কোহলিও বাজে খেলেন!

>
কোহলিও মাঝেমধ্যে ব্যর্থ হন। ছবি: এএফপি
কোহলিও মাঝেমধ্যে ব্যর্থ হন। ছবি: এএফপি
• ক্যারিয়ারে কোহলি শূন্য রানে আউট হয়েছেন ১৯ বার
• টি-টোয়েন্টিতে ‘শূন্য’ মাত্র একটি
• টেস্টে দুই অঙ্কের নিচে কোহলি আউট হয়েছেন ২৯ বার, ওয়ানডেতে ৫০ বার, টি-টোয়েন্টিতে ৮ বার
• টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটা তাঁর হয়েছিল বেশ বাজে

সেঞ্চুরিয়নে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাত্র ১ রান করে ফিরলেন বিরাট কোহলি। ভারতীয় অধিনায়ক তো আর রোবট নন। তিনি ব্যর্থ হতেই পারেন। কিন্তু ধারাবাহিকতাকে তিনি এমন মাত্রা দিয়েছেন যে কোহলি রান না পাওয়াও খবর! ব্যাপারটা এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে সেঞ্চুরি বা কোনো ম্যাচজয়ী ইনিংসের মতোই কোহলির ব্যর্থতাও এখন একটা সংবাদ!

এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে চার সেঞ্চুরি করা কোহলি সম্পর্কে সৌরভ গাঙ্গুলীর বিশ্লেষণ, এমন নয় কোহলি জীবনের সেরা সময়ে আছেন বলে রান পাচ্ছেন। বরং কোহলি সত্যিকারের প্রতিভা। তাঁর ক্যারিয়ারটা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, টানা ব্যর্থতার চক্রপাকে কখনোই আটকে থাকেননি। তিন-চারটি ইনিংস খারাপ করলেও খুব শক্তিশালীভাবেই তিনি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।

৬৬টি টেস্ট, ২০৮টি ওয়ানডে আর ৫৭টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা কোহলি তিন সংস্করণ মিলে শূন্য রানে ফিরেছেন ১৯ বার। এর মধ্যে টেস্টে ৬ বার, ওয়ানডেতে ১২ বার ও টি-টোয়েন্টিতে মাত্র একবার। লক্ষণীয় যেটি, সেটি হচ্ছে টেস্টে তিনি নিজের তৃতীয় ইনিংসেই শূন্য রানে আউট হলেও ওয়ানডেতে শূন্য মেরেছেন ২৪তম ইনিংসে এসে। টি-টোয়েন্টিতে তাঁর একমাত্র ‘শূন্য’টি এই তো কিছুদিন আগে—৫২তম ইনিংসে এসে!

টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটা কোহলির মোটেও স্বস্তিদায়ক ছিল না। প্রথম ৪ ইনিংসের দুটিতে শূন্য মেরেছিলেন। সর্বোচ্চ রান ছিল ৩০। ষষ্ঠ ইনিংসে ব্যাটিং করেননি। সপ্তম ইনিংসে এসে দেখা যান প্রথম ফিফটি। অষ্টম ইনিংসেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিলেন। এরপর আসে আরও একটি খরা—১১, ০, ২৩, ৯। এই চারটি ইনিংসের পর করেছিলেন ৪৪।

টেস্ট ক্যারিয়ারে কোহলি সবচেয়ে বাজে সময় পার করেছিলেন ২০১৪ সালে ইংল্যান্ড সফরে। টানা দশ ইনিংসে রান পাননি তিনি—১, ৮, ২৫, ০, ৩৯, ২৮, ০, ৭, ৬ ও ২০। জীবনে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ১৫তম ইনিংসে এসে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, অ্যাডিলেডে ২০১২ সালে। টেস্টে তাঁর প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি ৭৫তম ইনিংসে। টেস্টে এক অঙ্কে ফিরেছেন ২৯ বার।

ওয়ানডেতে তাঁর প্রথম ফিফটি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ইনিংসেই। প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন কলকাতায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, ২০০৯ সালে। ক্যারিয়ারের ১৬তম ইনিংসে এসে প্রথম দুই অঙ্কের নিচে আউট হন তিনি। যদিও ষষ্ঠ ইনিংসে ২ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ওয়ানডেতে প্রথম এক অঙ্কের ঘরে (৯) তিনি আউট হয়েছিলেন ঢাকাতে, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।

৫০ ওভারের ক্রিকেটে কোহলি প্রথম ‘শূন্য’ মারেন ২৪তম ইনিংসে এসে। সেটি ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়েতে। ২০১০ সালের এই ম্যাচে রানআউট—দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছিলেন কোহলি। ওয়ানডেতে সর্বমোট ৫০ বার ১০ রানের নিচে ফিরেছেন বর্তমান দুনিয়ার সেরা এই ব্যাটসম্যান।
সে তুলনায় টি-টোয়েন্টিতে কোহলির ব্যর্থতা অনেক কম। অন্যভাবে বললে ক্রিকেটের ছোট সংস্করণ দারুণ ধারাবাহিক তিনি। আগেই বলা হয়েছে, ২০ ওভারের ক্রিকেটে তাঁর শূন্য রানে ফেরার ঘটনা মাত্র একটি, তা-ও ৫৭ ম্যাচের ক্যারিয়ারের ৫২তম ম্যাচে এসে। একটা খচখচানি তাঁর আছে, সেটি সেঞ্চুরি করতে না-পারা।

সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ তাঁর ৯০। ৫৭ ম্যাচে তো তাঁর ব্যর্থতা খুঁজে পাওয়াই দায়। শূন্য রানে আউট হয়েছেন একবারই—গত অক্টোবরে গুয়াহাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। আর ১০ রানের নিচে ৮ বার।