ঢাকায় কেন সব খেলা, অবাক এএফসি!

বাংলাদেশের পেশাদার ফুটবল নিয়ে সন্তুষ্ট নয় এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন। ফাইল ছবি
বাংলাদেশের পেশাদার ফুটবল নিয়ে সন্তুষ্ট নয় এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন। ফাইল ছবি

একটি মাত্র মাঠে খেলা। এর নাম তো পেশাদার ফুটবল লিগ হতে পারে না! তবু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগটাকে পেশাদার লিগ বলেই চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্লাবের অবকাঠামো ভীষণ নড়বড়ে। তবু তারা পেশাদার লিগের অংশ!

কিন্তু এভাবে আর চলবে না। এত দিন ‘সহ্য’ করলেও এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) এবার নড়েচড়ে বসেছে। অন্তত ৬টি ভেন্যুতে লিগের ম্যাচ হতে হবে, বলছে এএফসি। গতকাল ঢাকায় এসে এ কথা বাফুফেকে জানিয়েও দিয়েছেন এএফসি ডেভেলপমেন্ট কমিটির দুই কর্মকর্তা যোগেশ দেশাই ও দোমেকা গ্রামান্দি।

তাঁরা জানতে চেয়েছেন, লিগের জন্য মাঠ বাড়ানো হচ্ছে না কেন? কী সমস্যা? কেন সদ্য সমাপ্ত লিগ শুধু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হয়েছে? বাফুফে আর কী বলবে! ক্লাবগুলোর অনীহার কথাই বলেছে। উত্তরে সবার জানা কথাটাই এএফসির দুই প্রতিনিধি বলেছেন, একটি মাত্র মাঠে খেলা হলে সেটা তো আর পেশাদারি হলো না!

ঢাকার মাঠে দর্শক হয় না। এ নিয়েও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন এএফসি। ঢাকার বাইরে খেলা নিলে দর্শক আসবে বিশ্বাস তাদের। মুশকিল হচ্ছে, ঢাকার বাইরে খেলা নেওয়া হয়েছে আগে। ২০১৬ সালে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহে খেলা হয়েছে। কিন্তু ক্লাবগুলো নানা সমস্যা দেখিয়ে গত বছর গোঁ ধরে, ঢাকার বাইরে যাবে না!

তবে নতুন মৌসুমে যে যেতেই হবে সেটা বলে দিলেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, ‘এএফসি এখন কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ঢাকায় সব খেলা দেওয়ার কোনো যুক্তি তারা খুঁজে পাচ্ছে না। এর কোনো গ্রহণযোগ্যতাও তাদের কাছে নেই। তাই বারবার বলছে, ঢাকার বাইরে খেলা নিয়ে যাও। এও বলেছে, কমলাপুরে যাও, ঢাকার আশপাশে গাজীপুর, টাঙ্গাইল যাও। তবু খেলা এক মাঠে আর করা যাবে না।’

একটি মাঠের ওপর সারা বছর যে অত্যাচার হয়, মাঠের প্রাণ থাকলে হয়তো বলতে পারত সেই অত্যাচারের মাত্রা। টানা খেলার ধকল সামলে উঠতে পারছে না বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। তাই গত ২৩ জানুয়ারি সাইফ স্পোর্টিং আর মালদ্বীপের ক্লাব টিসি স্পোর্টসের মধ্যে এএফসি কাপের প্রাক-প্লেঅফে মাঠের অবস্থা ছিল ‘বাজে’। এ নিয়েও বাফুফেকে চিঠি দিয়ে এএফসি সাফ বলে দিয়েছে, ভবিষ্যতে ভালো মাঠে ম্যাচ আয়োজন করতে হবে। নইলে ভেন্যু বাতিল।

এএফসি ক্ষুব্ধ আরও একটি ব্যাপারে। ক্লাব লাইসেন্সিং! বাংলাদেশের মাত্র তিনটি ক্লাব এএফসি কাপে খেলার পূর্বশর্ত হিসেবে লাইসেন্স করেছে। এএফসির প্রতিনিধিরা প্রশ্ন তুলেছেন, এত কম ক্লাব লাইসেন্স করল কেন? অন্তত চার-পাঁচটি ক্লাব লাইসেন্স করা উচিত ছিল, বলছেন তাঁরা।

মোট কথা, বাংলাদেশের ক্লাবকাঠামো এবং নড়বড়ে পেশাদার লিগ নিয়ে খুবই অসন্তুষ্ট এএফসি। সেকেলে ক্লাব ব্যবস্থাপনাও মানতে পারছে না এশীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তারা বলছে, পেশাদার হওয়ার কোনো চেষ্টাই নেই বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর। চেষ্টা না থাকলে ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা জানালেন আবু নাইম সোহাগ, ‘ক্লাব অবকাঠামো বাড়াতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে এএফসি। এও বলে দিয়েছে, ক্লাবগুলোকে সব নির্দেশনা মানতে হবে। নইলে ওরা আর বাংলাদেশের ক্লাবকে এএফসি কাপে খেলতে দেবে না।’

ক্লাবগুলোর সতর্ক হওয়ার সময় বুঝি এল!