সেই গোলটিই তো মতিনকে টেনেছে জাতীয় দলে

>

• খেপের নেশা ছিল বলে সাইফ স্পোর্টিংয়ের এই ফুটবলারকে ‘খেপ মতিন’ বলা হয়।
• প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগে খেলেই জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন মতিন।
• জন্ডিসের জন্য ক্যাম্পে যোগ দিতে পারেননি তিনি।

সাইফ স্পোর্টিংয়ের জার্সিতে মতিন মিয়া। ছবি: প্রথম আলো ফাইল ছবি।
সাইফ স্পোর্টিংয়ের জার্সিতে মতিন মিয়া। ছবি: প্রথম আলো ফাইল ছবি।

সিলেটে খেপ খেলাটাই ছিল মতিন মিয়ার রুটিরুজি। যেখানেই খেপ, সেখানেই তিনি। তাই তাঁর নামের পাশে ট্যাগ লেগে যায় ‘খেপ মতিন’। খেপের নেশায় ঢাকার ফুটবলের প্রতি ছিল তাঁর দুনিয়ার অনীহা। সেই মতিনই প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগে খেলে ডাক পেয়েছেন জাতীয় ফুটবল দলে।
সাইফ স্পোর্টিংয়ের জার্সিতে প্রথমবার প্রিমিয়ার লিগে খেললেও মতিনের জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা অনুমিতই ছিল। লিগে নিজে গোল করেছেন তিনটি, গোল করিয়েছেন আরও অনেক বেশি। একটি গোল তো ফিফা বর্ষসেরা গোল পুসকাস অ্যাওয়ার্ডে যাওয়ার মতো। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বিপক্ষে নিজেদের রক্ষণভাগের একটু ওপর থেকে বল ধরে সাপের মতো একে একে চার ডিফেন্ডার কাটিয়ে বের হয়ে যান। এর পরে গোলপোস্ট ছেড়ে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে ইনসাইড ডজে ঘোল খাইয়ে ফাঁকা পোস্টে জালে বল ঠেলে দেন।
স্বাভাবিকভাবে এমন উদীয়মান তরুণকে উপেক্ষা করতে পারেননি জাতীয় দলের কোচ অ্যান্ড্রু ওর্ড। নতুন উদ্যমে জাতীয় ফুটবল দল গঠনের জন্য ৩৫ জনের ক্যাম্পে ডাকা হয়েছে তাঁকে। এ নিয়ে খুব উচ্ছ্বাস মতিনের কণ্ঠে, ‘আসলে সবারই লক্ষ্য থাকে জাতীয় দলে খেলার। আমি প্রথমবার প্রিমিয়ার লিগে খেলেই জাতীয় দল ডাক পেয়ে গেলাম। আমার জন্য বড় আনন্দের একটি বিষয়।’
জাতীয় দলে ডাক পেলেও জন্ডিসের কারণে এখনো ক্যাম্পে যোগ দিতে পারেননি তিনি। এ নিয়ে মন বেশ খারাপ তাঁর, ‘খারাপ লাগছে যে জাতীয় দলে ডাক পেয়েও ক্যাম্পে যোগ দিতে পারলাম না। তবে আশা করি, কয়েক দিনের মধ্যেই যোগ দেব।’ মতিন বাফুফে ভবনে রিপোর্ট করেই ছুটি নিয়ে সিলেটে ফিরে গেছেন। তাঁর ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার কথা ২২ ফেব্রুয়ারি।
২০১৪ সালে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে টিঅ্যান্ডটি ক্লাবের হয়েই ঢাকার ফুটবলে অভিষেক মতিনের। খেপের নেশায় পরের বছর আর ঢাকাতেই আসেননি। ২০১৬ সালে অনেক বুঝিয়ে-শুনিয়ে তাঁকে নিয়ে আসে সাইফ স্পোর্টিং। এর পরেরটা ইতিহাস। একাই সাইফকে তুলে এনেছেন প্রিমিয়ারে। এরপরে দেশের সর্বোচ্চ ফুটবলেও সবাই দেখেছেন মতিনের কারিশমা। বেশির ভাগ সময় উইঙ্গার হিসেবে খেললেও ‘নাম্বার নাইন’ পজিশনেও দেখা গেছে লিগের প্রথম পর্বে। প্রতিপক্ষ রক্ষণভাগকে গতিতে পেছনে ফেলা, আড়ালে থেকে গোলমুখে জায়গা করে নেওয়া, প্রয়োজনে ‘১০ নম্বর’ ও উইঙ্গার পজিশনের সঙ্গে জায়গা বদল করা। একই সঙ্গে গোলের ক্ষুধা তো আছেই। সবকিছু মিলিয়ে মতিন যেন একজন দক্ষ ফরোয়ার্ডের প্যাকেজ।