চলে গেলেন 'বাংলার বাঘ'

>
  • চলে গেলেন আবদুর রাজ্জাক সোনা মিয়া।
  • দেশের হকির এক কিংবদন্তি ছিলেন তিনি।
  • সোনা মিয়া জাতীয় তারকা রাসেল মাহমুদ জিমির বাবা।
  • কোচ, আম্পায়ার ও সংগঠক হিসেবেও তিনি সেবা করেছেন দেশের হকির।
চলে গেলেন দেশের হকির কিংবদন্তি তারকা আবদুর রাজ্জাক সোনা মিয়া
চলে গেলেন দেশের হকির কিংবদন্তি তারকা আবদুর রাজ্জাক সোনা মিয়া

এই প্রজন্ম তাঁকে চেনে জাতীয় দলের হকি খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমির বাবা হিসেবে। কিন্তু আবদুর রাজ্জাক সোনা মিয়া তো স্বনামেই পরিচিতি, দেশের হকির এক কিংবদন্তি। রোববার সকালে ইন্তেকাল করেছেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
খেলোয়াড়, কোচ, সংগঠক, আম্পায়ার—নানা পরিচয়ে পরিচিত তিনি। পাকিস্তান আমলে যে কয়জন বাঙালি হকি খেলোয়াড় দৃষ্টি কেড়েছিলেন, উন্নাসিক পাকিস্তানিদের সমীহ কেড়েছিলেন, সোনা মিয়া তাঁদের অন্যতম। স্টিকের ভেলকি দেখাতেন অহরহ, মাঠে ছিলেন আগ্রাসী এক খেলোয়াড়। পাকিস্তানি হকি খেলোয়াড়েরা তাঁকে ডাকতেন ‘বাঙাল মুলক কা টাইগার’ নামে।
১৯৪৯ সালের ২ নভেম্বর ঢাকার আরমানিটোলায় জন্ম তাঁর। খেলোয়াড়ি জীবনে খেলেছেন আজাদ স্পোর্টিং, কম্বাইন্ড, ভিক্টোরিয়া, পিডব্লিউডি ও আবাহনীতে। পাকিস্তান জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছিলেন। খেলেছেন জুনিয়র দলে। করাচিতে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলেছেন বেশ কয়েকটি ম্যাচ। ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান জাতীয় দলের হয়ে ইউরোপ সফরে সুযোগ পেলেও চোটের দুর্ভাগ্যে যেতে পারেননি।
১৯৭০ সালে ব্যাংকক এশিয়ান গেমসে খেলতে যাওয়ার আগে দুর্ধর্ষ পাকিস্তান জাতীয় হকি দল ঢাকা সফর করেছিল। পূর্ব পাকিস্তান দলের বিপক্ষে খেলেছিল একটি প্রস্তুতি ম্যাচ। সে ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছিলেন সোনা মিয়া। বাংলাদেশের হকির ইতিহাসে যে ম্যাচটি চিরস্মরণীয় হয়েই আছে। পূর্ব পাকিস্তান দল বিশ্বসেরা পাকিস্তান জাতীয় দলের কাছে হেরেছিল মাত্র এক গোলে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ভারতের দিল্লিতে নেহরু কাপে খেলেছিলেন ‘ঢাকা একাদশ’–এর হয়ে। স্বাধীন দেশে সেটিই ছিল বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় হকি দল। ১৯৭৮ সালে ব্যাংকক এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ দলের জার্সি গায়ে খেলেছেন।
কোচ হিসেবেও খ্যাতি ছিল সোনা মিয়ার। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন। সহকারী কোচ ছিলেন ১৯৮৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ হকিতে। ১৯৮৮ সালে দিল্লির জুনিয়ার ওয়ার্ল্ড কাপে বাংলাদেশের কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। দেশে আবাহনী, অ্যাজাক্স ও মেরিনার্সের মতো ক্লাবকে বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
একজন ‘গ্রেড ওয়ান’ আম্পায়ার হিসেবেও তিনি খ্যাতিমান ছিলেন।