ফুটবলে সফল মেয়েরা বঞ্চিত ঘরোয়া লিগে

>
এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে নারী ফুটবল। কিন্তু লিগ খেলার সৌভাগ্য হয় না তাদের। ফাইল ছবি প্রথম আলো
এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে নারী ফুটবল। কিন্তু লিগ খেলার সৌভাগ্য হয় না তাদের। ফাইল ছবি প্রথম আলো

মেয়েদের লিগ হয় না বাংলাদেশে। অথচ ফুটবলে একের পর এক সাফল্য নিয়ে আসছেন মেয়েরা। ২০১৩ সালে একবার কোনো রকম একটা লিগ আয়োজিত হলেও পাঁচ বছর ধরে তা বন্ধ। এ নিয়ে হতাশা রয়েছে নারী ফুটবলারদের মধ্যে।

বাংলাদেশের নারী ফুটবলে রীতিমতো জয়যাত্রাই চলছে। সাফ অনূর্ধ্ব–১৫ ফুটবলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেশ থাকতে থাকতেই হংকংয়ের জকি ক্লাব ফুটবলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মেয়েরা। এর আগে তো এএফসি অনূর্ধ্ব–১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্তপর্বে উঠে মেয়েরা জায়গা করে নেন এশিয়ার সেরা আটটি দলের মধ্যে। অথচ দেশকে একের পর এক সাফল্য এনে দেওয়া প্রতিভাবান মেয়েরাই কিনা লিগ খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
২০১৩ সালে মেয়েদের ফুটবল লিগ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর কেটে গেছে পাঁচ বছর। ঘরোয়া লিগ চলে গেছে হিমাগারে। দেশে-বিদেশে মেয়েদের সাফল্যও নতুন করে লিগ আয়োজনে উদ্যোগী করে তুলতে পারেনি কর্তাদের। এ নিয়ে হতাশা কাজ করে নারী ফুটবলারদের মধ্যে।
মেয়েদের জাতীয় দলের ফুটবলারদের মধ্যে সাবিনা খাতুন ও কৃষ্ণা রানি সরকারই আছেন, যাঁদের আছে লিগ খেলার অভিজ্ঞতা। ভাবা যায়! বর্তমান দলে সাবিনাই একমাত্র ফুটবলার, যিনি ২০১৩ সালে শেখ জামালের হয়ে শেষ বাংলাদেশ লিগ খেলেছিলেন। এরপর তাঁর ভান্ডারে জমা হয়েছে মালদ্বীপ ও ভারতীয় লিগে খেলার অভিজ্ঞতা। অন্যদিকে কৃষ্ণা এবারই প্রথম সাবিনার সঙ্গে ভারতীয় ক্লাব সিথু এফসিতে খেলে এসেছেন। লিগ যেহেতু খেলোয়াড়দের আয়ের একটা উৎস, তাই দিনের পর দিন খেলার সুযোগ না পেয়ে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খেলোয়াড়েরা। ব্যাপারটা মেয়েদের ফুটবলের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত করবে কি না, এ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে অনেকের মধ্যেই।
সাবিনা ব্যাপারটা উপলব্ধি করতে পারেন। তাঁর কণ্ঠে লিগ না হওয়ার হতাশাটা পরিণত হয়েছে হাহাকারে, ‘লিগটা খুবই দরকার। লিগ হলেই না অনেক মেয়েদের খেলার সুযোগ হয় একসঙ্গে। লিগ হলে সেখানে মেয়েরা নিয়মিত খেলার সুযোগ পাবেন, আর্থিকভাবেও লাভবান হবেন।’
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নারী ফুটবল প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণও লিগের গুরুত্বটা উপলব্ধি করছেন, ‘আমি এ বছরই মেয়েদের লিগ আয়োজন করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অন্তত করপোরেট ফুটবলটা হলেও করব। আসলে আন্তর্জাতিক ব্যস্ততার জন্য সময় হয়ে উঠছে না।’
এই মুহূর্তে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নারী ফুটবলে দারুণ ধারাবাহিক একমাত্র বাংলাদেশই। শেষ সিনিয়র সাফেও রানার্সআপ বাংলাদেশের মেয়েরা। যেখানে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে লিগ হয়, ভারত, মালদ্বীপ ও নেপালে মেয়েদের লিগ নিয়মিত, সেখানে বাংলাদেশে লিগ না হওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না বলেই মনে করেন ফুটবল-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।