সাকিবের 'রোলার কোস্টার' ভ্রমণ

ফাইনালে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাকিব। কোচ কোর্টনি ওয়ালশের সঙ্গে ছবিটি তুলেছেন শামসুল হক
ফাইনালে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাকিব। কোচ কোর্টনি ওয়ালশের সঙ্গে ছবিটি তুলেছেন শামসুল হক
• মাত্র এক দিনের অনুশীলন নিয়ে কলম্বো গিয়েছিলেন সাকিব
• বিসিবি সভাপতির ফোন পেয়ে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন
• সাকিব বলেছেন, দিন শেষে জেতা দলের অধিনায়কত্ব করাও গৌরবের


বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান শ্রীলঙ্কা থেকেই ফোন করেছিলেন সাকিব আল হাসানকে। উদ্দেশ্য চোটগ্রস্ত আঙুলের একটু খোঁজখবর নেওয়া। জিজ্ঞেস করলেন, কেমন আছ? আঙুলের কী অবস্থা? বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ‘ভালো’ বলতেই বিসিবি সভাপতির কথা, ‘ভালো তো চলে এসো শ্রীলঙ্কায়।’

কিন্তু সাকিবের পাসপোর্ট তো ভারতীয় ভিসাকেন্দ্রে! সামনেই আইপিএল। সাকিব এবার খেলবেন নতুন দলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদে। সভাপতির আহ্বান শুনে আর বসে থাকতে পারলেন না, সোজা টিকিট কেটে শ্রীলঙ্কা। মাত্র এক দিনের অনুশীলন পুঁজি করে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে লঙ্কানদের বিপক্ষে সাকিব খেললেন, এরপর যা যা হলো, সবই তো ইতিহাস।
সাকিবের কাছে পুরো ব্যাপারটাই ‘রোলার কোস্টার’ রাইড। কাল ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনেই বললেন কথাটা, ‘পুরো ব্যাপারটাকে রোলার কোস্টার বলতে পারেন। থাইল্যান্ডে গেলাম, শ্রীলঙ্কায় এলাম, অস্ট্রেলিয়া গেলাম, দেশে ফিরে আবার শ্রীলঙ্কা। আকাশপথে অনেক ভ্রমণ হয়েছে। পাপন ভাই ফোন করেছিলেন। বললেন, তুমি চলে এসো। শুধু বোলিংটাও যদি করে দিতে পারো, অনেক ভালো হবে।’

সাকিবকে জোর করা হয়নি। ইচ্ছা করলে তিনি বিসিবি সভাপতিকে ‘না’ বলে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। দেশের প্রতিনিধিত্ব করা, দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যাপারটিতে যে আবেগ জড়িয়ে। সাকিব সেই আবেগকে সঙ্গী করেই কলম্বো গিয়েছিলেন। একই সঙ্গে তিনি ব্যাপারটিকে সুযোগ হিসেবেই নিয়েছিলেন, ‘হ্যাঁ, আমি সেফ সাইডে থাকতে পারতাম। বলতে পারতাম, ম্যাচ ফিট না, আরও সময় লাগবে। দিন শেষে জেতা দলের অধিনায়ক হওয়াও তো গৌরবের বিষয়।’

বিসিবি সভাপতিও সাকিবের পাসপোর্ট ভারতীয় ভিসাকেন্দ্রে থাকার কথা বললেন, ‘সাকিবের সঙ্গে কথা হতেই জানলাম ভারতীয় ভিসার জন্য সে পাসপোর্ট জমা দিয়েছে। এটা হতেই পারে। সামনেই আইপিএল। আঙুলের কথা জিজ্ঞেস করতেই বলল, ভালো আছে। কোনো ব্যথা নেই। বললাম, ভালো যখন, তখন ঢাকায় বসে আছ কেন? চলে এসো। সে রাজি হলো। চলে এল। প্রথম কথা হচ্ছে আঙুলে কোনো ব্যথা অনুভব করছে না, সমস্যা নেই সে কারণেই মনে হয়েছে চলা আসা উচিত। একটাই দ্বিধা ছিল, যেহেতু অনুশীলন করতে পারেনি পর্যাপ্ত। এমন একটা টুর্নামেন্টে অনুশীলন ছাড়াই নামবে কি না।’
অনুশীলন ছাড়া না নামায় ব্যাটে কাল হয়তো ঝড় তুলতে পারেননি, কিন্তু দলের জয়ে তাঁর উপস্থিতি যে বড় ভূমিকা রেখেছে, সেটা তো মাহমুদউল্লাহই স্বীকার করেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার বুঝে নেওয়ার সময়।