'এখন কেঁদে লাভ আছে?'

সাকিব আল হাসান। ছবি: শামসুল হক
সাকিব আল হাসান। ছবি: শামসুল হক

সাকিব আল হাসান এমনই। অতি উচ্ছ্বাসে ভেসে যান না, আবার হতাশায় নুয়ে পড়েন না। যেদিন ব্যর্থতার পাল্লাটা ভারী থাকে, সাকিব সেদিনই বরং বেশি হাসি-খুশি থাকার চেষ্টা করেন। কাল যেমন ফাইনাল শেষে পরাজয়ের ব্যাখ্যা করতে বসলেন হাসিমুখে। মানসিকভাবে কতটা শক্ত হলে এটা পারা যায়!

কীভাবে পারেন সাকিব? বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হাসেন, ‘কী করব? এখন কেঁদে লাভ আছে? আবেগ থাকতে পারে। যে পরিস্থিতিটা গেছে, সেটা তো আপনি ফেরাতে পারবেন না। পরে যদি আবার সুযোগ পাই, এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে যদি কিছু করতে পারি। আমরা অনেকগুলো ক্লোজ ম্যাচ হারলাম, এ নিয়ে পাঁচটা ফাইনাল হারলাম। সবগুলোই ক্লোজ ছিল। ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনাল অনেক কাছাকাছি গিয়েছিলাম। এটা আরও বেশি ক্লোজ। ঠিক আছে, এগোচ্ছি তো...আমরা এগোচ্ছি।’

সাকিবের সংবাদ সম্মেলন একটু বিঘ্ন ঘটল বিকট শব্দে। আকাশে আতশবাজির ফোয়ারা। বাজছে উৎসবের সংগীত। সবই চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য। বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমে শুধু বিষাদের সুর। কিন্তু আর কত? আর কত কাছে গিয়ে পরাজয়ের যন্ত্রণা সইবে বাংলাদেশ? আর কত তীরে এসে তরি ডুববে? কম তো হলো না! ২০০৯ সালের ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল, ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনাল, ২০১৮ সালের নিদাহাস ট্রফি...প্রতিটিতেই তো সাকিব ছিলেন। কেন বাংলাদেশ ফাইনাল জিততে পারে না? স্নায়ুচাপ কেন জয় করতে পারে না? সাকিবের পাল্টা প্রশ্ন, স্নায়ুর সঙ্গে পেরে না ওঠা, নাকি ভাগ্য, কোনটার কারণে বাংলাদেশ পেরে ওঠে না? বাংলাদেশ অধিনায়ক নিজেই উত্তরটি খুঁজছেন, ‘জানি না এটা স্নায়ুচাপ, নাকি ভাগ্য! ১ ওভারে ৯ রান দরকার, বেশিও না। আবার শেষ বলে ৫ রান দরকার হলে বোলাররাই বেশির ভাগ জিতে যায়। ১০ বারের ৬-৭ বার ডিফেন্ড করবে বোলাররা। আজ হয়নি। বলব না স্নায়ুচাপ, বোলাররা খারাপ করেনি। ব্যাটসম্যানরা বেশি ভালো খেলে ফেলেছে।’

‘হার্ড লাক ক্যাপ্টেন’—ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে কেউ একজন বললেন সাকিবকে । অধিনায়কের মুখে এবার যেন আঁধার নেমে আসে। তবু বুঝতে দিতে চান না, তাঁর ভেতরের দহন কতটা তীব্র।