এক ম্যাচে দুই হ্যাটট্রিক থেকে বঞ্চিত সাকিব!

# টানা দুই ম্যাচ ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়া সাকিব আজও ব্যাটে-বলে উজ্জ্বল ছিলেন
# টান দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েছেন সাকিব

তামিম ইকবালের দারুণ এক ইনিংসে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার হাতছাড়া হয়েছে সাকিবের। ছবি: প্রথম আলো
তামিম ইকবালের দারুণ এক ইনিংসে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার হাতছাড়া হয়েছে সাকিবের। ছবি: প্রথম আলো

চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না। দুই স্লিপ আর শর্ট লেগ নিয়ে ঘিরে ধরা হলো ক্রেইগ আরভিনকে। ভালো লেংথে অফ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন বলটা। সোজা ব্যাটে রক্ষণাত্মক খেলা আরভিনের ব্যাট ছুঁলেই হ্যাটট্রিক হয়ে যায় সাকিব আল হাসানের। মুখাবয়বে অবশ্য সুযোগ হাতছাড়ার হতাশা দেখা গেল না সাকিবের!

টানা তিন ম্যাচেই হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেলেন বাংলাদেশের বোলাররা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হ্যাটট্রিকের সামনে ছিলেন রুবেল হোসেন। শ্রীলঙ্কার পর আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও সুযোগটা পেলেন সাকিব। পরে পেলেন সানজামুল ইসলাম। প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা যেন পণ করেছেন আর যা-ই হোক বাংলাদেশের বোলারদের হ্যাটট্রিক করতে দেওয়া যাবে না! আর সাফল্য বলতেও অতটুকুই!

বোলিংয়ে বাংলাদেশের বেশির ভাগ রেকর্ডই তাঁর। তবে রেকর্ডের এই অধ্যায়ে কখনো নাম লেখানো হয়নি সাকিবের। ২০০৬ সালের আগস্টে হারারেতে শাহাদাত হোসেন ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছিলেন। পরে এ তালিকায় নাম তুলেছেন আরও চারজন। গত মার্চে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সর্বশেষ নাম লিখিয়েছেন তাসকিন আহমেদ।

সাকিব সুযোগটা পেলেন টানা দুই ম্যাচে। তবুও হ্যাটট্রিক হলো না। সাকিবের আরেকটি হ্যাটট্রিক ফসকে গেছে আজ। বন্ধু তামিমের সঙ্গে তাঁর লড়াই নিয়ে কথা হচ্ছে খুব। তামিম গত বেশি কিছুদিন ধরে ধারাবাহিক খেলেও সতীর্থদের কাছে আড়াল হয়ে যেতেন। আজ ম্যাচ সেরার পুরস্কারে কিন্তু তামিমই হাসলেন।

এবারও সাকিবের প্রতিক্রিয়া বোঝার উপায় ছিল না। বন্ধু ফেল করলে কষ্ট লাগে, ফার্স্ট হলে তার চেয়ে বেশি কষ্ট লাগার অনুভূতি কি হচ্ছে? টানা তিনবার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়ার বিরল রেকর্ডটা যেন হাতছাড়া হয়ে গেল।

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে ওয়ানডেতে ম্যান অব দ্য ম্যাচের ‘হ্যাটট্রিক’ করার রেকর্ড এত দিন ছিল শুধু মাশরাফি বিন মুর্তজার, করেছিলেন ২০০৬-এর আগস্টে। আগ ব্যাটে ফিফটি, বলে ৩ উইকেট নিয়ে সাকিব এক যুগ পরে মাশরাফির রেকর্ডে ভাগ বসাবেন বলে মনে হচ্ছিল যখন, তখনই ক্লাইম্যাক্স!

টানা চার ওয়ানডেতে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে এই রেকর্ডে সবার ওপরে আছেন সৌরভ গাঙ্গুলী। কেবল সৌরভেরই আছে টানা চার ম্যাচে সেরা হওয়ার রেকর্ড। টানা তিনবার খুব বেশি জন ম্যাচ সেরা হয়েছেন, তাও কিন্তু নয়।

এই হতাশা থাকলেও ওয়ানডেতে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন সাকিবই—১৮৩ ম্যাচে ১৮ বার। ১৭৭ ওয়ানডেতে ১২ বার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে দুইয়ে আছেন তামিম।

তিন ধরনের ক্রিকেটে তামিম সর্বশেষ ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন গত মার্চে, ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে। গত ১০ মাসে রানের ফোয়ারা ছুটিয়েও ম্যান অব ম্যাচের অনুভূতি প্রকাশ করার সুযোগই মিলছিল না!

আজ আর আনসাং হিরো তিনি নন! আজ ম্যাচ সেরার ট্রফি হাতে নিয়েই হাজির হলেন সংবাদ সম্মেলনে। যেন লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও অস্কার মঞ্চে, ‘সেই তুমি এলে, এত পরে!’