দুর্দান্ত এসেনসিও...

• বেটিসের বিপক্ষে ৫-৩ গোলের শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছে রিয়াল।
• জোড়া গোল মার্কো এসেনসিওর।
• ম্যাচে ২-১ গোলে পিছিয়ে ছিল রিয়াল।
• রিয়ালের বাকি তিন গোল সার্জিও রামোস, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও করিম বেনজেমার

জোড়া গোলে কাল রিয়ালকে বাঁচিয়েছেন মার্কো এসেনসিও। ছবি: রয়টার্স
জোড়া গোলে কাল রিয়ালকে বাঁচিয়েছেন মার্কো এসেনসিও। ছবি: রয়টার্স

জিনেদিন জিদানের কণ্ঠে কৃতজ্ঞতার ছোঁয়া। কৃতজ্ঞতাটা তাঁর মার্কো এসেনসিওকে নিয়ে। রিয়ালের প্রথম একাদশে খুব বেশি খেলার সুযোগ তিনি পান না। কিন্তু পেলেই কাজের কাজটা ঠিক করে দেন। এই যেমন কাল রিয়াল বেটিসের বিপক্ষে এসেনসিওর দুটি গোল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল। ২ গোলে পিছিয়ে পড়ে জিদানের দল পেল ৫-৩ গোলের এক রোমাঞ্চকর জয়।
কাল এসেনিওর গোলেই ম্যাচের ১১ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল রিয়াল। পরে ৩৩ মিনিটে মানডি ও ৩৭ মিনিটে নাচোর গোলে ২-১ গোলে পিছিয়ে পড়ে তারা। বিপর্যয়ের মধ্যে সার্জিও রামোসের গোলেই স্বরূপে ফেরার পর আর ভাবতে হয়নি রিয়ালকে। ৫৯ মিনিটে এসেনসিওর গোলে স্কোরলাইন ৩-২ করার পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গোল জয়টাকে যখন প্রায় হাতছোঁয়া দূরত্বে নিয়ে এসেছে, তখনই বেটিসের সার্জিও লিওনের গোল চিন্তার কারণ হয়েছিল। ৮৫ মিনিটে স্কোরলাইন ৪-৩ হয়ে গেলে ম্যাচটায় যে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা তৈরি হয়েছিল, সেটা থেকে রিয়ালকে রক্ষা করেন ‘ফর্মহীন’ করিম বেনজেমা। তাঁর যোগ করা সময়ের গোলেই দারুণ একটা জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল।
পিএসজির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে রিয়ালের প্রথম একাদশে ছিলেন না এসেনসিও। কিন্তু পরে মাঠে নেমে দলের ৩-১ গোলের জয়ে রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। রোনালদো আর মার্সেলোর গোল দুটির উৎসে ছিলেন তিনিই। কাল বেটিসের বিপক্ষে শুরু থেকেই প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়েছেন তিনি। দুটি গোলেই নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। প্রথমে রোনালদোর শট বেটিস গোলরক্ষক ফেরালে ফিরতি বলে হেড করে গোল করেন এসেনসিও। দ্বিতীয়ার্ধের ৫৯ মিনিটে দানি কারভাহাল প্রায় একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে বেটিসের গোল মুখে ক্রস ফেললে এসেনসিও তাঁর বাঁ পায়ের জাদু দেখান।
জিদান তো রীতিমতো আবেগপ্রবণই হয়ে উঠলেন ম্যাচ শেষে। বললেন এসেনসিও যখন প্রয়োজন দলের জন্য সব ‘নোংরা’ কাজই করে। এই ‘নোংরা’কে তিনি প্রচণ্ড পরিশ্রমের ‘রূপক’ হিসেবে ব্যবহার করলেও এসেনসিওর ক্ষেত্রে তা কিন্তু সত্যিই। বেটিসের বিপক্ষে গোটা ম্যাচেই দৌড়ে গেছেন এই তরুণ। ওপর থেকে নিচে, আবারও ওপরে। ওপরে উঠে দলের আক্রমণে সহায়তা করেছেন, দুটি গোল তো করেছেনই। রক্ষণেও ভূমিকা রেখেছেন। জিদানের মুখে তাই এসেনসিওর স্তুতি, ‘সে হয়তো সব সময় দলের প্রথম একাদশে সুযোগ পায় না। কিন্তু যখন একটু সুযোগও পায় নিজেকে উজাড় করে দেয়।’ এসেনসিওর কথা বলতে গিয়ে লুকাস ভাসকেজের কথাও বললেন রিয়ালের ফরাসি কোচ। কাল বেটিসের বিপক্ষে ভাসকেজের নাম না নিলেই যে নয়।
এসেনসিওর নিজের কণ্ঠেও নিয়মিত না খেলতে পারার হতাশা, ‘আমার মনে হয় এই মৌসুমটা আমার ভালোই কাটছে। কিন্তু খুব বেশি খেলার সুযোগ না পেলে আপনি কীভাবে নিজেকে প্রমাণ করবেন। সে কারণেই সুযোগ যেটিই আসুক, সেটির পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে হবে। আমার মনে হয় সেটা আমি পেরেছি। আমি এভাবেই খেলে যেতে চাই।’
জিদানের ওপর তাঁর কোনো অভিমান নেই বলেই জানিয়েছেন এসেনসিও, ‘আমি মনে করি আমাকে নিয়মিত না খেলানোর পেছনে নিশ্চয়ই কোচের কোনো যুক্তি আছে। আমার কাজটা হচ্ছে পরিশ্রম করে যাওয়া আর ধারাবাহিক থাকা।’