকে মাশরাফি থাকলেও ব্যাটসম্যান হিসেবে তো নাসিরই এগিয়ে। দুজনে মিলে শেষ ১০ ওভার কাটিয়ে দেবেন, এমন আশাটা অস্বাভাবিক ছিল না। 
জারভিসের বলে উইকেটের পেছনে খেলতে গিয়ে যখন নাসির আউট হলেন, তখনো ইনিংসের ৫০ বল বাকি। এর আগের ম্যাচেও প্রথম বলে শূন্য হাতে ফিরেছেন নাসির। আজও এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়নি স্বচ্ছন্দে আছেন কিংবা তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে টপ অর্ডারে ব্যাট করেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তো নাসিরকে বসিয়ে আগে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন মাশরাফি নিজেই। অবস্থা এমন, নাসিরের ব্যাটিংয়ে যেন ভরসাই হারিয়ে ফেলছেন সবাই! 
বোলার নাসিরকে নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই দারুণ বল করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে কিংবা আয়ারল্যান্ডেও বল হাতে অবদান ছিল তাঁর। কিন্তু অলরাউন্ডার নাসিরের ব্যাট যে কথা বলছে না অনেক দিন হলো। ভাবা যায়, শেষ ৩৯ ওয়ানডেতে ২৯ ইনিংসে ব্যাট করা নাসিরের সর্বোচ্চ ৪৪! অথচ ফিফটি দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ার শুরু করা নাসির প্রথম ২৫ ওয়ানডেতেই পেয়ে গিয়েছিলেন ৬টি ফিফটি। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরিও ছিল একটি। এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ২০১৩ সালে ৩ ম্যাচে ১৬৭ রান করা নাসির সেই যে ব্যাটিংয়ের স্বাদ ভুললেন, সেটা আর ফিরিয়ে আনতে পারলেন না। 
সাতে নামা এক ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে বাংলাদেশ নিশ্চয় এর চেয়ে বেশি কিছু পাওয়ার আশা করে!