মেসি ছাড়াই দুর্দান্ত আর্জেন্টিনা

মেসি ছাড়াই দুর্দান্ত আর্জেন্টিনা। ছবি: এএফপি
মেসি ছাড়াই দুর্দান্ত আর্জেন্টিনা। ছবি: এএফপি
>
  • প্রীতি ম্যাচে ইতালিকে ২-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা।
  • চোটের কারণে দলে ছিলেন না মেসি।
  • বুফন ছিলেন অসাধারণ।

মেসি ছেলেখেলা খেলবেন ইতালির রক্ষণভাগ নিয়ে। গোলবন্যায় ভাসবে ম্যানচেস্টার স্টেডিয়াম। হয়তো এমন স্বপ্নে বুঁদ হয়ে ছিল আর্জেন্টিনা-মেসিভক্তরা। তাদের স্বপ্নে খানিকটা ব্যাঘাত ঘটেছে বৈকি। চোটের কারণে মেসি খেলেননি। বিশ্বকাপের আগে তাঁকে নিয়ে কেন ঝুঁকি নেবে আর্জেন্টিনা! তবে মেসিকে ছাড়াই দুর্দান্ত খেলেছে সাম্পাওলির শিষ্যরা। প্রীতি ম্যাচে ইতালিকে ২-০ গোলে হারিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।

প্রথমার্ধে সামান্য হলেও মেসির অভাব বোধ করেছেন আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়েরা। সে জন্যই বল দখলের লড়াইয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে থেকেও গোল ছাড়াই মাঠ ছাড়তে হয় মারিয়া-হিগুয়েনদের। সেটা অবশ্য ওই বুফনের কারণে। ইতালির ৪০ বছর বয়সী গোলরক্ষক ছিলেন অসাধারণ, অনন্য। অন্যভাবে বললে বুফনই রুখে দাঁড়ান আর্জেন্টিনার সামনে।

বুফন ছিলেন অনন্য। ছবি: এএফপি
বুফন ছিলেন অনন্য। ছবি: এএফপি

ম্যাচের ১৭ মিনিট থেকে শুরু। রক্ষণভাগ থেকে উঠে আসা ওটামেনন্ডির হেড রুখে দেন বুফন। এর এক মিনিট পরই বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি কিক পেয়ে বসে আর্জেন্টিনা। কিন্তু ডি মারিয়ার দুর্বল শটে এবার রক্ষা পায় ইতালি। এরপর ২৩ মিনিটে ইতালির ডি–বক্সে ভয় ধরিয়ে দেন ডি মারিয়া। কিন্তু শেষতক আর গোল পাননি। ২৪ মিনিটে আবারও ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। আরেকবার আটকে দেন বুফন। একের পর এক আক্রমণে চাপে পড়ে যায় ইতালি। একাই দেয়াল হয়ে দাঁড়ান বুফন। ম্যাচের ৪৩ মিনিটে ডি মারিয়ার পাস থেকে নিকোলাসের শট আটকে দেন ওই বুফনই। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে ডি মারিয়ার পাস থেকে হিগুয়েনের শটও রুখে দেন তাঁর ক্লাব সতীর্থ বুফন। আর এভাবে এক বুফনেই আটকে যায় আর্জেন্টিনার প্রথমার্ধের খেলা।

দ্বিতীয়ার্ধে খানিকটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ইতালি। ‘অ্যাটাক ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স’—এই নীতি অনুসরণ করে। ৪৮ মিনিটে একটা সুযোগও পেয়ে যায় তারা। কিন্তু চাপে থাকা ইতালি সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। ইতালির মাঝমাঠের সেনা লরেনজো বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হন। এরপর দু-একটা ভালো আক্রমণ ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি বুফনের ইতালি। বরং তাদের আরও চেপে ধরে আর্জেন্টিনা। ৫০ মিনিটে ডি মারিয়ার ক্রস থেকে পাওয়া বলে মাথা ছোঁয়ান হিগুয়েইন। সেটা গোলপোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়। ৫২ মিনিটে লানজিনির কাছ থেকে সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি হিগুয়েইন।

লানজিনির গোল উৎসব। ছবি: এএফপি
লানজিনির গোল উৎসব। ছবি: এএফপি

অনেক তো হলো। ডি মারিয়া-হিগুয়েইনরা পারছেন না। ৬৪ মিনিটে কোচ সাম্পাওলি তুলে নিলেন ডি মারিয়াকেই। দর্শকদের কপালে তখন চিন্তার ভাঁজ। মারিয়া তো ভালো খেলছেন। তবে তাঁকে তুলে নিয়ে বেনেগাকে কেন নামানো! ৭৫ মিনিটে গোল করেই সেটা বুঝিয়ে দিলেন বেনেগা (১-০)। প্রথম গোলের পর আত্মবিশ্বাসী আর্জেন্টিনা নিজেদের ছন্দ ফিরে পায়। ম্যাচের ৮৫ মিনিটে হিগুয়েইনের দুর্দান্ত পাস পান লানজিনি। ফাঁকি দেন ইতালির রক্ষণকে, ফাঁকি দেন বুফনকে (২-০)।

২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা। খেলা দেখতে আসা মেসির ঠোঁটের কোনায় তখন হাসির ঝিলিক। এমন দল পেলে তাঁর বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নটাও হয়তো পূরণ হবে। কে জানে!