রোনালদোই পেরেছেন

রোনালদো। ছবি: রয়টার্স
রোনালদো। ছবি: রয়টার্স
>
  • প্রীতি ম্যাচে ২-১ গোলে জয় পায় পর্তুগাল।
  • রোনালদোর জোড়া গোল।
  • মিসরের পক্ষে গোল পান লিভারপুল তারকা সালাহ।

নাটকীয়তা আর উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচটা হারতেই বসেছিল পর্তুগাল। কিন্তু তাদের যে একজন রোনালদো আছেন, সে কথা ভুলে গেলে কি চলবে? ডুবতে বসা দলকে টেনে তুললেন এই রিয়াল তারকা। যোগ হওয়া সময়ে (৯২ ও ৯৪ মিনিট) গোল করে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রোনালদোর পর্তুগাল। তাঁর জোড়া গোলে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে শুক্রবার রাতের প্রীতি ম্যাচে মিসরকে ২-১ গোলে হারায় পর্তুগাল।

ম্যাচের শুরুতেই ধাক্কাটা খায় পর্তুগিজরা। ৮ মিনিটের মাথায় মিসরের আল সাইদের নেওয়া শট গোলরক্ষক বেতো আটকে না দিলে ফলাফল অন্য কিছু হতে পারত। এরপর আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে খেলা চলে। ২৬ মিনিটে রোনালদোর জোরালো শট রুখে দেন মিসরের রক্ষণের দায়িত্বে থাকা খেলোয়াড়েরা। ম্যাচের ওই সময় পর্যন্ত ভালো সুযোগ পেয়েছিল পর্তুগাল। বল দখলেও তারা এগিয়ে ছিল। কিন্তু যে গোলের জন্য এত লড়াই, সেটার দেখা না মিললে কী আর খেলা ‘জমে’? ৩৫ মিনিটে সুবিধাজনক জায়গায় ফ্রি কিক পায় পর্তুগাল। এমন জায়গা থেকে অহরহ গোল করেছেন রোনালদো। এই তথ্য মনে পড়াতে খানিকটা আশায় বুক বেঁধেছিল কি না জানা যায়নি। তবে পর্তুগিজ খেলোয়াড়দের হতাশায় ডোবাল রোনালদোর সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়ানো মিসরের রক্ষণভাগ। এরপর কোনো দলই গোলমুখ খুলতে পারছিল না। ৪২ মিনিটে উল্লাসে মেতে ওঠে পর্তুগিজ ভক্তরা। তবে সেই ক্ষণ ধরা দিয়েও দিল না। রোনালদোর গোল অফসাইডের ফাঁদে পড়ে বাতিল হলে দর্শক-সমর্থকদের আনন্দ বাতাস বেরিয়ে যাওয়া বেলুনের মতো চুপসে যায়। এরপর গোল ছাড়াই প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয়।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা মাঠে গড়ানোর খানিক পরেই গোলের দেখা পায় মিসর। আট মিনিটের মাথায় শট নেওয়া আল সাইদের পাস থেকে ৫৬তম মিনিটে গোলের গেরো খোলেন লিভারপুল তারকা সালাহ। সাইদের দুর্দান্ত পাস থেকে বাঁকানো শটে পর্তুগালের জালে বল জড়ান ফর্মে থাকা উইঙ্গার সালাহ (১-০)। গোল খেয়ে তেতে ওঠে পর্তুগিজ সেনারা। একের পর এক আক্রমণে খেলায় আগুন ঝরতে থাকে। এরপরও কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না। তবে কী করে ফিরে আসতে হয়, কী করে গোল করতে হয়, এটা রোনালদোর চেয়ে ভালো কজন জানেন। তাই তো ৯০ মিনিট শেষেও হাল ছাড়েননি। যোগ হওয়া সময়ে (৯২ মিনিট) কোয়ারসেমির ক্রস থেকে জায়গা মতো বল পেয়ে যান রোনালদো। অসাধারণ হেডে প্রথম গোল করে দলকে সমতায় নিয়ে আসেন এই গোলমেশিন (১-১)।

৯৪ মিনিটে ম্যাচের আর বাকি রইল কতক্ষণ! রেফারি যখন সেকেন্ডের কাটা গুনে সেটা দখছেন; দর্শকেরা যখন উঠি উঠি করছেন, তখনই চমক দেখালেন রোনালদো। এবারও কোয়ারসেমির অসাধারণ প্লেসমেন্টে ফ্রি কিক রোনালদোর হেড (২-১)। গোল...বলে যখন পর্তুগিজরা উল্লাসে মাতেন, তখন বাধা দেন রেফারি। রোনালদো অনসাইডে ছিলেন কি না, সেটা পরিষ্কার নয়? সাহায্য নিতে হলো ভিএআর পদ্ধতির। সেই পরীক্ষায় উতরে গেলেন রোনালদো, উতরে গেল পর্তুগাল। বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা এর চেয়ে ‘নাটকীয় ভালো’ আর হয় না।